Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

বিজ্ঞানী নিউটনের বাল্য কাল কেমন ছিল

Spread the love

বিজ্ঞানী নিউটনের বাল্য কাল কেমন ছিল

দক্ষিণ ইংল্যান্ডের একটি গ্রামে বিজ্ঞানী নিউটন ১৬৪২ সালে বড় দিনের একটি সুন্দর সকালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম হল হ্যানা। নিউটনের জন্মের আগেই তার পিতা মারা যায়।

যখন নিউটনের বয়স ৩ বছর তখন তার মা আরও একটি বিয়ে করে এবং নিউটন তার দাদির কাছে বড় হতে থাকে। নিউটন এ সময় তার মাকে অনেক মিস করতো মনটা ব্যকুল থাকতো এবং ভাবত তার মা মনে হয় আর নিউটন কে ভালবাসে না। সে খুব রাগান্বিত হত।

নিউটন মাঝে মাঝে তার নতুন বাবাকে খুন করতে চাইত এবং তাদের নতুন ঘর বাড়িকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে চাইত।

কিন্তু কেউই আইজাক নিউটনের এই রাগ বুঝত না।

তার এই মনের কষ্ট কেউই বুঝত না। সে সব সময় একটা কক্ষে একা একা সময় কাটাত। কারো সাথে কথা বলত না। শুধু মাত্র দু একটি শব্দ আসতো তার কক্ষ থেকে আর সেটা হল তার খেলনা হাতুড়ি আর করাত দিয়ে  কাটার শব্দ। হ্যাঁ। নিউটন বাল্যকালে হাতুড়ি করাত এসবই নিয়েই খেলা করতো।

তার  মা ও দাদি এতোটাই ব্যস্ত তাহক্ত যে কেউই সেটা লক্ষ্য করে নি যে নিউটনের একটা ভাল দক্ষ হাত রয়েছে। সে তার হাঁটুর  বাটাল করাত দিয়ে সুন্দর করে যেকোনো ছোট আসবাসবপত্র বানিয়ে দিতে পারত। শুধু চেয়ার টেবিল ই নয় যে কোন খেলনা তৈরিতেও তার হস্ত ছিল দক্ষ। 

কেউই এমনটা ভাবে নি যে এই আসবাব তৈরির উপহারটি একদিন পৃথিবীকে পরিবর্তন করে দিবে।

স্কুলে গিয়েও নিউটনের মনের অশান্তি দুর হল না। সাত বছর বয়সে সে স্কুলের অন্য বন্ধুদের থেকে অনেক ছোট  ছিল। তার বন্ধুরা যা পছন্দ করতো নিউটনের তা পছন্দ হত না। সে স্কুলের রুটিনের ব্যপারে বিরক্ত ছিল। তার বন্ধুরা থাকে নিয়ে হাসা হাসি করতো আর তাকে বোকা নিউটন বলে গালি  দিত।

নিউটন এসব ব্যাপারে গুরুত্ব দিত কম। সে তার চারিদিকের প্রকৃতি দেখে দেখে সময় কাটাত। প্রকৃতি থেকেই সে অধিকতর শিখতে লাগল । প্রকৃতি কেই সে অধিকতর ভাল শিক্ষক মনে করতো। বোকা নিউটন যে শিখে চলেছে তার স্কুল সেটা জানত না। 

বিজ্ঞানী নিউটনের বাল্য

বিজ্ঞানী নিউটনের বাল্য স্মৃতি

যদিও আইজাক নিউটন ছিলেন শান্ত, এবং অন্য কিছু তাকে বিরক্ত করতে পারত না তবু সে মনে মনে জ্বলছিল। একদিন সে এতোই বিরক্ত হল যে অন্য যেকোনো দিনের থেকে অনেক বেশি অসহনীয়। তার একটি বন্ধু তাকে বিরক্ত করছে এবং তাকে গালা গালি ও করছে।

নিউটন  এ সময় তার ভিতরের অন্তর জ্বালা তাকে আর অন্তরে রাখতে পারলেন না। সে তার বন্ধু কে ঘুষি মারতে লাগল যতক্ষণ না তার বন্ধু তার কাছে ক্ষমা চায়।

সেদিন মনে হয় তার বন্ধুকে একটা উচিত শিক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু ঐ দিন ই নিউটন তার প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে।

সে দেখল যে যে অন্য মানুষকে সে বোকা নিউটন বলে খেপানো বন্ধ করতে পারবে। যারা তাকে বোকা নিউটন বলবে সে মারামারি করবে তাদের সাথে।  সে দেখল স্কুলে তাকে আরও কঠিন হতে হবে।

আইজাক নিউটন বলেছিলেন জেয়ামি যদি স্কুলে ঐ মারামারিটা না করতাম আমি হয় সারা জীবন ঐ কাঠ মিস্ত্রি হয়েই থাকতাম।

