প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় করণীয়
প্রকৃতি মায়ের মতো আমাদের লালন করে। মাথার উপরে সূর্যের কিরণ থেকে ভূপৃষ্ঠে মাটি,পানি,বায়ু সবকিছু প্রকৃতি আমাদের উজার করে দিয়েছে।এতোকিছুর পরেও প্রকৃতির বিরুপ আচরণ আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন করে।শান্ত প্রকৃতি নিমেশেই অশান্ত হয়ে উঠে।ডেকে আনে দূর্যোগ আর দূর্ভোগ।
প্রকৃতিক দূর্যোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিম্নবিত্ত,মধ্যবিত্ত পরিবারেএ খেটে খাওয়া মানুষ।ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক।আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তার চারপায়ে চলা প্রানীগুলো।
এছাড়াও প্রাকৃতিক দূ্যোগের কারণে সৃষ্টি হয় নানাবিধ অসুখ-বিসুখ।এসব বিবেচনায় আমাদের করণীয় থেকেই যায়।

প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোটেই সাধারণত সমস্যা না।ব্যাক্তিগত থেকে পারিবারিক সকলের প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় চুরান্ত পদক্ষেপ নেওয়া।একটি পরিবারে সদস্য ছাড়াও গবাদিপশু,হাস-মুরগী থাকে।তাদের সুরক্ষায় বসত বাড়ি আঙিনা সুন্দরভাবে তৈরি করতে হবে যাতে দূর্যোগের সময় দূর্ভগে পরতে না হয়।এছাড়াও সুস্থ জীবন যাপনের জন্য মাটি,পানি বায়ুর দূষণ প্রতিরোধ করতে হবে।
সমাজের করণীয় : সমাজে উঁচু নিচু বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বসবাস করে।সকলে মিলেই সমাজ মেইনটেইন বা পরিচালিত হয়।আবেগ,অনুভূতির মিশ্রন যেখানে অঙ্গা-অঙ্গি জড়িত।সমাজে কে ভালো কে মন্দ আমরা একে অপরের টা সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে অবহিত।তবে পরিবেশ,প্রকৃতির অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আমরা প্রায়সই অন্ধের ন্যায় আচরণ করি।নেতিবাচক বিষয়বস্তু এরিয়ে আমরা কি পরিবেশের অব্যবস্থাপনার দিক গুলো সবাই মিলে খুচিয়ে সমাধান করতে পারি না? অবশ্যই পারি।সবশ্রেণির মানুষরা মিলে আমাদের প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় পরিবেশের অব্যবস্থাপনার দিকগুলোর সমাধান করতে হবে।
ছাত্র সমাজের করণীয় : আমাদের ছাত্রসমাজ এক্ষেত্রে বিশাল অংশ হয়ে উঠতে পারে।তারা যেকোন বড় চ্যালেঞ্জ সংঘবদ্ধ হয়ে সুসম্পন্ন করতে একপা পিছপা হয় না।তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় কেন নয়? বিদ্যালয়ের পরিবেশ যেভাবে
নিয়মতান্ত্রিক মোতাবেক চলে ঠিক সেভাবে শিক্ষার্থীদের উচিৎ যে পথে তারা চলাচল করে,যে মাঠে তারা খেলাধুলা করে,রাস্তার যে মোড়ে তারা আড্ডা দেয় সেই জায়গা গুলো তারা সুন্দর পরিবেশের আওতায় নিয়ে আসবে।এটা তাদের নৈতক দায়িত্ব।এই কাজটি তারা সহজেই করতে পারে বিদ্যালয়ের সহপাঠী বন্ধু,সিনিয়র,জুনিয়রদের সহযোগিতায়।এতে করে তাদের শারীরিক,মনস্তাত্ত্বিক উভয় বিকাশ সাধন হবে পাশাপাশি প্রকৃতি সুন্দর ও সংরক্ষিত হওয়ার কাজটি প্রসারিত হবে।দূর্যোগ মোকাবেলায় ছাত্র সমাজের দৈনন্দিন জীবনে এসমস্ত পরিবর্তন আনা আবশ্যিক হওয়া উচিৎ।
