সন্তানের প্রতি পিতা মাতা র কি করণীয়?
সন্তানের নিকট পিতা মাতার কেমন হওয়া উচিত। সন্তানের প্রতি পিতা মাতার দায়িত্ব কি? এমন প্রশ্নে , অবশ্যই পিতা মাতার ভুল ত্রুটি সন্তানের সামনে উপস্থাপন করা উচিত নয়। পিতা বা মাতা যদি কোনো অন্যায় অপরাধ কুঅভাস করেও থাকে সেটা যেনো সন্তানের চিন্তার বিষয় না হয়।
সন্তান যদি পিতা মাতার ওই সব খারাপ বিষয় নিজে ভাবতে শুরু করে তবে তার মধ্যেও ওই সব খারাপ দোষ চলে আসে। অথবা প্রশ্রয় পায়। তাই পিতা মাতাকে এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। স্বামী স্ত্রী ঝগড়া বিবাদ সন্তানের সামনে করা উচিত নয়। এতে বাচ্চারা ভয় পায়। মনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। বাচ্চারা হতাশায় ভোগে। সৃজনশীলতা নষ্ট হয়। মানসিক বৃদ্ধি বাধা গ্রস্ত হয়।
বাচ্চারা পিতা মাতাকে দেখে দেখে শিক্ষা লাভ করে। এটা কর ওটা কর বললে কোনো কাজ হয়না। বরং উদাহরণ হিসাবে, পিতা মাতা যদি সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করে তবে সন্তান ও তাই করবে। সন্তান দেখে দেখে অভ্যাস গড়ে তোলে। সে জন্যই বলা হয়, পরিবার ই সন্তানের শিক্ষার সুতিগাগার।
উন্নত বিশ্বে স্কুলে শিশুশ্রেণীতে পড়াশুনা বাদে শুধু এই জন্যই আদব কায়দা শিশ্ঠাচার শেখানো হয়। ওই সব দেশে সন্তানকে সময় দেবার মত পর্যাপ্ত সময় পিতামাতার নেই। কিন্তু আমাদের দেশে পর্যাপ্ত সময় রয়েছে সারা দিন ই সন্তানকে পাশে রাখা যায় বিশেষত মা থাকেন প্রধান ভূমিকায় ।
সন্তানের প্রতি পিতা মাতা র কি করা উচিত নয়
সন্তানের সামনে কখন মিথ্যা কথা বলতে নেই।
সন্তানের সামনে কখন ও ছলনা মিথ্যা প্রলোভন সহ যাবতীয় দোষ ত্রুটি প্রকাশ করতে নেই।
সন্তানের সামনে সর্বদা হাসিখুশি থাকতে হয় তাদের কে নিয়ে খেলতে হয়।
শিশুদের কথা শুনতে হয়।
জাপানে শিশুদের কথা খুব গুরুত্ব দেয়া হয়। কারণ তাদের মতামত ও সমান গুরুত্ব পূর্ণ।
পিতামাতার প্রধান কাজ হলো সন্তানের আগ্রহের বিষয় খুঁজে বের করে আনা। এবং সেই আগ্রহের বিষয়কে লালন করা। সারা দিন সন্তানের পিছনে লেগে থাকার দরকার নেই। সন্তানকে কিছু সময় দিতে হবে নিজের মতো করে চিন্তা করার। তাদের মনোজগতে কল্পনার বীজ বপন করে দিতে হবে। তাহলে সন্তান নিজেই তার লক্ষে পৌঁছাবে। বলিউডের থ্রী ইডিয়ট মুভিতে এই বাস্তব কথা টাই উপস্থাপন করা হয়েছে যে প্রতিটি মানুষের সুপ্ত ইচ্ছাটাকে জীবনের ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে নিতে সহজ হয়।
অনেক পিতা মাতা তাদের নিজেদের অপূর্ণ বাসনাকে সন্তানদের মাধ্যমে পূর্ণ করার ব্যর্থ চেষ্টা করে থাকেন। এতে সন্তান এর ও ভালো কিছু হয়না পিতামাতার ইচ্ছাও পূরণ হয় না। পিতা মাতা অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে সন্তান সারা জীবন সিদ্ধান্তহীনতা, মানসিক পীড়া ও আনন্দ হীন এক শিক্ষার মধ্যে দিয়ে নিজেকে চালনা করে।
কিন্তু সন্তানের নিজের একান্ত ভালো লাগার বিষয় টা যদি পিতা মাতা বুঝতে পারতো এবং সন্তানকে সেই পথেই আরো উৎসাহ দিত হবে সফলতা লাগিয়ে লাফিয়ে আসতো। এসব অনেক পিতা মাতা ভেবে দেখে না।
তাই সন্তানের উন্নত মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য সন্তানের সামনে পিতামাতার সমালোচনা করতে নেই।
সন্তানের প্রতি পিতা মাতা র কি করা উচিত
- সময় দিন: সন্তানের সাথে সময় কাটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সন্তানের সঙ্গে বিনোদন করুন, আলোচনা করুন এবং সমস্যা সমাধান করার জন্য সময় দিন।
- পরামর্শ ও নির্দেশনা: আপনি যদি কোনও পরামর্শ দিতে পারেন বা সন্তানের কাছে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারেন, তবে এটা করুন। তারা কিছুটা বড় হয়ে উঠছে এবং আপনার সাথে অভিজ্ঞতা পেতে শুরু করছে।
- সহানুভূতি ও সমর্থন: আপনার সন্তানের সমস্যার জন্য সহানুভূতি প্রদর্শন করুন এবং তাদের সমর্থন করুন। তাদের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করুন এবং তাদের সাফল্যের জন্য উৎসাহ দিন।
- শিক্ষা ও সংস্কৃতি: শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ জাগানো এবং আপনার সন্তানকে এতে নির্ভরযোগ্য করুন। তাদের পঠন-পাঠনের জন্য সমর্থন করুন এবং পাঠশালার বাইরে অধিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করুন।
- নিজেকে উদাহরণ হিসেবে রাখুন: সন্তানের পোষণের জন্য নিজেকে সঠিক উদাহরণ হিসেবে প্রদর্শন করুন। আপনি যদি শিষ্টাচারী, কর্মঠ এবং নেতৃত্বে ভাল উদাহরণ হন, তাহলে আপনার সন্তান অনুসরণ করবেন।
সাধারণত, পিতা-মাতা সন্তানের প্রতি প্রেম, সহানুভূতি এবং সমর্থন প্রদান করে তাদের উন্নতি ও সাফল্যের পথে সহযোগিতা করতে পারেন।