কোভিড-১৯ রোগ নিয়ে যে সব কুসংস্কার প্রচলিত আছে
১। কোভিড-১৯ রোগ ও গোমূত্র পানঃ
ভারতের একদল উগ্রবাদী হিন্দু নেতারা করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে গোমূত্র পান করার কথা বলে মানুষ কে বিভ্রান্ত করছেন। তারা নিজেরা যেমন পান করছেন আর অন্যকেও উৎসাহিত করছেন। গো মূত্র পানে এর মধ্যে অনেকে অসুস্থ হয়েছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এর কোণ বাস্তব ভিত্তি খুঁজে পাচ্ছেন না। সম্পূর্ণটাই ধর্মের নামে কুসংস্কার।
২। কোভিড-১৯ রোগ ও স্বপ্নে পাওয়া ওষুধঃ
বাংলাদেশে এক জন মুসলিম করোনা ভাইরাসের ওষুধ স্বপ্নে পেয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুক এর মাধ্যমে মানুষ কে উৎসাহিত করছেন। অনেক মানুষ সেসব বিশ্বাস করছেন। যার কোণ বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রমাণ নাই। তিনি ঘোষণা করছেন এই স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ শুধু মুসলমানদের জন্য। যেহেতু এটা পবিত্র ওষুধ। তাই কোণ বিধর্মী দের জন্য নয়।
৩। কোভিড-১৯ রোগ ও ১৫ মিনিট কড়া রোদে দাঁড়ানঃ
ভারতের স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবের নয়া নিদান বলেছেন, ১৫ মিনিট কড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকলে শরীরে কোণ করোনা ভাইরাস থাকবে না। অনেকে বলছেন সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি থাকে সে জন্য শরীরের পক্ষে ভাল তবে করোনা ভাইরাসের জন্য যে সম্পূর্ণ আরোগ্য হবে কিনা সে বিষয়ে কোণ প্রমাণ নাই। অনেকে এটাকে করোনার সঠিক চিকিৎসার বিরুদ্ধে বিভ্রান্ত ছাড়া আর কিছুই না।
৪। কোভিড-১৯ রোগ ও নিসিন্দা পাতার রসঃ
অনেকে নিসিন্দা পাতার রস খাওয়াকে করোনার জন্য ভাল মনে করছেন। এটা খেলে নাকি আরোগ্য লাভ করা যাবে। এই খবর সমস্ত মাগুরাতে ছড়িয়েছে। এই এলাকার গ্রাম ও শহরের মানুষের মুখে মুখে। অনেকে নিয়মিত খাচ্ছেন ও অন্যকে পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রতিদিন আধা কাপ রস।
৫। কোভিড-১৯ রোগ ও থানকুনির পাতা ও রসুন কোয়াঃ
প্রতিদিন তিনটি করে থানকুনির পাতা ও তিনটি রসুন কোয়া। এখবর সমস্ত বাংলাদেশে ছড়িয়েছে। মাগুরা থেকে একজন বাক্তিক মুখে এ কথা শুনে সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। সবাই নাকি একথা বিশ্বাস করা শুরু করেছে যে এর থেকে করোনা ভাইরাস চিরতরে মুক্তি পাওয়া যাবে। অন্য একজন দৃঢ় ভআবে বললেন থান কুনির পাতা শুধু করোনা ভাইরাস নয় এটা খেলে শরীরে কোন রোগ ই আসতে পারবে না। বিজ্ঞান বলে রসুন ভাল একটা পথ্য যেকোনো ক্ষতিকর অণুজীব দমন করার জন্য। তবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে হাত মুখ সাবান পানি দিয়ে ধোয়া ও হাঁচি কাশি থেকে দুরে থাকার জন্য মাস্ক ব্যবহারের কোন বিকল্প নাই।
৫। কোভিড-১৯ রোগ ও ডাবের জল ও কচি নারকেলের সর খাওয়াঃ
আমেরিকা থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে এক জন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন যে, ডাবের জল ও কচি নারকেল এ রয়েছে অধিকতর বেশি অম্লতা যা আমাদের মুখ ও শ্বাসনালীকে অধিকতর আসিডিক করে রাখে যা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য প্রতিরোধক।তাই সবাইকে ডাবের জল ও কচি নারকেলের সর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যদিও অনেকে এটা সঠিক চিকিৎসার পরিবর্তে বিভ্রান্তি ছড়াবে বলে মনে করেন।
৬। কোভিড-১৯ রোগ ও লবণ পানির চিকিৎসাঃ
উইবু, টুইটার ও ফেসবুকের পোস্টগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘চীনের একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন, লবণ পানি মুখে নিয়ে কুলি করলে এই নতুন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে। কিন্তু এমন খবর এর সত্যতা বলে কিছু নাই।লবণ পানি দিয়ে কুলি করলে সাধারণ সর্দি জ্বর থেকে কিছুটা উপকার পাওয়া যেতে পারে তবে করোনা ভাইরাস এর জন্য কোণ কাজে আসবে না ।