যখন তার ১২ বছর বয়স।  আইজ্যাক নিউটন স্কুল পরিবর্তন করে  গ্রান্থাম শহরে, কিংস স্কুলে চলে আসে।  গ্রান্থাম ছিল তাদের বাড়ি থাকে একটু দুরে তাই তার বন্ধুর সাথে তাদের বাড়িতে থাকা শুরু করে। সে তার বাড়ি থেকে এই প্রথম বার দুরে কোথাও থাকা শুরু করলো।

হঠা ৎ প্রিথিবিথাকে তার অনেক বড় অন্যে হতে লাগল। সমস্ত রাগ থার অন্তর থেকে ভালবাসায় রূপান্তর হল। কেন ??  সব কিছু কেন ঘটছে ?? এই জিজ্ঞাসা তাকে সারা ক্ষণ ভাবিয়ে তুলটও। কেন পাখীরা উড়তে পারে। কেন বায়ু কল ঘোরানো হয় ইত্যাদি।

তার এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে আইজ্যাক নিউটন অনেক বই পড়ত। নিজে বিভিন্ন ধরনের জটিল জটিল সব  মডেল বানাত।

কিভাবে বায়ু কল কাজ করে তা বোঝার জন্য নিজে অবিকল নকল বায়ু কল তৈরি করতো।  যখন  তার তৈরি  বায়ু কল (Windmill) কাজ করতো আইজ্যাক নিউটন বুঝতে পারে যে বাতাসের কি শক্তি রয়েছে।

 সে অনুভব করতো যে পরিবেশে আরও অনেক কিছু রয়েছে যা চোখে দেখা যায় না, ধরা যায় না বা মাপা যায় না।  সে সব কিছু  থেকে সে আরও কিভাবে শিখতে পারে যা? এই ভাবনা তাকে তাড়িয়ে বেড়াত। 

সে ঘুড়ি উড়াতে ভাল বাসত। পড়ায় প্রতিদিন ই সে ঘুড়ি উড়াত। কিন্তু ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে সে একটা জিনিষ লক্ষ্য করলো যে সে ঘুড়ি উড়িয়ে আকাশের বিভিন্ন উচ্চতায় বাতাসের শক্তি মাপতে পারে। ঘুড়ি গুলোকে সে বিভিন্ন আকারের বা ধরনের করে তৈরি করত যেমন গোলাকার, চতুর্ভুজ, ডায়ামন্ড আকৃতির ইত্যাদি।

সে জানতে চেয়েছিল যে কোন ধরনের ঘুড়ি গুলো বেশি ভাল উড়ে। রাতে সে গুড়িগুলোর  লেজে একটা লন্ঠন  বাতি  ঝুলিয়ে দিত যাতে সে রাতেও ঘুড়ি গুলোর উড়া উড়ি দেখতে পায়। তার প্রতিবেশীরাও সেটা দেখত আর আকাশ  থেকে উক্লা পড়ছে ভেবে ভয় পেত । কারণ  তারা ভাবত এটা ছিল অশুভ। এভাবে সে মজা করতো। 

আইজ্যাক নিউটনের যবন এখন একটু অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে। সে এখন তার স্কুলের তাদের ক্লাসের সেরা ছাত্র। যখন সে ১৫ বছরে পা দিল তখন তার মা তাকে তাদের বাড়ির কৃষি জমি দেখা শোনার জন্য স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে গেল। সে বাড়িতে গিয়েও কৃষি কাজের থেকে বিজ্ঞানের দিকেও বেশি মন দিল।

তার মন সর্বদা নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কার করে বিস্মিত হয়। বেখেয়ালের জন্য তার ভেড়া ও ছাগল পাশের বাড়ির ক্ষেত খামারে ঢুকে যায় ফসল নষ্টও করে। একদিন নিউটন তার ভেড়া দুটিও হারিয়ে ফেলল। তার মা প্রতিবেশীদের ক্ষতিপূরণ দিত এমন কি শাকসবজি ফসল ও ক্ষতি পূরণ বাবদ দিতে হত।  

একদিন প্ররতিবেশিরা বলা বলই করছে যে একটা ভয়ংকর ঝড় আসছে। সব কিছু ধ্বংস করে দিবে। প্রতিবেশীরা ভয়ে তাদের গবাদি  পশু ও ফসল রক্ষার জন্য নিরাপদ স্থানে রাখতে ব্যস্ত। কিন্তু আইজ্যাক নিউটন  ঝড়ো বাতাসের  বাতাসের ভিতর গিয়ে বাতাসের শক্তি অনুভব করার চেষ্টা করছে।

এভাবে সে বাতাসের গতিবেগ ও দিক মাপার জন্য ঝড়ো বাতাসের ভিতরে প্রবেশ করে এমন কাণ্ড করতো। 

তার মা এসব দেখে বুঝতে পারল আইজ্যাক নিউটন কৃষি কাজ অপেক্ষা ভাল ছাত্র তৈরি  হতে পরবে। তাই সে নিউটনকে আবার কিংসস স্কুলে পাঠিয়ে দিল। সেখানে সে আরও মনো যোগ দিয়ে লেখা পড়া করতে লাগল। আইজ্যাক নিউটন যে বাসায়  থাকতো  সেই বাসার মালিকের একটি সৎ মেয়ে আছে যার বয়স আইজ্যাক নিউটনের সমান।

