Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

যে কারণে তেশরা অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি পর্যাপ্ত নয়

Spread the love

যে কারণে তেশরা অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি পর্যাপ্ত নয়

কভিড-১৯ এর যাঁতাকলে পড়ে সমস্ত পৃথিবী আজ নাস্তানাবুদ। পৃথিবীর আবহাওয়া পরিমণ্ডলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে এই উপকারী পরিবেশগতভাবে কভিড-১৯ এর প্রভাবে। কিন্তু মানবজাতির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখানেই ব্যক্তির জ্ঞান চর্চা হয়।

বাংলাদেশ জ্ঞানচর্চার অন্যতম প্রতিষ্ঠান বিশ্ব বিদ্যালয়। সমগ্র বাংলাদেশ অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাথমিক মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আজ পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে । এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা একটি দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। কিন্তু মানুষ আগে না শিক্ষা আগে? অবশ্যই মানুষ!!! মানুষের জন্যই সমস্ত পৃথিবীর উন্নতি।

একটি জীবনের মূল্য অমূল্য ।বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যম বিবিসির সূত্র ধরে যে খবরটি বেরিয়েছে, তেশরা অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই ছুটি কি পর্যাপ্ত? সে বিষয়ে কথা বলার আগে মানুষের জীবনের মূল্য অনুধাবন করা দরকার এবং সামগ্রিক পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে থাকা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা তার একটু ভেবে দেখা দরকার।

বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিকে অতি আদরের কোমলমতি শিশুরা পড়াশোনা করে শিক্ষা লাভ করে। বাংলাদেশ সরকারের একটি ঘোষণায় সমস্ত শিশুরা ইস্কুলে যেতে বাধ্য থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে আরো দুইটি ধাপ রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্র বলা হয় এরাই জাতির ভবিষ্যৎ । একটি জাতির উন্নতির জন্য গবেষণা অপরিহার্য। কোভিড-19 এর বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের শিক্ষা বাবস্থার ক্ষতি হওয়া সত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া কি উচিত হবে ? সবার মনে আজ এই একই প্রশ্ন। এ যেন এক অপূরণীয় ক্ষতি কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রকৃতির নির্মম প্রতিদান প্রতিশোধ প্রকৃতি যেন আমাদের প্রতিশোধ নিচ্ছে।

কোন রাগান্বিত ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ সুস্থ ভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে গেলে তার রাগের বহিঃপ্রকাশ করতে দিতে হয়, কান্না মানুষের অন্তরের যন্ত্রণাকে লাঘব করে প্রশমিত করে। ঠিক তেমনি প্রকৃতির প্রতিশোধ যেন প্রকৃতির মত নিতে পারে। তাই প্রকৃতিকে আমাদের সুযোগ দেওয়া উচিত তাহলেই প্রকৃতি আবার নতুনভাবে প্রস্ফুটিত ভাবে আমাদের জন্য বিলিয়ে দেবে কভিড-১৯ এর কারণে বৈশ্বিক আবহাওয়ার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।

বিশ্বের আকাশে ভাসমান ধূলিকণা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে এর প্রভাব বাংলাদেশের বড় বড় ব্যস্ততম শহর গুলোতে লক্ষ্য করা যায় বাতাস এখন অনেক নির্মল কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে আমরা যাচ্ছি। মানছি না কোন স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব। প্রকৃতির বিরুদ্ধে জয় করা যায় না।

এখন আসা যাক বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘোষিত ছুটির পরিমাণ পর্যাপ্ত নয় কেন? কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানচর্চা হয়। দেশের যুবকরা সক্রিয় এবং অনুপ্রাণিত উদ্দীপ্ত জনশক্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীতে বা বিভাগে পড়াশোনা করে। দেশের কোন একটা অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তে কোন একটা মেধা অকালে ঝরে যায় কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে, তার জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়, সেই দায়ভার কে নেবে?

সরকার কি নিবে? তাকে তো ধরাও যায়না, দেখা যায় না, ছোঁয়াও যায়না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর উনারা হলেন সর্বত্র বিজ্ঞ ব্যাক্তি। ওনারা কি নিবেন একজন ব্যক্তি থেকে অন্য একজন ব্যক্তির প্রতি সংবেদনশীল কভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ার ফলাফল রুখতে? যদি সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে অনুষদে ছড়িয়ে পড়ে তবে এর দায়ভার কে নেবে?

একটা সিস্টেম ধ্বংস করা সহজ, কলুষিত করা অনেক সহজ , কিন্তু সুন্দরভাবে রক্ষা করা অনেক কঠিন। তাই সামগ্রিক বিবেচনায় সরকারকে আরো বেশি চিন্তাশীল হতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকবৃন্দ মতামত দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কে কিভাবে রক্ষা করা যায় এবং সামগ্রিক জনশক্তি দেশের ভবিষ্যৎ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত অপরিহার্য।



লেখক

যে কারণে তেশরা অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি পর্যাপ্ত নয়

রমন কুমার বিশ্বাস, সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, পবিপ্রবি, পটুয়াখালী