Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

প্রতি দশক পরপর ভাইরাস আক্রমণ করছে কেন?

Spread the love

প্রতি এক দশক পর পর ভাইরাস আক্রমণ করছে কেন?

এ নিয়ে তৃতীয় বারের মত করোনা ভাইরাস পৃথিবীতে মানুষকে আক্রমণ করলো। এই ভাইরাসকে বলা হচ্ছে নভেল করোনা ভাইরাস-১৯। এটা প্রথম চীনের উহান শহরে একটি সামুদ্রিক মাছের বাজার যেখানে কাঁচা মাছের আড়ত ছিল সেখান থেকে উৎপত্তি।

চীনারা খুব দ্রুততার সাথে এই ভাইরাসটির গতই বিধি বুঝতে সক্ষম হয় এবং এখন চীনের সমস্ত প্রদেশে একটা যুগান্তকারী সফলতার সাথে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। প্রথমত এই ভাইরাস টি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় নাকি তা নিয়ে বিতর্ক ছিল কিন্তু সময়ের সাথে দেখা যায় এটা মানুষ- মানুষ এ ছড়ায়।

কিন্তু এর বিস্তৃতি এখন অজানা যে এটা মহামারী হলে এর বিস্তৃতি কতো ভয়াবাহ হবে।

 ভাইরাস প্রতি দশকেই হচ্ছে

২০০৩ সালে চীনের গুয়াংডং প্রদেশ থেকে প্রথম সারস (SARS) ভাইরাসটি (severe acute respiratory syndrome coronavirus [SARS-CoV]) সনাক্ত করা হয়।

২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরব থেকে মার্স (Middle East respiratory syndrome coronavirus [MERS-CoV]), ভাইরাস টি সনাক্ত করা হয় এবং পরে সেটা আমেরিকা ছড়ায়।

মার্স, সারস ও নভেল করোনা ভাইরাস-১৯ তিনটাই মানুষের ফুসফুসকে আক্রমণ করে এবং নভেল করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে একটু বেশি ভয়াবাহ বটে। এখন পর্যন্ত নভেল করোনা ভাইরাস-১৯ বা কভিড-১৯ রোগে পৃথিবীতে ৩৩৬০০৪ জন এবং মারা গিয়েছেন ১৪৬৪১ জন। সে তুলনায় বাংলাদেশে ৩৩ ও মৃত্যু ৩ জন। বাংলাদেশে মৃত্যু হার ১০%

 

চীনের বিজ্ঞানী *জু* এক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, সারস ও নভেল করোনা ভাইরাস-১৯ তুলনামূলক ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স ৭৫ -৮০ শতাংশ একই। এবং বংশ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ল্যাব এ বেড়ে ওঠার থেকে মানুষের গলার টিস্যুতেই বেশি পছন্দের এই নভেল করোনা ভাইরাস-১৯ যা কিনা মার্স, ও সারস ভাইরাসের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

করোনা ভাইরাসের একটা ভাল দিক হচ্ছে এটা শুধুমাত্র তাদের মাধ্যমেই ছড়ায় যাদের ইতিমধ্যে উপসর্গ দেখা দিয়েছে, যেমন, হাসি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা। বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন যে করোনা ভাইরাস-১৯ , সারস ভাইরাসের মতই আচরণ করবে এবং মানুষের শরীর ই হবে তার প্রধান বসবাসের স্থল।

যদিও এটা এক ধরনের সামুদ্রিক মাছ থেকে এসেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে তবে এটা বাদুর থেকে আসার একটা প্রবল সম্ভাবনা আছে।

২০০৩ সালে সারস ভাইরাস ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এর বাইরের কোন প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এসেছিল। ২০১২ সালে মার্স ভাইরাস মরুভূমির উঠ থেকে মানুষের শরীরে এসেছিল। উভয় ক্ষেত্রেই বাদুর থেকে উৎপত্তি। নভেল করোনা ভাইরাস-১৯ ক্ষেত্রেও বাঁদুরের থেকে যে এসেছে এটা অনেকটা সঠিক যদিও আরও বিস্তর গবেষণা দরকার।

আর হয়ত বাদুর এর প্রধান বাহক হওয়ার কারণে আমরা কোন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না তাই প্রতি দশকেই আক্রমণ করছে । আর হয়ত এক একটি দশক লেগে যাচ্ছে এক একটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে। যখন আমরা পুরোপুরি ভাইরাস টা সম্বন্ধে জানতে পারব তখন হয়ত আর প্রতি দশকে হওয়ার সম্ভাবনা থেকে মুক্তি পাব।

উৎপত্তি যেখান থেকেই হোক না কেন? এখন যে ভাবেই হোক নিয়ন্ত্রন করতে হবে। আর এ জন্য দরকার হোম কয়ারান্টাইনের থাকা। মাস্ক ব্যবহার করা। সাবান দিয়ে হাত মুখ পরিষ্কার করা।

আরও পড়ুনঃ

করোনা ভাইরাসের বিস্তার মানব জাতির ধ্বংসের আলামত নয় তো? ইতিহাস কি বলে?

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হোম কোয়ারেন্টাইনে করনীয় কি?