তারা দুজন মিলে মেয়েটির পুতুল ঘরের জন্য অনেক ছোট ছোট আসবাবপত্র বানাত। আইজ্যাক তার প্রতি ভালবাসা অনুভব করলো এবং প্রেমে পড়ে গেল। কিন্তু নিউটন ছিল লাজুক এবং লজ্জা বোধ করতো এটা বলতে। সে আরও ভয়  পেত সেই পুরাতন স্কুলের বন্ধু টার নিষ্ঠুর ও বিদ্রূপ পূর্ণ হাসি মনে করে। 

তাই নিউটন মেয়েটিকে  ভালবাসার কোথা বলার সাহস পেল না। সেই মেয়েই ছিল নিউটনের প্রথম এবং একমাত্র ভালবাসা। সে পরবর্তীতে আর কোন মেয়ের প্রেমে পড়েনি এবং সারা জীবন অবিবাহিত  থেকেছে।  

১৬৬১ সালে, আইজ্যাক নিউটন  জীবনে এক বিরাট সুযোগ আসে । সে পৃথিবী বিখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান যেখানে  বৃহৎ লাইব্রারি রয়েছে এবং পৃথিবীর বিখ্যাত শিক্ষক রয়েছে।  কেম্ব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ে যাওয়া তার  কাছে মনে হল যেন জ্ঞানে বিজ্ঞানে  পরিপূর্ণ কোন সিন্দুকের চাবি হাতে পাওয়া।

এটা যেন কোন কৃষকের ছেলের জন্য এক বিশাল পাওয়া কিন্তু তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। সেই সময়ে খুব কম সংখ্যক ছাত্রই সেখানে পড়া শোনার জন্য গিয়েছিল। বেশির ভাগ ছাত্র ই ছিল খুব উচ্চ বিত্ত পরিবারের। আইজ্যাক নিউটন তার পড়াশোনার ফি ও অন্যান্য খরচ এর জন্য চাকরের কাজ করতো।

সে শিক্ষকদের খাবার  এনে দিত,  শিক্ষক ও সিনিয়র ছাত্রদের রুম পরিষ্কার করে দিত।  একই সাথে পড়া শোনা আবার চাকরের  কাজ করা  আইজ্যাক  এর খুবই ব্যস্ত জীবন ছিল। কিন্তু সে এসব কে পাত্তা দিত না। সে খুব খুশি ছিল কারণ সে যখন ইচ্ছা হাজার যাহার বই পড়তে পারছে।

সে মোটা মুটি সব ই পড়ত সেই সময়ের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডেস্কারটেস ও গালিলিও গালিলি। আইজ্যাক তাদের পদ অনুসরণ করার জন্য স্বপ্ন দেখত।   

যদিও আইজ্যাক অনেক সময় কাটাত চাকরি  ও বই পড়ে তবে সে কখন প্রকৃতি কে অবলোকন করা থেকে বিরত থাকতো না কারণ এটা তাকে অনেক বিস্মিত করে প্রায়শই। সে  পথে যাওয়ার সময় প্রায়ই প্রশ্ন করতো কেন??   

একদিন সে কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ের রাস্তাদিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এমন সময়  একটি  কাঁচ থেকে আলো এসে তার চোখে পড়ল। এয়া ছিল একটি প্রিজম যেটা সূর্যের আলোকে রংধনুর রঙে সাত টি রঙে আলো বিচ্ছুরিত করে। সে ওটা কিনে নিয়ে দ্রুত বাড়ি চলে আসলে।

তারপর অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে আইজ্যাক জানতে পারলেন যে সূর্যের সাধারণ আলো যদিও সাদা কিন্তু এতে রয়েছে সাত টি আলাদা আলাদা রং যা কিনা আমরা রং ধনুতে দেখতে পাই।  এই প্রিজম আলোকে বিচ্ছুরণ করে যথাক্রমে, বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা আর লাল।

এই আবিষ্কারের পূর্বে মানুষ রং ধনুতে যে সাত টি রঙ দেখা যে কেউ বলতে পারত না এটা কোথা থেকে আসছে। সর্বদাই আলো বিরাজমান কিন্তু কেউই এর উত্তর দিতে পারেনি। নিউটন খুব নিখুঁত ভাবে আলোকে পর্যবেক্ষণ করতো। এভাবে আইজ্যাক নিউটন রংধনুর সাত টি রয়ের রহস্য উদ্ঘাটন করলো।

আইজ্যাক নিউটনের আবিষ্কার ছাড়া মানুষ এখন অনেক কিছু পেত না যেমন দুর আকাশে গ্রহ তারা দেখার জন্য টেলিস্কোপ এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তুকে দেখার জন্য মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার যা মানুষকে সাহায্য করেছে। 

