রাসেল ভাইপার সাপের হিমোটক্সিন বিষ কিভাবে কাজ করে?
How does hemotoxin work?
সাপের বিষ বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতি করে। প্রধান প্রভাবগুলি নির্ভর করে বিষের ধরন এবং পরিমাণের উপর।
সাধারণ বিষ প্রভাব:
- হিমোটক্সিন: রক্তের কোষ ভেঙে ফেলে, অভ্যন্তরীণ রক্তপাত এবং অঙ্গ বিকলতার কারণ হয়।
- নিউরোটক্সিন: স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে, পেশী দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, এমনকি পক্ষাঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
- মায়োটক্সিন: পেশী কোষের ক্ষতি করে, যন্ত্রণা, দুর্বলতা এবং পেশী বিকলের কারণ হয়।
- সাইটোটক্সিন: কোষের ঝিল্লিকে ভেঙে ফেলে, বিভিন্ন টিস্যু এবং অঙ্গের ক্ষতি করে।
বিষের প্রভাবে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:
- স্থানীয় প্রতিক্রিয়া: কামড়ের স্থানে ব্যথা, ফোলাভাব, লালভাব এবং রক্তপাত।
- সাধারণ লক্ষণ: বমি বমি ভাব, বমি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, জ্বর, ঘাম, দুর্বলতা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, রক্তচাপ কমে যাওয়া।
- গুরুতর লক্ষণ: শ্বাসকষ্ট, পক্ষাঘাত, কোমা, মৃত্যু।
কতটা দ্রুত লক্ষণগুলি দেখা দেয় তা বিষের ধরন এবং পরিমাণের উপর নির্ভর করে। কিছু ক্ষেত্রে, লক্ষণগুলি কয়েক মিনিটের মধ্যে দেখা দিতে পারে, অন্যগুলিতে কয়েক ঘন্টা সময় লাগতে পারে।
হিমোটক্সিন এর প্রভাব
হিমোটক্সিন হলো এক ধরণের বিষ যা রক্তের কোষ এবং রক্তনালীগুলিকে ক্ষতি করে। সাপ, বিচ্ছু, মাকড়সা এবং অন্যান্য প্রাণীর বিষে এগুলি পাওয়া যায়।
হিমোটক্সিন কীভাবে কাজ করে:
- রক্তের কোষ ভেঙে ফেলে:
- হিমোটক্সিন বিভিন্ন এনজাইম ধারণ করে যা লাল রক্তকণিকা (RBC), সাদা রক্তকণিকা (WBC) এবং প্লেটলেট (PLT) ভেঙে ফেলতে পারে।
- RBC ভেঙে গেলে হিমোগ্লোবিন নির্গত হয়, যা রক্ত থেকে অক্সিজেন বের করে ফেলে এবং অক্সিজেনের অভাব (হাইপোক্সিয়া) সৃষ্টি করে।
- WBC এবং PLT ভেঙে গেলে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার এবং রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা কমে যায়।
- রক্তনালী ক্ষতি করে:
- হিমোটক্সিন রক্তনালীর দেয়ালের কোষকে ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে রক্তপাত, ফোলাভাব এবং অঙ্গ বিকলতা হতে পারে।
- কিছু হিমোটক্সিন রক্তনালীগুলিকে সংকুচিত করতে পারে, যার ফলে রক্ত প্রবাহ কমে যায় এবং টিস্যু মৃত্যু (নেক্রোসিস) হতে পারে।
- কামড়ের স্থানে ব্যথা, ফোলাভাব, লালভাব এবং রক্তপাত।
সাধারণ লক্ষণ:
- বমি বমি ভাব, বমি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, জ্বর, ঘাম, দুর্বলতা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, রক্তচাপ কমে যাওয়া।
- গুরুতর লক্ষণ:
- শ্বাসকষ্ট, পক্ষাঘাত, কোমা, মৃত্যু।
রাসেল ভাইপার এর হিমোটক্সিন বিষক্রিয়া কিভাবে রক্ত নষ্ট করে (How does hemotoxin work?)
