colorgeo.com

Disaster and Earth Science

পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ESDM প্রতিষ্ঠা দিবস

ESDM

পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ESDM প্রতিষ্ঠা দিবস। পৃথিবী যখন বিপর্যয়ে রয়েছে । তখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ভাবা যায়?? আজকের এই দিনেই এই অনুষদ যাত্রা শুরু করেছিল। প্রথমে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের একটি বিভাগ হিসাবে যাত্রা শুরু করে। তাই এক হিসাবে বলা যায়। আজ পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ESDM বিভাগের জন্ম দিন।

পরবর্তীতে বিভাগ থেকে শুধু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ হিসাবে গান সৃষ্টি ও গ্রাজুয়েট তৈরি করেছে । এর পর বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ ESDM নামে চলমান।

এখন পর্যন্ত ৫ টি ব্যাচ এমস শেষ করেছে এবং চাকুরী ও দেশের সেবায় নিয়োজিত। এবং ৭ টি ব্যাচ স্নাতক সম্পন করেছে। বিভাগে এখন পর্যন্ত ২২ জন শিক্ষক রয়েছে অনেকেই বিদেশে শিক্ষা ছুটি নিয়ে উচ্চতর গবেষণায় অধ্যয়নরত। বর্তমানে অনুষদে ৪ জন পিএইচ ডি ডিগ্রি সম্পন্ন অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক রয়েছেন।

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সংগঠিত “সিডর” এ  গোটা জাতি বিহ্বল হয়ে পড়ে। গোটা বিশ্ব এগিয়ে আসে এবং অধিকাংশ দুর্যোগের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে পবিপ্রবি পরিবারে বিশেষ অনুভূতি জাগে। অতঃপর ২৩ আগস্ট ২০০৯ সালে শুধু একাডেমিক ইন্টারেস্ট নয়, তীব্র সংকট পূর্ণ মুহূর্তে জাতীয় ও মানবিক বোধ থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের যাত্রা শুরু হয়।

বাংলাদেশের দুর্যোগ এর ইতিহাস যত দীর্ঘ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ইতিহাস তত দীর্ঘ নয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। তিনিই আজকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা  দিয়েছিলেন। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ঘূর্ণিঝড়ের দুর্গতদের পুনর্বাসন, আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ,সমুদ্র উপকূলবর্তী গ্রাম সমূহের পুনর্বিন্যাস, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধুই প্রথম গ্রহণ করেছিলেন। আজকের বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী “রোল মডেল” হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। জাতির পিতার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পরিকল্পনা এর পিছনে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। বঙ্গবন্ধু নিজেও ছাত্রজীবন থেকেই দুর্যোগ কবলিত মানুষের সেবায় আত্মনিয়োজি ত ছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি পরিকল্পনা করেন এবং ১৯৭৩ সালে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন । আজকের বাংলাদেশে এই কর্মসূচির মাধ্যমে লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ প্রবণ এলাকার জনগণকে সেবা দিয়ে আসছে।

দুর্যোগের বিপরীতে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই নতুন নয়। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা ঘূর্ণিঝড় এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগের সাথে নৈমিত্তিক সংগ্রাম করে আমাদের বেঁচে থাকতে হয় । প্রাকৃতিক দুর্যোগ পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা না গেলেও এদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে এর ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্যই দক্ষিণবঙ্গের সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও তথ্য ভাবে জড়িত।

দক্ষিণবঙ্গের দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঐকান্তিক সহযোগিতায় বিগত ২০০৯ সাল থেকে প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলায়, সুশিক্ষিত, দক্ষ ও মানবহিতৈষী দুর্যোগ বিজ্ঞানী, গবেষক ও ব্যবস্থাপক, পেশাজীবী গড়ে তোলার মহান ব্রত নিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় “টেকসই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন” নিয়ে সর্বদা কর্মমুখী চেষ্টায় নিয়োজিত । প্রথাগত দুর্যোগ-পরবর্তী সাড়া প্রদান ও পুনর্বাসন ধারণার বিপরীতে, দুর্যোগ-পরবর্তী ঝুঁকি হ্রাস সংস্কৃতির সূচনা, বাস্তবায়ন ও প্রসারের লক্ষ্যে এ অনুষদ কাজ করে যাচ্ছে