নোটঃ প্রিজম হল তিন দিকে তিনটি গ্লাস দিয়ে আবদ্ধ কোন বস্তু। এর ভিতর দিয়ে আলো অতিবাহিত হওয়ার সময় আলো সাত টি আলাদা আলাদা রঙে বিভক্ত হয়ে হায়।

আইজ্যাক ১৬৬৫ সালে কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন। ওই বছরই প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এবং মহামারী আকার ধারণ করে। কয়েক দিনের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ মার আজায় এবং রাস্তার পাশে মৃত দেহ স্তূপ করে রাখা হয়। খুব কম সংখ্যক সুস্থ মানুষ ছিল তাদের কবর দেবার জন্য।

এটা ছিল একটা ভয়ঙ্কর সময়। নিউটন জানতো যে গ্রামে গেলে সে সুস্থ থাকতে পারবে। তাই তাকে গ্রামে যেতে হয়েছিল। 

গ্রামের আকাশ খুব অন্ধকার থাকে আকাশে কোন উজ্জ্বল নক্ষত্রকে দেখার জন্য গ্রাম ই উত্তম। গ্রামের রাতে শহরের মত কোন আলো থাকে না রাতের তারাদের উজ্জ্বলতা ম্লান করে দেয়! রাতের তারা নিউটনকে জানিয়ে দিচ্ছিল যে স্বর্গ নিয়ে ভাবতে। যা অতীতে অনেক বিজ্ঞানীরা ভেবেছেন এখন নিউটনের পালা। 

সে অবাক হল কেন গ্রহ গুলো চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।   ঘূর্ণ্যমান গ্রহ গুলো কি পৃথিবীতে কোন প্রাভাব ফেলে?

যদিও সে গ্রামে থাকতো তবুও সে যত টুকু সম্ভব সব কিছু জানতে চাইত। 

একদিন সে একটি আপেল গাছের নিচে বসে বই পড়ছিল। হঠা ৎ একটি আপেল তার মাথায় পড়ে । সে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মনে প্রশ্নের উদয় হয়।  চন্দ্র পৃথিবীকে চক্রাকারে ঘূর্ণন কালে কোন কিছু র সাথে বাঁধা থাকে না। কিন্তু কেন আপেলটি মাটিতে পড়ল?

চন্দ্র সম্বন্ধে বিস্তর পড়াশোনার জন্য আইজ্যাক যা জানতে পেরেছিল যে, বিজ্ঞানীরা জেনেছে যে চন্দ্র পৃথিবীর চারিদিকে বৃত্তাকার পথে পরিভ্রমণ করে।

এটা এমন যে মনে হয়, চন্দ্র টি পৃথিবীর সাথে একটি সুতা দিয়ে বেঁধে রাখা আছে। কিন্তু কেন কেউ জানে কি কারণে এমনটি হয়? কেন চন্দ্র ছিটকে পড়ে না ? কেন আপেল মাটিতে পড়ে?

আইজ্যাক চিন্তা করতে থাকে বিস্তর। সে এব্যাপারে কিছু গাণিতিক সামাধান  ও করেছে। সে বুঝতে পেরেছিল যে কোন একটি শক্তি র জন্য এমন টি হচ্ছে। সে সেই শক্তির নাম দেন মধ্যাকর্ষণ শক্তি। 

সালটি ছিল ১৬৬৬। সেই সময়ে কেউ জানত না এটা। ধন্যবাদ !! আইজ্যাক নিউটনকে। তার পর তো বিজ্ঞান শাখায়  ইতিহাস সৃষ্টি করলেন আইজ্যাক নিউটন। আইজ্যাক নিউটন পুরোপুরি এক  বছর কাটালেন গ্রামে যতদিন না প্লেগ রোগ পুরোপুরি চলে যায়। তারপর সে কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ে যায় এবং পড়াশোনায় মন দেয়।

আইজ্যাক ছিলেন শান্ত কিন্তু তার আবিষ্কার তাকে পরিচিত করে দেয়। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার ২ বছর পর সে ওই বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসাবে নিয়োগ পান। সে ছিল কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইতিহাসে সব  থেকে কম বয়সি গণিতের প্রফেসর! তার বয়স তখন ২৬।

তার পাঠ দান ছিল একটু দুর্বোধ্য ও কঠিন। খুব কম সংখ্যক ছাত্র ছাত্রীরা তার পাঠ দান বুঝতে পারত। 

যদিও আইজ্যাক  একজন সফল শিক্ষক ছিলেন  না কিন্তু সে ছিল একজন উত্তম চিন্তাবিদ।  আলো সম্বন্ধে তার যে জ্ঞান ছিল তার ভিত্তিতে তিনি একটি টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন।  সেই সময়ে টেলিস্কোপ ছিল বিরাট আকৃতির। তাদের মধ্যে কিছু কিছু ছিল একেকটা ফুটবল খেলার মাঠের অর্ধেক আকারের। 

