আমার গল্প
আমার ছোট কালের স্মৃতি গুলো মনে করতে পারি না। তবে সব থেকে ছোট যে বয়সের স্মৃতি গুলো চোখে ভাসে তা যে দিব্য আলোকের মত। মনে হয় এই তো সেদিনের কথা। সময় পেরিয়ে গেছে ৩৮ বছর। এই তো সেদিন অফিসিয়াল ৩৮ তম জন্ম দিন চলে গেল। অফিসিয়াল বললাম এ জন্য যে আমার আসল জন্ম সাল জানা নাই। জন্ম-মাস আশ্বিনের শেষ বা কার্ত্তিকের দু-এক তারিখে হবে। দুর্গা পূজা আমার জন্মের সময়ে একটু ভিন্ন মাত্রায় এসেছিল। চিরাচরিত নিয়ম ভেঙ্গে মাঝে মধ্যে কার্ত্তিকে মাসেও দুর্গা দেবী আসেন ধরিত্রীতে। তাই মা- আমার মনে রেখেছেন আমার জন্মের মাস। আর জন্ম বার শনি। আমার মাধ্যমিকে পড়ার সময়ে জন্ম বৃত্তান্ত প্রয়োজন হল। তার আগে আর দিন ক্ষণ লিখে রাখার প্রয়োজন টুকু নাই। কে জানত ছেলে লেখা পড়া করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবার চেষ্টা করবে? তাই বোধ হয় পিতা মাতা এর প্রয়োজন টুকু অনুধাবন করেন নাই। টিকেরবিলা মাধ্যমিক স্কুল থেকেই আমার নতুন জন্ম তারিখ পাওয়া গেল। স্কুলের বাংলা শিক্ষক শ্রদ্ধেয় বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস সবিনয়ে অনুগ্রহ করে জন্ম সাল টি প্রকাশ করলেন। ১৯৮২ সালের ১২ এপ্রিল।
জাতীয় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা S.S.C পরীক্ষা পাশ করতে ১৫ বছর বয়স হয়। আমাদের নতুন জন্ম সাল অনুসারে হল ১৭ বছর। আমার এ সব ভেবেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম “স্যার, আমাদের বয়স তো ২ বছর বেশি হয়ে যাবে? ” স্যার প্রতিউত্তর দিলেন, ” আরে তোরা ভালো ছাত্র একবারেই পাশ করে যাবি তাই কোন অসুবিধা হবে না” স্যার এর প্রশংসা সূচক উত্তর শুনে আমরা আর কোন কথা বলিনি, তবে আমাদের প্রশ্ন টাও ছিল যে মিন মিনে স্বভাবের জোরালো ভাবে কোন কিছু বলতে পারিনি সেদিন। যেন প্রশ্ন করার জন্যই প্রশ্ন। যখন আসল জন্ম সালটাই জানি না তার আবার এতো দাবি বা গুরুত্ব কিসের। তখন বুঝতে পারিনি যে অফিসিয়াল কাজে (সরকারি চাকুরী) অফিসিয়াল জন্ম সাল ২ বছর চাকুরী জীবন থেকে ঝরিয়ে দিতে পারে।
অফিসিয়াল জন্ম সাল নিয়ে অনেক কথা বললাম। আমার সব থেকে কম বয়সের যে বাল্য স্মৃতি মনে আছে সেটা খুব রোমাঞ্চকর। তার আগে আমার আর কোন স্মৃতি মনে নেই। তবে অতীতের ঘটনার সাথে ঘটনার সংযুক্ত করে নাকি ভুলে যাওয়া অতীতকে সামনে আনা যায়। যদিও আমি সে পদ্ধতি এখন অবলম্বন করিনি। কারণ এই রোমাঞ্চকর অতীতটাই হোক না আমার জীবনের শুরু?