Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের সীমানা ও মানচিত্র

Spread the love

বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের সীমানা ও মানচিত্র

কেমন হবে নতুন বাংলাদেশ? ও এর সীমানা বা মানচিত্র? এ নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে হাজারো প্রশ্ন আবার নানা সংশয়। অনেকে হয়ত এটাও ভাবছেন যে এই বর্ধিত সীমানা কি আদৌ পাবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ?,নাকি সবটাই আটকে থেকে যাবে হিসেবের টানাপোড়নে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে নতুন একটি দেশ এর অভ্যুদয় ঘটে আর এর নাম বাংলাদেশ,বাঙালি জাতিরাই দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর স্বাধীনতার এ লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল।

তখন থেকেই বাংলাদেশ হিসেবে একটি স্বাধীন,সার্বভৌম দেশ পৃথিবীর বুকে অবস্থান করে আসছে আর এর নির্দিষ্ট সীমানাও নির্ধারিত হয়ে আসছে সেই থেকে।কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ এর আয়তন বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা উঠে এসেছে নিচের কথাগুলোর মধ্যে ।


বাংলাদেশের আয়তন ছিল ৫৬ হাজার বর্গ মাইল। বাংলাদেশ ভারত সিট মহল বিনিময় ও অপদখলীয় জমি সমস্যা সমাধান এর পর বাংলাদেশ এর আয়তন বেড়েছে। খুব শীঘ্রই বর্ধিত এলাকা দেশের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ জলভাগ এর পরিমাণও নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর পর শুরু হয়েছে পুনরায় নকশা তৈরী করা। সিট মহল বিলুপ্ত ও দেশের বিভিন্ন নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়ায় স্বাধীনতার ৪৫ পর নতুন করে বাংলাদেশের নির্ভুল সীমানা ও সঠিক আয়তন নির্ধারণ এর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে ভারত ও মিয়ানমার এর সাথে সমুদ্রসীমার মামলা জেতার পর নতুন এলাকাও বাংলাদেশের সীমানায় যুক্ত হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ও নিশ্চিত এ সংক্রান্ত অন্তর্মমন্ত্রণালয় এর বৈঠক সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়। নতুন করে আঁকা হয়েছে বাংলাদেশ এর নতুন মানচিত্র।

পাঠ্যপুস্তক সহ সর্বত্র খুব শীঘ্রই এ মানচিত্র প্রকাশিত হবে। বাণিজ্যিক ভাবে নতুন মানচিত্র সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার আয়োজন ও প্রক্রিয়াধীন। খালি চোখে হয়ত চট করে এ পরিবর্তন বোঝা কঠিন,কিন্তু দেশের আয়তন বেড়েছে জলে ও স্থলে। সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতায় ২০১১ সালে প্রটোকল চুক্তির পর ভারতের আসাম,মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত এলাকায় ১২৪৩ টি পিলার বসিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ৩৬.১৮ বর্গ কি.মি. আয়তন বেড়েছে।

২,২৬৭.৬৮২ একর অপদখলীয় জমি উদ্ধার হয়েছে ও ১১১টি সিট মহল বেড়েছে। ৭৫টি দ্বীপ নতুন করে স্থায়ী ভাবে জেগে ওঠা এদিক দিয়েও আয়তন বেড়েছে। তবে ৫৬ হাজার বর্গ মাইল এর বাংলাদেশে নতুন আয়তন বেড়ে কত হয়েছে তা সঠিকভাবে জানতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

এ বছরের জরিপ অধিদপ্তর এর আঁকা দেশের সর্বশেষ মানচিত্র বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সহ সকল সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আঁকা নতুন মানচিত্রে দেখা যায়,সমুদ্র তীরবর্তী দক্ষিণ ভাসানচর, পুটনি দ্বীপ বরাবর নতুন তট ভূমি যুক্ত হয়েছে। ফলে সমুদ্রসীমা যেমন বাড়ছে তেমনি মানচিত্রের নিচের অংশে কক্সবাজার, বরগুনা,সেন্টমার্টিন রূপান্তরিত হয়ে তটরেখা সুন্দরবন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।


বাংলাদেশের বর্তমান সীমান্ত তৈরী হয়েছিল ১৯৪৭ সালের ঔপনিবেশিক শাসনামলের পর বর্তমান বাংলাদেশ অঞ্চল তখন পূর্ব বাংলা নামে পরিচিত ছিল, পাকিস্তানের অংশ ছিল ২টি পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম বাংলা। তবে পশ্চিম বাংলা অবশ্য অনেক আগেই ভারতবর্ষ হিসেবে স্বাধীনতা পেয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে নবগঠিত দেশ পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল পূর্ব বাংলাকে। পূর্ব বাংলা থেকে পূর্ব পাকিস্তান নামে অভিহিত করা হয়।

পাকিস্তানি শাসন এর অবসান হলে স্বাধীন বাংলাদেশ তখন প্রথম মুখোমুখি হয় সীমানা চিহ্নিত করণ সমস্যার। ৩ দিকে ভারতের সীমান্ত থাকায় ১৯৭৪ সালে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সীমান্ত চুক্তির স্বাক্ষর করেন স্বাধীন বাংলাদেশ এর স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ চুক্তির আলোকেই বাংলাদেশের মানচিত্র তখন চূড়ান্ত হয়েছিল।

বর্তমানে নতুনভাবে জেগে ওঠা বিভিন্ন চর,দ্বীপ, সিট মহল বিনিময় এবং অপদখলীয় জমির সমাধান হওয়াতে বাংলাদেশ এর মানচিত্র সম্পূর্ণ ভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশ এর সীমানা প্রায় দ্বিগুণ এর মত বেড়ে যাচ্ছে। অচিরেই প্রকাশিত হচ্ছে দেশের নতুন মানচিত্র আর নতুন সীমানার আয়তনও।