ভালবাসা ও মায়া কোনটি সেরা?
কিছু দিন আগে আমি একটা মেয়ের সাথে কথা বলছিলাম ভালবাসা ও মায়া এই দুইটার মধ্যে সেরা কোনটা?
ভালবাসা হল মনের একান্ত ভালোলাগা। কোন মানুষকে যদি ভাল লাগে তবে তার সাথে সময় কাটাতে গল্প করতে তাকে অপলক দৃষ্টিতে দেখতে ভাল লাগে। ভালনবাসার মানুষকে কষ্ট দিতে ইচ্ছা করে না। এটা ভালবাসা। যদি কাউকে ভালবাসা যায় তবে মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া লাগে । কারণ ভালবাসার মানুষের প্রতি মায়া এমনিতেই চলে আসে। মায়া হল এক অদৃশ্য বন্ধনের নাম। যেমন ভালবাসা তেমনি মায়া যেন এক সূত্রে গাঁথা। মায়া না থাকলে ভাল বাসা থাকে না।
যদি কেউ বলে যে মায়া লাগে না তবে বুঝতে হবে ভালবাসা ও নাই সেখানে।
এই ভালবাসা ও মায়ায় কি কোন শ্রেণি বিভাগ আছে? অবশই শ্রেণি বিভাগ রয়েছে ।
ভালবাসা অনেক প্রকার হতে পারে তবে আমরা মোটাদাগে কয়েকটা শ্রেণিতে ভাগ করতে পারি যেমন
ক) পিতা মাতার প্রতি ভালবাসা
খ) সন্তানের প্রতি ভালবাসা
গ) শিক্ষাগুরুর প্রতি ভালবাসা
ঘ) ভাই বোনের প্রতি ভালবাসা
ঙ) স্ত্রী ও প্রেমিক প্রেমিকার প্রতি ভালবাসা
চ) বন্ধুর প্রতি ভালবাসা
ভালবাসা যত প্রকারই থাকুক না কেন মায়া কিন্তু একটাই । অর্থাৎ মায়ার কোন প্রকারভেদ নাই। পিতা মাতার প্রতি ভালবাসা থাকলে অবশই মায়া থাকবে সেখানে যে মায়া সেটা শুধু ভালবাসার জন্য মায়া এখানে মায়ার কোন প্রকার ভেদ থাকে না। ঠিক তেমনি স্ত্রীর প্রতি যে ভালবাসা সেখানেও মায়া থাকবে কিন্তু সে মায়া আর পিতা মাতার প্রতি ভালবাসার মায়া একই রকম। অর্থাৎ মায়ার কোন প্রকারভেদ বা ভেদাভেদ নাই।
কারো প্রতি ভালবাসার গভীরতা কতটুকু তা বোঝা যাবে তার প্রতি মায়ার গভীরতা কতটুকু। যদি মায়া বেশি থাকে তবে ধরে নিতে হবে ভালবাসার গভীরতা ও বেশি। মায়া না থাকলে সেখানে ভালবাসা থাকে না।
এখন প্রশ্ন হল কিভাবে বুঝব যে কারো প্রতি মায়ার গভীরতা আসলে কতটুকু?
কারো প্রতি মায়ার গভীরতা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে তবে, এটাও মনে রাখা জরুরি যে, মায়ার প্রকাশ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। অনেকে প্রকাশ্যে মায়া প্রকাশ করে, আবার অনেকে নীরবে যত্ন নেয়। শুধু বাহ্যিক আচরণ দেখে মায়ার গভীরতা পুরোপুরি বোঝা সম্ভব নয়।
আমি যে সব কারণ গুলো দেখে মায়ার গভীরতা বোঝার চেষ্টা করব তা হলঃ
- যত্ন ও মনোযোগ:
- যে ব্যক্তি মায়া অনুভব করে, সে আপনার প্রতি যত্নশীল হবে।
- আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং আপনার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করবে।
- আপনার প্রয়োজনে এগিয়ে আসবে।
- সহানুভূতি ও সমর্থন:
- আপনার দুঃখে সেও দুঃখিত হবে এবং সুখে আনন্দিত হবে।
- আপনার কঠিন সময়ে পাশে থাকবে এবং মানসিক সমর্থন দেবে।
- আপনার ভালো–মন্দ নিয়ে চিন্তা করবে।
- ত্যাগ ও স্বার্থহীনতা:
- প্রয়োজনে নিজের সুবিধা ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকবে।
- আপনার সুখের জন্য নিজের চাওয়াকে দূরে রাখতে পারবে।
- আপনার ভালো থাকাকে নিজের ভালো থাকা মনে করবে।
- বিশ্বাস ও নির্ভরতা:
- আপনার উপর গভীর বিশ্বাস রাখবে এবং আপনার প্রতি আস্থা রাখবে।
- নিজের গোপন কথা আপনার সাথে শেয়ার করবে।
- মানসিকভাবে আপনার ওপর নির্ভর করবে।
- সময় ও উপস্থিতি:
- আপনার জন্য সময় বের করবে এবং আপনার সাথে সময় কাটাতে চাইবে।
- আপনার আশেপাশে থাকতে পছন্দ করবে।
- আপনার অনুপস্থিতিতে আপনাকে মিস করবে।
- ক্ষমা ও সহনশীলতা:
- আপনার ভুলগুলো ক্ষমা করে দেবে এবং আপনার প্রতি সহনশীল হবে।
- আপনার দুর্বলতাগুলো মেনে নেবে।
- আপনার প্রতি ধৈর্যশীল থাকবে।
সমাজে অনেক মানুষ রয়েছে যারা ভালবাসা ও মায়াকে প্রকাশ করে না এটা তাদের জন্ম গত অভ্যাস তাই বলে তারা ভালবাসে না এটা বলা যাবে না আবার তাদের মায়া ও রয়েছে কারণ ভালবাসা থাকলেই মায়া থাকবে বলে ঘরে নেয়া যায়।
আমরা মা কে আমাদের মায়া প্রকাশ করি তখন মনে হয় যে মায়ের জন্য কিছু করতে হবে যেমন মা যদি অসুস্থ হয় তখন ভাল কোন ডাক্তার দেখানো র ইচ্ছা পোষণ করে তার জন্য দুর থেকে একটা অনুভূতি আসবে যাকে আমরা মায়া বলি। যেহেতু মায়ার অপর নাম ভালবাসা তাই একে মায়ের প্রতি ভালবাসা বলা যায়।
স্ত্রীর প্রতি ঠিক তেমনি মায়া লাগতে পারে যেমন কোন কোন অপূর্ণতা কে পূরণ করে দিতে ইচ্ছা করবে। যেমন স্ত্রীর যদি ভাল কোন শাড়ি না থাকে এবং স্ত্রীর একটি ভাল কোন শাড়ির চাহিদা রয়েছে দীর্ঘদিনের তখন সেই শাড়িটা কিনে দেয়া হবে ভালবাসা যা কিনা মায়া থেকে উত্থিত।
More Stories
লোন পাওয়া কি অধিকার?
অলৌকিক ঘটনা: গাছ থেকে রক্ত বের হচ্ছে বিশ্লেষণ চন্দন প্রতাপ মাগুরা
গরিবের স্ট্যাটাসঃ অলীক ধারণা ও গল্প (মুহাম্মদ ইউনুসের বই থেকে)