কিন্তু আইজ্যাক নিউটন এর টেলিস্কোপ এর দৈর্ঘ্যও  ছিল মাত্র এক ফুটের ও কম। যদিও সেই সব বড় বড় টেলিস্কোপ দিয়ে দুরের জিনিষ খুব পরিষ্কার দেখা যেত না । কিন্তু নিউটনের টেলিস্কোপ দিয়ে আরও নিখুঁত ভাবে পরিষ্কার দেখতে পাওয়া যেত।

১৬৭১ সালে, আইজ্যাক নিউটন তার টেলিস্কোপ আবিষ্কার তৎকালীন ব্রিটিশ  রয়্যাল সোসাইটিতে দেখালেন। সেখানে অনেকেই তাদের নিজেদের আবিষ্কার একে ওপরের সাথে   আলোচনায় লিপ্ত থাকে। ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটির  বিজ্ঞানীরা এতোটাই উত্তেজিত ছিল ও অভিভূত হয়েছিল যে তারা নিউটনের আবিষ্কার তাকে রাজা চার্লস-২ কে দেখাতে পরামর্শ দিলেন।

বিজ্ঞানীরা নিউটনকে রয়্যাল সোসাইটিতে যোগ দেবার আমন্ত্রণ জানালেন  এবং তার টেলিস্কোপ নিয়ে বিস্তর ভাবে লিখে একটি গবেষণা সন্দর্ভ লিখতে বললেন। 

রবার্ট হুক ছিলেন রয়্যাল সোসাইটির একজন মেম্বার। তিনি নিউটনকে সন্দর্ভ উপস্থাপন করতে বললেন। 

রবার্ট হুক নিউটনের আবিষ্কার এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন।আইজ্যাক দেখলেন যে তার আবিষ্কার নিয়ে মানুষ সমালোচনা ও নিজের বিল দাবি করছে তাই তিনি সিধান্ত নিলেন যে আবিষ্কার সম্মনন্ধে কিছুই বলবেন না কাউকে।

রবার্ট হুকের সাথে দ্বন্ধে আইজ্যাক নিউটন কে পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিতের অধ্যয়ন থেকে দীর্ঘদিন দুরে রাখল।  নিউটন আলকেমি অধায়ন করা শুরু করলেন। যা ছিল রসায়নের সূচনা।  তার পর ২০ বছর পর হ্যালি নামে একজন তাকে বিঝাতে সক্ষম হলেন এবং তাকে মধ্যাকর্ষণ নিয়ে বই লিখতে বললেন।    

আওজাক নিউটন ২ বছর ধরে বই লিখলেন এবং খুব কম সময়ই তিনি বিশ্রাম ও ঘুমিয়েছেন। যখন তিনি বই লেখা শেষ করলেন তখন এটা তিন খণ্ডে (Principia ) প্রিন্সিপিয়া  নামে বই প্রকাশ করলেন।  প্রিন্সিপিয়া-১, ২, ৩  বই এর মাধ্যমে আইজ্যাক নিউটন পৃথিবীকে তার  গবেষণা লদ্ধ  জ্ঞান  উন্মুক্ত করে দিলেন।

তিনি বর্ণনা করলেন মহা শূন্যে দুইটা বস্তু কোন নীতিতে  কিভাবে চলাফেরা করে এবং মহা শূন্যে দুইটা  চলমান বস্তুর মধ্যে  কি পারস্পারিক সম্পর্ক রয়েছে। আইজ্যাক নিউটনের তত্ত্ব অনুসারে , মহাবিশ্বের যে কোন দুইটা বস্তু একে অপরের সাথে হয়ত আকর্ষণ না হয় বিকর্ষণ করে।

তিনি দেখালেন যে যে কোন বস্তুর উপরে কেবল বল প্রয়োগের জন্যই নির্দিষ্ট কোন দিকে নির্দিষ্ট কোন বেগে চলমান থাকে। 

আইজ্যাক নিউটন তাঁর এই বস্তুর উপর আরোপিত গতির ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া কে  গণিতের একটি নতুন বিষয় দিয়ে ব্যাখ্যা করতেন । গণিতের সেই শাখার নাম ক্যালকুলাস। বর্তমানে বিজ্ঞানী , বাবসায়ি ও ইঙ্গিনিয়ার গন এই ক্যালকুলাস  ব্যবহার করে সামসসা সমাধান করেন ও নতুন নতুন আইডিয়ার  ভবিষ্যৎ বানী দেন।  

প্রিন্সিপিয়া প্রকাশ করার পর , বিজ্ঞানীরা নিউটনের আবিষ্কার কে কাজে লাগিয়ে কোন বস্তুর উপর ভবিষ্যৎ ধারনা করা যায়। তারা যেকোনো চলমান বস্তুর অথবা ঘূর্ণ্যমান গ্রহের অপূর্ব সমাধান ও সমস্যা বর্ণনা করতে পারত। আসলে আজ অবধি মানুষ নিউটনের ধারনার উপর ভিত্তি করে নতুন নতুন কিছু আবিষ্কার করছে।