রাসেল ভাইপার বিষে প্রধানত তিন ধরণের হিমোটক্সিন থাকে:
- হেমোরাজিন: এটি রক্তনালীর দেয়ালের কোষের উপর কাজ করে, যার ফলে রক্তনালী ফুটে যায় এবং রক্তপাত হয়।
- ফিব্রিনোলাইসিন: এটি রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়, যার ফলে আরও রক্তপাত হয়।
- হিমোগ্লোবিনেস: এটি লাল রক্তকণিকা (RBC) ভেঙে ফেলে, যার ফলে হিমোগ্লোবিন নির্গত হয় এবং রক্ত থেকে অক্সিজেন বের করে ফেলে।
এই তিনটি হিমোটক্সিন একসাথে কাজ করে রক্ত নষ্টের কারণ হতে পারে:
- হেমোরাজিন রক্তনালীগুলিকে ফুটে তোলে, যার ফলে রক্ত নালী থেকে বেরিয়ে আসে।
- ফিব্রিনোলাইসিন রক্ত জমাট বাঁধাকে বাধা দেয়, যার ফলে রক্তপাত বন্ধ হওয়া কঠিন করে তোলে।
- হিমোগ্লোবিনেস RBC ভেঙে ফেলে, যার ফলে হিমোগ্লোবিন নির্গত হয়। হিমোগ্লোবিন রক্তে অক্সিজেন বহন করে, তাই RBC ভেঙ্গে গেলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
হিমোটক্সিন কোথায় থাকে রাসেল ভাইপার এর শরীরে
রাসেল ভাইপারের শরীরে হিমোটক্সিন বিষ বিষগ্রন্থিতে অবস্থিত থাকে।
বিষগ্রন্থি হলো সাপের মাথার পেছনের অংশে অবস্থিত দুটি জোড়া গ্রন্থি। এই গ্রন্থিগুলি বিভিন্ন ধরণের বিষ তৈরি করে, যার মধ্যে রয়েছে হিমোটক্সিন, নিউরোটক্সিন, মায়োটক্সিন এবং সাইটোটক্সিন।
বিষগ্রন্থি থেকে বিষ কামড়ানোর সময় দাঁত দিয়ে বেরিয়ে আসে।
রাসেল ভাইপার যখন তার শিকারকে কামড়ায়, তখন তার বিষগ্রন্থি থেকে বিষ দাঁতের নালী দিয়ে কামড়ের স্থানে প্রবেশ করে।
বিষ দ্রুত রক্ত প্রবাহে মিশে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে যায়।
হিমোটক্সিন এর মুল উপাদান কি যা রক্তকে নষ্ট করে?
হিমোটক্সিন হলো এক ধরণের বিষ যা রক্তের কোষ এবং রক্তনালীগুলিকে ক্ষতি করে। সাপ, বিচ্ছু, মাকড়সা এবং অন্যান্য প্রাণীর বিষে এগুলি পাওয়া যায়।
রাসেল ভাইপার সহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপের বিষে হিমোটক্সিনের তিনটি প্রধান উপাদান রয়েছে যা রক্তকে নষ্ট করে:
- হেমোরাজিন:
- প্রধান কাজ: রক্তনালীর দেয়ালের কোষের উপর কাজ করে, যার ফলে রক্তনালী ফুটে যায় এবং রক্তপাত হয়।
- কার্যপ্রণালী: হেমোরাজিন রক্তনালীর দেয়ালের কোষের ঝিল্লি ভেঙে ফেলে, যার ফলে রক্ত নালী ফুটে যায় এবং রক্ত বেরিয়ে আসে। এটি ত্বক, মুখ, নাক, মূত্র এবং মলের মাধ্যমে রক্তপাত হতে পারে।
- ফলাফল: হেমোরাজিনের কারণে প্রচুর রক্তপাত হতে পারে, যার ফলে রক্তচাপ কমে যাওয়া, শক এবং মৃত্যুও হতে পারে।
- ফিব্রিনোলাইসিন:
- প্রধান কাজ: রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়, যার ফলে আরও রক্তপাত হয়।
- কার্যপ্রণালী: ফিব্রিনোলাইসিন ফিব্রিনogen নামক একটি প্রোটিনকে ভেঙে ফেলে, যা রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয়। ফলে রক্তপাত বন্ধ হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
- ফলাফল: ফিব্রিনোলাইসিনের কারণে দীর্ঘস্থায়ী এবং নিয়ন্ত্রণহীন রক্তপাত হতে পারে, যার ফলে জটিলতা এবং মৃত্যুও হতে পারে।
- হিমোগ্লোবিনেস:
- প্রধান কাজ: লাল রক্তকণিকা (RBC) ভেঙে ফেলে, যার ফলে হিমোগ্লোবিন নির্গত হয় এবং রক্ত থেকে অক্সিজেন বের করে ফেলে।
- কার্যপ্রণালী: হিমোগ্লোবিনেস RBC এর ঝিল্লি ভেঙে ফেলে, যার ফলে হিমোগ্লোবিন রক্ত থেকে বেরিয়ে আসে। হিমোগ্লোবিন রক্তে অক্সিজেন বহন করে, তাই RBC ভেঙ্গে গেলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
- ফলাফল: হিমোগ্লোবিনেসের কারণে অক্সিজেনের অভাব (হাইপোক্সিয়া) হতে পারে, যার ফলে দুর্বলতা, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
এই তিনটি হিমোটক্সিন একসাথে কাজ করে রক্ত নষ্টের কারণ হতে পারে।
হিমোটক্সিন এর রাসায়নিক নাম কি? আণবিক সঙ্কেত কি?
চন্দ্রবোড়া সাপ কামড়ালে কি করা উচিত
More Stories
সূর্য দেখে সময় নির্ণয়
হাইপোথিসিস এর গুরুত্ব
কয়লা ও কালো শেলের মধ্যে 2 টি প্রধান পার্থক্য জানেন কি?