অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয়
প্রতি চার বছর পর পর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন ২৯ তারিখ হয় অর্থাৎ একটি দিন বেড়ে যায়।
এই দিনটিতেই মানুষ উদযাপন করে।
এই উদযাপন আসলে অতীতের ছিল না এখন ফেসবুকের যুগে এসে যেকোনো বিষয়কেই এখন মানুষ উদযাপন করা শিখে গেছে। যেকোনো একটি ঘটনাকে আশ্রয় করে মানুষ এখন উদযাপন করতে চায় এটা অবশ্য একটি ভালো দিক কারণ মানুষের আনন্দ দরকার। পৃথিবীতে আমরা এসেছি আনন্দ করতে কিন্তু এই আনন্দ যে বিরহ বেদনায় পরিণত হবে কে জানতো? ২৯ তারিখ, ২০২৪ ফেব্রুয়ারি মাস, ঢাকার বেইলি রোডে একটি মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ।
ঘটনাস্থল ঢাকার বেইলি রোড কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্ট ভর্তি মানুষ ২০ শতাংশ খাবারের মূল্য হ্রাস করাতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন। অন্তত ৪৫ জন মানুষের মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না আরো শত শত মানুষ অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়ে হাসপাতালে যন্ত্রণা পোহাচ্ছে। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা, আনন্দকে হঠাৎ নিরানন্দ করে দিল, এই দায়ভার কে নেবে?
ঢাকার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয়
আমাদের কি কোন দায়ভার নেই? আমরা কবে সচেতন হব? বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি মাসেই একটি বা দুইটি বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটছে এবং এটা একটি মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। এর থেকে আমাদের অবশ্যই পরিত্রাণ পেতে হবে । এটা কোন প্রাকৃতিক ঘটনা নয় যে আমরা এটাকে রোধ করতে পারবো না। এই দুর্যোগকে আমরা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে পারি যদি আমরা একটু সচেতন হই।
প্রতিটি হোটেল, আবাসিক ভবন, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এবং যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানকারী সংস্থা অথবা স্থান গুলোতে অন্তত সাধারণ অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা থাকা উচিত। ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকা উচিত। কোন একটি ভবনে অপ্রত্যাশিত অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেলে অতি দ্রুত ভবন থেকে বের হওয়ার জন্য exit রুট থাকা উচিত। কিন্তু আমাদের প্রতিটা বিল্ডিংয়ে এরকম ব্যবস্থা কি রয়েছে? অবশ্যই নেই।
হয়তো গুটি কয়েক বিল্ডিং এ এই ধরনের ব্যবস্থা থাকতে পারে কিন্তু অধিকাংশ ভবনেই এই ধরনের ব্যবস্থা নেই। এগুলো হল শহর অঞ্চলের কথা।
গ্রামাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয়
গ্রামাঞ্চলে ও মানুষ বিভিন্নভাবে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হতে পারে গ্রামের পর গ্রাম পুড়ে ভস্ম হয়ে যেতে পারে। পাড়া থেকে পাড়া। বাড়ি থেকে বাড়ি পুড়ে ভস হয়ে যাওয়ার অতীত ইতিহাস রয়েছে আমাদের কিন্তু আমরা এখনো অসচেতন। আমরা কবে সচেতন হব?
বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ডের প্রধানত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি এবং হোটেল রেস্টুরা গুলোতে বেশি দেখা যায় তাই যেখানে সাধারণ জনগণের সমাবেশ ঘটতে পারে সেই সব জায়গাতে অবশ্যই নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত বিশেষ করে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে।
যেকোনো ধরনের দুর্যোগ হঠাৎ বলে কয়ে আসে না কিন্তু আমাদের সতর্ক হতে দোষ কিসের? আমরা কেন সতর্ক হতে পারি না?
অনেক দুর্ঘটনা আমরা রোধ করতে পারি শুধুমাত্র আমাদের সদ ইচ্ছার কল্যাণে আমরা সাধারণত দুর্যোগের সাথেই বসবাস করি। অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা যে কোন জায়গা যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে কিন্তু আমাদের সামান্য একটু সচেতনতা এবং প্রস্তুতি প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ এর মৃত্যু থেকে প্রাণ বাঁচাতে পারে। অনেক আর্থিক ক্ষতি থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। মনুষ্যসৃষ্ট যেকোনো দুর্যোগের ঝুঁকি রয়েছে এমন সরকারি বেসরকারি ভবন অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাংক হোটেল রেস্টুরেন্ট গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুলোতে আমরা ঝুঁকি প্রশমনের জন্য অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা রাখতে পারি। ভবন তৈরি সময় ফায়ার এক্সিট রাখতে পারি। মানুষের জীবন বাঁচানো যায় প্রতিটি মানুষের জীবনের মূল্য দেয়া শিখতে হবে।
বাংলাদেশে অনেক দুর্যোগ সম্প্রতি আবির্ভাব হয়েছে এর মধ্যে অগ্নিকাণ্ড দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রধান। একটু সচেতনতাই আমাদের এইসব দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা প্রশিক্ষণ দেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং সরকারি পর্যায়ে প্রতিটি স্থাপনাতে ঝুঁকি প্রশমনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিয়মিত তত্ত্বাবধানে ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা রয়েছে।
সর্বোপরি আমাদের ব্যক্তিগত সচেতনতা অবশ্যই সবার আগে। ব্যক্তি পর্যায়ের সচেতন হলে পরিবার সচেতন হবে । পরিবার সচেতন হলে একটি মহল্লা সচেতন হবে। মহল্লা থেকে শহর, শহর থেকে দেশ। কোন অগ্নিকাণ্ড আর যেন না ঘটে যেন সেটাই সবার প্রত্যাশা!
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ
বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ কথা থেকে নিবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে । পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ডিপ্লোমা কোর্স করে নিতে পারেন।
More Stories
Russell Viper নিধন কেন সমাধান নয়?
চন্দ্রবোড়া সাপ কামড়ালে কি করা উচিত
সাপ্তাহিক চাকরির খবর ২০২৪