যেমন ইঙ্গিনিয়ার গন  গাড়ির গতি বিধি বুঝে ইঞ্জিনের ব্রেক এর ডিজাইন করে, বড় বড় ব্রিজ তৈরির জন্য যে শক্তি সম্বন্ধে জানা দরকার তা ওই নিউটনের ধারনা থেকেই আসে।। এই ধারনা  ছাড়া কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারে না যে নদীতে ব্রিজ তৈরির পর এটা টিকে থাকবে নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে।

তা ছাড়া যে কোন গ্রহের গতিবিধি বুঝতে না পারলে সেখানে কোন রকেট উৎক্ষেপণ করা যায় না। এসব ই বিজ্ঞানী নিউটনের অবদান।

নিউটনের আবিষ্কারের পূর্বে মানুষের জীবনধারার ও টেকনোলজির অগ্রগতি ছিল খুব ই ধীর গতির। তার আবিষ্কারের পড়ে মানুষ দেখল বহু কিছু তৈরি করা সম্ভব যা তারা কেবল স্বপ্নে ই কল্পনা করতো।  একটা আবিষ্কার অন্য আর একটা আবিষ্কারকে সাহায্য করে।জীবন  খুব দ্রুত পরিবর্তন হতে লাগল। বার বার জিজ্ঞাসা করে কেন? 

কেন? আইজ্যাক নিউটন এই পৃথিবীকে পরিবর্তন করে দিয়েছে আমাদের জন্য। 

প্রিন্সিপিয়া বই টি খুবই ব্যবসা সফলতা পেয়েছিল। প্রকাশিত হবার সাথে সাথে মানুষ নিউটন কে একজন জিনিয়াস হিসাবে জানতে শুরু করলো। কিন্তু  নিউটনের পুরনো শত্রু রবার্ট হুক আবার আসলো নিউটনের সব সফলতা বিসর্জন দিতে। রবার্ট হুক ঘোষণা করলেন যে নিউটন তার ধারনা চুরি করে প্রিন্সিপিয়াতে লিপিবদ্ধ করেছে। 

নিউটন খুবই রাগান্বিত হয়েছিল রবার্ট হুকের প্রতি। নিউটন  গত ২০ টি বছর  তার ধারনা গুলোকে লুকিয়ে রেখেছে অথচ রবার হুক  মিথ্যা দাবি করছে এ গুলো তার নিজের ।  তাছাড়া রবার্ট হুক কখনই সেই সব তত্ত্ব গুলোকে প্রমাণ করার জন্য কখনই গণিত ব্যবহার করে নি।  সারা জীবন মানুষের থেকে দুরে থেকে নিউটন যারা তাকে তার কাজ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

তাই নিউটন যদি কখন কারো দ্বারা আক্রান্ত হত তখন সে নিজেকে গুটিয়ে নিত।  এখন সে ভাবল সে তার তৃতীয় খণ্ডটা র ব্যপারে উদার হবে। কিন্তু তার মনের অবস্থা তাকে পালিয়ে বা গুটিয়ে যেতে দিল না।  দীর্ঘ দিন থেকেই পৃথিবী দেখেছে যে রবার হুক একজন মিথ্যুক। 

গাণিতিক যুক্তি নিউটন কে সাহায্য করেছিল তার কাজ গুলোকে নিজের বলে আবার প্রমাণ করতে। রবার্ট হুকের কোন যুক্তি ছিল না। নিউটন শেষ পর্যন্ত সত্য দিয়ে জয় লাভ করলো।

১৬৭১ সালে নিউটন রয়্যাল সোসাইটি থেকে দুরে ছিল । এরপর ১৭০৩ সালে রয়্যাল সোসাইটি তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। তারপর ১৭০৫ সালে রানি অ্যানে নিউটনকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। 

তাই এখন নিউটনকে আমরা স্যার বলে সম্বোধন করি যা কিনা বিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রথম কোন সম্মননা অর্জন। অনেক দিনের দীর্ঘ যাত্রায় নিউটনের আবিষ্কার শেষ পর্যন্ত স্বীকৃত পেল।

কিন্তু এ যুদ্ধ শেষ হয়নি তখনও। পরবর্তীতে লিবনিজের সাথে তর্ক যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন ক্যালকুলাসের প্রকৃত আবিষ্কারক কে হবে এটা নিয়ে। এ পর্যায়ে নিউটন পিছু হটলেন না। তিনি তার সমস্ত যুক্তি প্রামাণ্য দিয়ে উপস্থাপন করলেন। 

নিউটনের অনুসুন্ধিতসু মন থাকে নি। তার জ্ঞান পিপাসা তাকে তৃপ্ত করতে পারে নি। তিনি সেই একই জিনিষ দেখে যা আমরা সাধারণ মানুষ দেখি। কিন্তু সবার থেকে ভিন্ন ভাবে সে জানতে চায় কেন??

