Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

Spread the love

কয়লা ও কালো শেলের মধ্যে পার্থক্য কি?

২০১৮ সালের প্রথম দিকে বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের মাইনিং এন্ড মাইন সার্ভের শিক্ষার্থী হিসাবে বড়পুকুরিয়া কয়লার খনিতে ট্রেনিং এর চলছিলো তখন। সেইসময় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এক্সটেনশনের জন্য উত্তর এবং দক্ষিণ দিকে সম্ভব্যতা যাচাই জরিপ যাকে মাইনিং এর ভাষায় ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি বলে সেটা চলমান ছিলো। ট্রেনিং চলাকালীন সময়ে আমরা প্রায়ই সাপ্তাহিক ছুটির দিন বিকালের দিকে সেইসব ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির জন্য ড্রিলিং সাইট এবং কয়লা উত্তোলনের পর যেখানে ভূমি অবনমন বা ভূমি হ্রাস যা মাইনিং এর ভাষায় সাবসিডেন্স এরিয়া বলে সেইসকল স্থানে ঘুরতে যেতাম। তখন আমাদের দেখা আশ্চর্য বিষয় ছিলো দুইটিঃ

১. কিভাবে কয়লা খনির পানি অপসারণের ড্রেন হতে তলানিকৃত কয়লা বা Sediment coal উত্তোলন করছে।
২. কিভাবে কয়লাখনির আশেপাশের এলাকা থেকে কয়লার খন্ড কুড়ানো হচ্ছে।

শুনে এইগুলো খুব একটা আশ্চর্যজনক মনে না হলেও আমার কাছে আশ্চর্যজনক লেগেছিলো যে মাত্র ৮/৯ বছর বয়সী ছেলে মেয়েরাই বেশী এই কয়লা কুড়ানোর কাজ করছে। এবং ব্যাগের পর ব্যাগ সংগ্রহ করছে তারা। তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে কয়লাখনির (coal mine) আশেপাশে এই খন্ড খন্ড কয়লার টুকরো আসলো? ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করার জন্য ড্রিলিং সাইটে যাতায়াতের প্রয়োজন পড়ে। আর সেই যাতায়াতের জন্য রাস্তা তৈরীতে পাথর ব্যবহার করে রাস্তা তৈরী করা হয়। আর সেই পাথর অন্য কোথাও থেকে নিয়ে আসা হয় না।

বরং কয়লাখনির ভূ-গর্ভস্থ পাথরের রাস্তা (Underground Rock Roadway) তৈরীর জন্য যেসকল পাথর পাওয়া যায় তা সাধারণত Waste disposal নামে পরিচিত অর্থ্যাৎ অপ্রয়োজনীয় পাথর। আর এই পাথরই ব্যবহৃত হয় রাস্তা তৈরীতে। সেইসকল পাথরের সাথেই কয়লা মিশ্রিত থাকে থাকে। কিন্তু যেসকল পাথর পাওয়া যায় সেগুলো মধ্যে সবচেয়ে বেশী কালো শেল পাথর (Black Shale) পাওয়া যায়। মজার ব্যাপার হলো বড়পুকুরিয়াতে প্রাপ্ত বিটুমিনিয়াস কয়লা (Bituminous Coal)এবং কালো শেল পাথর দুইটাই দেখতে কালো এবং খুবই কাছাকাছি গঠন প্রণালী। যা জিওরিসার্চ ইঞ্জিনিয়ার কিংবা জিওলজিস্ট ব্যতিত অন্যকারও পক্ষে এর পার্থক্য বোঝা খুবই কঠিন।

কয়লা

কয়লা (coal) এবং শেল (shale) দুইটাই পাললিক শিলা (Sedimentary Rock)। এই দুইটার মধ্যে বিভক্ত বোঝার জন্য জিওইঞ্জিনিয়ার্স ও জিওলজিস্টদের আলাদা পদ্ধতি আছে।

কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো বড়পুকুরিয়ার খনি coal এলাকায় আশেপাশে সেই ৮/৯ বছরের ছেলেমেয়েরা এর বিভক্তি করতে এক নতুন ধারার পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলো। আর সেটি হলো একটি লোহার দন্ড দিয়ে হালকা করে আঘাত করলে যেটা ভেঙ্গে যাবে সেইটাই কয়লা। কারণ কয়লা শেল পাথর থেকে ভঙ্গুরতা অধিক বেশী।

আর এভাবেই তারা তাদের কয়লা কুড়ানোর সফলতা বয়ে আনে। যা আমাকে খুবই অবাক করেছিলো যখন তাদের মুখ থেকে এমন ব্যাখ্যা শুনেছিলাম। তাই আমি তাদের ক্ষুদে জিওলজিস্ট বলে আখ্যায়িত করলাম এবং তাদের কয়লা নামক কালো সোনা সংগ্রহের বিষয়টা আমাকে নতুন এক শিক্ষা দিয়েছিলো। যদিও তারা ক্যামেরার আসতে খুব একটা পছন্দ করেছিলো না। তারপরই তখন আমরা তাদের ছবি নিয়েছিলাম।
কয়লা ও কালো শেলের মধ্যে খুব সাধারণ দুইটি পার্থক্য হলোঃ

১. কয়লা শেলের চেয়ে তুলনা মূলক হালকা।
২. কয়লা শেলের চেয়ে তুলনা ভঙ্গুর।

লেখকঃ মোঃহাবিবুল্লাহ,
বিএসসি ইন মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং,
চায়না ইউনিভার্সিটি অব মাইনিং এন্ড টেকনোলজি

Read More:

Photo Gallery: Minerals and Rocks Museum

>>Rocks and Minerals Gallery1

>>Rocks and Minerals Gallery2

minerals