Colorgeo.com

Disaster and Earth Science

যেভাবে তৈরি হয় ক্ষতিকর গ্যাস

Spread the love

যেভাবে তৈরি হয় ক্ষতিকর গ্যাস

মিথেন গ্যাসকে সাধারণত non-toxic গ্যাস বলা হয় যদিও এ গ্যাস শ্বাস প্রশ্বাস রোধক হিসেবে এবং বিস্ফোরক হিসেবে ক্ষতিসাধন করতে পারে। মিথেন গ্যাস সাধারনত পরিবেশের খুব বেশি ক্ষতি সাধন করে না কিন্তু এই গ্যাস একটি গ্রিন হাউস গ্যাস যা বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। গ্যাস ক্ষেত্র থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক গ্যাস এর মধ্যে মিথেন একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস যা প্রাকৃতিক ভাবে গ্যাস ক্ষেত্র এবং আবদ্ধ জলাশয় থেকে উদগীরণ হতে পারে এবং মানুষের সৃষ্ট বিভিন্ন উৎস থেকে বাতাসে মিশে যেতে পারে।

মনুষ্য সৃষ্ট কারণ তাছাড়াও প্রাকৃতিক উৎস যেমন পেট্রোলিয়াম জাতীয় খনি থেকে গ্যাসের উদগীরণ হওয়া, কয়লা উত্তোলনে মিথেন গ্যাস তৈরি হওয়া । প্রাকৃতিক গ্যাস এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা স্থানান্তর করা র ক্ষেত্রে পাইপ লাইনের ছিদ্র দিয়ে বাতাসে বের হওয়া,  অর্ধ পোড়া জ্বালানি থেকে  মিথেন গ্যাস তৈরি হওয়া এবং অণুজীব এর উপস্থিতিতে মাটিতে গ্যাস তৈরি হওয়া যেমন আবর্জনার স্তূপ অথবা কোন নালা-নর্দমার পচা কোন জৈব থেকে এ গ্যাস তৈরি  হওতে পারে।

ক্ষতিকর গ্যাস মিথেনের উৎস

সাধারণভাবে আবর্জনার স্তুপ থেকে ৩৬%, গবাদিপশুর নাড়িভুঁড়ি অথবা জবাই করার পর আবর্জনা থেকে ২০%, প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে ১৮%, কয়লা থেকে ১১%,  ক্ষেতে খামারে ব্যবহৃত সার জৈব সার থেকে ৯%, পেট্রোলিয়াম থেকে ১% ও অন্যান্য ভাবে ৫% মিথেন গ্যাস পাওয়া যায়। বৈশ্বিক আবহাওয়া মন্ডলে মিথেন এর ঘনত্ব পৃথিবীতে শিল্প-কারখানার উত্থানের পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে এবং বলা হয় ২০% মিথেন গ্যাস মানুষের সৃষ্ট গ্যাস  এবং গ্রিন হাউজ গ্যাস হিসেবে বায়ুমন্ডলে সংযুক্ত হয়েছে।

মিথেন ছাড়াও কিছু কিছু নন-হাইড্রোকার্বন গ্যাস পৃথিবীর পরিবেশের ঝুঁকির জন্য একটা বিরাট ভূমিকা রাখছে। সেগুলোর মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইট একটি অন্যতম গ্যাস। হাইড্রোজেন সালফাইড ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে তৈরি হতে পারে।  সেক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া সহ কিছু তাপ ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড এবং হাইড্রোজেন সালফাইড তৈরি হয়। হাইড্রোজেন সালফাইড এবং বিভিন্ন ধরনের ধাতুর বিক্রিয়ার মাধ্যমে আয়রন সালফাইড, গ্যালেনা তৈরি হয়।  

সাধারণত হাইড্রোজেন সালফাইড একটি বিষাক্ত পদার্থ যা বায়ুমণ্ডল এবং বারিমন্ডলে প্রবেশ করে এবং খুব অল্প পরিমাণ হলেও এটা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।  দীর্ঘদিন ধরে হাইড্রোজেন সালফাইড বাতাসের মিশতে থাকলে এটা যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং পরিবেশের ইকোলজি উপর একটা বিরূপ প্রভাব ফেলে।  

অনুজীবের মাধ্যমে বিভিন্ন জৈব পদার্থ এর বিক্রিয়ায় ভূগর্ভস্থ মাটির নিচে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয়। এই কার্বন-ডাই-অক্সাইড ভূগর্ভস্থ পানির স্তরে পেশ চাপ সৃষ্টি করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটিয়ে দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রীন হাউজ গ্যাস এর মধ্যে একটি অন্যতম এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। মার্কারি একটি ট্রেস এলিমেন্ট যা প্রাকৃতিক গ্যাসে থাকে এবং স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে মার্কারি আকরিক বিশেষত সিনাবার, এগুলো বিটুমিনের সাথে এবং হাইড্রোকার্বন গ্যাস এর মধ্যে থাকে।

মার্কারি বাষ্প অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে মার্কারি আয়ন তৈরি হয় এবং বৃষ্টির মাধ্যমে তা আবার পৃথিবীতে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। ব্যাকটেরিয়াগুলো এই অজৈব উপাদান মার্কারি কে মিথাইল মার্কারি নামে একটি যৌগ তৈরি করে যা খুবই সক্রিয় একটি যৌগ।। এই মিথাইল মার্কারি প্লাংকটন এর মাধ্যমে ছোট ছোট মাছগুলো শরীরে প্রবেশ করে, এভাবে বড় মাছ গুলোর শরীরেও জমা হতে থাকে। মিথাইল মার্কারি মানুষের ব্রেন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিশেষ ক্ষতি সাধন করে।

  • ভূগর্ভের অতি সন্নিকটে যে সমস্ত হাইড্রোকার্বন গ্যাস তৈরি হয় সেগুলো বিভিন্ন অণুজীব ও তাপীয় কোন প্রক্রিয়ায় সহজেই বায়ুমন্ডলে চলে আসে এই অণুজীব সৃষ্ট মিথেন অল্প তাপমাত্রা তেই তৈরি হয়।
  • অণুজীব সৃষ্ট মিথেন সাধারণত ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি যেমন কোন জলাশয়, সমুদ্র, নদী, বিল, খাল, অথবা মনুষ্যসৃষ্ট কোন নর্দমার অথবা আবর্জনা পরিশোধন কেন্দ্র অথবা ময়লার স্তূপে এইগুলো তৈরি হয় ধানক্ষেত এবং বিভিন্ন জৈব সার থেকেও অণুজীব সৃষ্ট মিথেন অধিক পরিমাণে বাতাসে মিশে যায়।
  • তাপীয় প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট মিথেন ভূগর্ভ থেকে বিভিন্ন গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম খনিতে ব্যবহৃত কেসিং লিক হয়ে ভূপৃষ্ঠে চলে আসতে পারে। মিথেন গ্যাস সৃষ্ট আরকিয়া নামক অণুজীব ও ব্যাকটেরিয়াগুলো বিভিন্ন জৈব যৌগের পচন প্রক্রিয়ায় মিথেন তৈরি করে।
ক্ষতিকর গ্যাস
যেভাবে তৈরি হয় ক্ষতিকর গ্যাস