দুর্ভাগ্য বসত আইজ্যাক নিউটনের রাগ ছিল অত্যন্ত বেশি কখন কখন তার রাগ তাকে তো জ্বালায় সাথে আসে পাশের সবাইকে জ্বালিয়ে দেয়।

অন্য সাধারণ মানুষের মত নিউটনের ও দোষ ত্রুটি ছিল। কিন্তু তার বিখ্যাত কাজ গুলো তার ছোট ছোট ভুল গুলোকে আড়াল করে রেখেছিল। সে আনুমানিক ৩০০ বছর আগে মৃত্যু বরন করছিল। তিনি মারা জান ৩১ মার্চ ১৭২৭ সালে।  আঁকন আমরা তার আবিষ্কৃত জ্ঞানের উপর ভোর করে টেকনোলজি তৈরি করি। 

টেলিভিশন থেকে মহাশূন্যে ভ্রমণ সবই তাই জন্য সম্ভব হয়েছে। 

বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন বলেছিলেন যে, আমি যদি নতুন  কিছু সৃষ্টি করি সেটা সম্ভব বিখ্যাত ব্যক্তিদের আবিষ্কারের উপর ভর করে। তিনি আরও বলতে চেয়েছেন যে, সে যা আবিষ্কার করেছে তা সবই তার পূর্বের বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের আবিকারের জন্য সম্ভব হয়েছে। তাকে এটা জানতে হবে যে তার পূর্বসূরিদের আবিষ্কারের সাথে আর কি নতুন যোগ করতে  পারে সেটা জানা।

তারপর থেকে বিজ্ঞানীদের কাঁধে ভোর করে বিজ্ঞানের আরও অনেক অগ্রগতি হয়েছে । এভাবে আমরা একটার পড় একটা আবিষ্কার করে যাচ্ছি পৃথিবীকে আরও ভাল ভাবে জানার জন্য এবং মানুষের জীবন কে সুন্দর করার জন্য।


আপনি জানেন কি?

সূর্য ঘড়ি

বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন দেখলেন যে গাছের ছায়া সারা দিন ধরে একটু একটু করে পরিবর্তন হতে থাকে।  তিনি দেখলেন যে সূর্যের অবস্থানের পরিবর্তনের সাথে সাথে ছায়া ও পরিবর্তন হয়। আকাশে যেমন সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে যায়। 

তিনি একটি গোলাকার পাথরের চারিদিকে একটি পিন আটকালেন । চাকু দিয়ে পাথরের উপরে বাঁকা করে  একটা দাগ কাটলেন এবং আড়াআড়ি ভাবে সেটাকে অনেক গুলো ভাগে ভাগ করলেন। পিৎজার ফালি  কাটার মত করে। পিনটির ছায়া সারাদিন ধরে বৃত্তের চারিদিকে ঘুরতে থাকে  দিনের বিভিন্ন সময়ে।

পিনের ছায়ার অবস্থান দেখে আইজ্যাক নিউটন দিনের কোন সময় সেটা বলতে পারতেন। 


প্রিজম নিয়ে খেলা

আইজ্যাক নিউটন রুমের জানালা ও দরজা বন্ধ করে দিলেন।  ছোট্ট একটু ছিদ্র রেখে দিলেন। ছোট্ট একটি ছিদ্র  দিয়ে ছাড়া সমস্ত ঘরে আলো আসতে পারে না। এখন সে তার নিজের তৈরি প্রিজম টিকে ওই আলোর সামনে ধরলেন। ওই প্রিজমের ভিতর দিয়ে আলো অতিবাহিত হবার সময় আলো সাত টি রঙে বিভক্ত হয়ে যায় যেন মনে হয় রংধনুর রঙে রাঙ্গিয়ে গেছে।

আইজ্যাক নিউটন বিস্মিত হলেন এই ভেবে যে, সাত টি আলাদা আলাদা রং কী প্রিজমের কাঁচ থেকে আসছে নাকি আলোর থেকে আসছে। এটা বোঝার জন্য সে একটি লাল রং বাদে   বাকি সমস্ত রং গুলোকে  ডেকে দিলেন।

তিনি এই লাল রঙের আলোক কে অন্য আর একটি প্রিজমের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করালেন। এখন প্রিজমের ভিতর দিয়ে লাল আলো প্রবেশ করানোর ফলে  প্রিজম থেকে শুধু ওই লাল রঙের  আলোক ছাড়া  রংধনুর মত সাত টি রং বিচ্ছুরিত হয় নি।  তিনি এই পরীক্ষা আরও ৬ টি রঙের জন্য করলেন এবং ফলাফল একই পেলেন যে শুধু যে কোন একটি রয়ের আলোকই দেয়ালে প্রতিফলিত হয়।

কোন নতুন রংধনুর সাত টি রং দেখা যায় না।  এরপর সে সাত টি রঙের আলোক একসাথে দ্বিতীয় প্রিসমের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করালেন এবং দেখলেন যে দেয়ালে সাদা আলো দৃশ্য মান হয়।

তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে রং আসে আলোক থেকে প্রিজম থেকে নয়। সাদা আলো সাত টি ভিন্ন ভিন্ন রং দিয়ে তৈরি। সূর্যের আলো যে সাত টি রং দিয়ে তৈরি এটা বোঝার জন্য সে নিজে আরও একটি পরীক্ষা করলেন। 

তিনি একটি বড় গোলাকার কার্ড বোর্ড এর উপর সাত টি আলাদা আলদা রং করলেন এরপর সেটাকে অনেক জোরে ঘুরাতে লাগলেন এবং লক্ষ্য করলেন যে সাত টি আলাদা আলাদা রং অদৃশ্য হয়ে সাদা রং দেখা দৃশ্যমান হল। এতে প্রমাণিত হল যে সাদা আলোতে সাত টি আলাদা আলাদা রং থাকে।


পৃথিবীর মধ্যা কর্ষণ শক্তি

আইজ্যাক নিউটন সম্মত হয়েছিল যে , পৃথিবী আপেল টিকে মাটিতে টানছে। তিনি এটাও বিশ্বাস করত যে, আপেল টিও বিপরীত মুখি বল আপেলটিকে ধাক্কা  দিচ্ছে। কিন্তু চন্দ্র কেন এতো দুরে থাকার পর ও অদৃশ্য বলের প্রভাবে ঘূর্ণ্যমান থাকে যেখানে আপেল মাটিতে পড়ে যায়। 

 শিশু থাকা অবস্থায় নিউটন একটা খেলা খেলত, সেটা হল দড়ি দিয়ে একটি পাথরকে বাঁধে নিজের চারিদিকে ঘোরানো। পাথর টি বাতাসে বৃত্তাকার পথে পরিভ্রমণ করে। যদি সে তার হাত কে পৃথিবী মনে করে আর পাথরকে চন্দ্র মনে করে তখন দড়ি তা হল এক অদৃশ্য বন্ধন যা দুইটা বস্তুকে এক সাথে আবদ্ধ রেখেছে।

তিনি বিশ্বাস করতেন যে এই একই ধরনের কোন অদৃশ্য বল বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত বস্তু কে আটকে রেখেছে। এ জন্যই গ্রহ গুলো সূর্যের চারিদিকে ঘুরে আর উপগ্রহ গুলো গ্রহের চারিদিকে ঘুরতে থাকে।  প্রকৃত পক্ষে বিশ্বের সবকিছুই একে ওপরের সাথে সংযুক্ত আছে।  তাই যে কোন একটি বস্তুর ঘূর্ণন অন্য যে কোন বস্তুর ঘূর্ণন কে প্রভাবিত করে।


টেলিস্কোপ

আইজ্যাক নিউটনের সময়ে প্রতিসরণ কৃত টেলিস্কোপ এর দৈর্ঘ্যও ২০০ ফুট পর্যন্ত বড় ছিল।  লেন্স ব্যবহৃত এই ধরনের টেলিস্কোপের দিয়ে বস্তু দেখতে ঝাপসা ও অনেক রংধনু দৃশ্যমান হয়।  তাই   আইজ্যাক নিউটন  টেলিস্কোপে লেন্সের পরিবর্তে একটি আয়না ব্যবহার করেন।  আয়নাতে আলো প্রতিফলিত হয়ে রংধনু র সাত টি রং এ বিভাজিত না করেই পূর্ণ আলো প্রতিফলিত করে।

এতে আলো প্রতিফলিত হয়ে অখণ্ড ভাবে ফিরে যায়। এটা যেমন একটি রাবার বল কে দেয়ালে আঘাত করলে যা হয় তেমনি। এটা যেমন লাফিয়ে উঠে এর দিক পরিবর্তন করে কিন্তু সামগ্রিক বস্তু র কোন পরিবর্তন হয় না।

আয়নার সাহায্যে তৈরি কৃত টেলিস্কোপ এ প্রতিফলিত আলো মানুষের চোখে  বৃহৎ আকারে তৈরি হয় এবং কোন রংধনু বা ঝাপসা দেখা যায় না।

 এই ধরনের টেলিস্কোপকে বলে প্রতিফলিত টেলিস্কোপ।  প্রতিফলিত টেলিস্কোপে বস্তুর চিত্র তৈরিতে বেশি লম্বা হবার প্রয়োজন পড়ে না। তাই প্রতিফলিত টেলিস্কোপ তৈরি খুব সহজ। 


নিউটনের সূত্র

প্রথম সূত্রঃ

যতক্ষণ না কোন বস্তুর উপর কোন বল প্রয়োগ করা হয় ততক্ষণ সে ই বস্তু স্থির অবস্থানে থাকে চিরকাল স্থির থাকবে আর চলমান বস্তু চিরকাল  সরল পথে চলতে থাকবে। এটাকে বলে জড়তা।

দ্বিতীয় সূত্রঃ

কোন গতিশীল বস্তুর গতি পরিবর্তনের হার নির্ভর করছে বস্তুটির উপর আরোপিত শক্তির উপর। যে দিক থেকে বল প্রয়োগ করা হয় সেই দিকেই বস্তুর দিকেই সরল রৈখিক ভাবে দিক পরিবর্তন হয়। 

তৃতীয় সূত্রঃ

প্রত্যেক ক্রিয়ার ই একটা সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।

ড. রমন কুমার বিশ্বাস এর 1st বই নিউটনের যত আবিষ্কার