যুব সমাজের করণীয় : সংঘবদ্ধ হয়ে দূর্যোগ প্রতিরোধের কাজটি যুব সমাজের উপরেও বর্তায়। তারা নিজেরা সচেতন হওয়ার পাশাপাশি গ্রাম,মহল্লা, জেলা এমনকি পুরা দেশবাসিকে সচেতন করতে পারে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ক ইভেন্ট করেও কাজটি সহজ করা যায়।গ্রাম,মহল্লায় অনেক যুবক বেকার জীবনকে অভিশাপ ভেবে বিভন্ন অপকর্মে লিপ্ত না হয়ে সামাজিক মূল্যবোধ থেকে পরিবেশ রক্ষায় প্রকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় নানান উদ্যোগে নিতে পারে।সংগঠিত হয়ে,চাঁদা তুলে, খেলাধুলার আয়োজন করে,সভা সেমিনার করে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচীর মাধ্যমে নিজের পরিবেশ রক্ষায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।এতে তাদের সামাজিক,ক্যারিয়ারের গুণাবলী অর্জিত হয় এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলার কাজটি এগিয়ে আসে।
সরকারের করণীয় : সরকারের করণীয় জনগনকে দূর্যোগ মোকাবেলায় সাহায্য করা। কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে পরিশ্রম দেওয়া।নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তলন রোধ করা,সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষা করা,যানযট নিরসন করে পরিবেশ দূষণ রোধ করা।এছাড়াও পয় নিষ্কাশনের তথা ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন করা,অবৈধভাবে গড়ে উঠা দালান কোঠা নির্মাণে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা প্রভৃতি কাজ সরকারকে ন্যায় নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে।।বলাবাহুল্য বিগত কয়েক বছরের বন্যায় দূর্ভগ করা মানুষ গুলো তাদের প্রতিনিধিদেরকেই দায়ী করছে।স্থানীয় প্রতিনিধিদের উচিৎ দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়জনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি সরকারি হস্তক্ষেপ দ্রুত নেওয়া যাতে পরবর্তীতে প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষয় ক্ষতি কমে আসে।
সর্বসাকুল্যের করণীয় : প্রতিকার এর আগে প্রতিরোধ এটা সকলেই জানি।সেরকম প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রতিরোধের নানান পন্থা সরকারি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।সাধারণ মানুষ কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে।প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং দূর্যোগ প্রতিরোধে আমারা এখনও ব্যাক্তিগত ভাবে কোন পদক্ষেপ নেই না।দূর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি কি হওয়া উচিৎ, দূর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের করণীয় কি কি এ বিষয়ে অনেকেই প্রত্যক্ষভাবে সেচেতন না।ব্যাক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিক সবক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলার কাজটি সহজ করতে ব্যাক্তিগতভাবে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই বললেই হয়।সচেতনের পরবর্তী ধাপ আসে নিজেই নিজেদের প্রকৃতি সংরক্ষণ করতে হবে।প্রত্যন্ত চর অঞ্চল থেকে শুরু করে যারা নিচু অঞ্চল এবং খরা অঞ্চলের বসিন্দা তাদের প্রকৃতি সংরক্ষণের কাজগুলো ভিন্ন ভিন্ন।নিচু অঞ্চলে যেমন পয় নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা অর্থাৎ ড্রেনেজ ব্যাবস্থা থাকা জরুরী সেরকমভাবে খরা অঞ্চলে পানি সংরক্ষণ এবং চর অঞ্চলে নদীর পারের মাটি শক্ত রাখতে বৃক্ষ রোপণ বাঞ্চনিয়। ।নিজেদের প্রকৃতি বুঝে আমাদের কেই পদক্ষেপ নিতে হবে।অবৈধ ভাবে দালান কোঠা নির্মাণ, প্লাবিত অঞ্চলে পানি যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকা এবং আমাদের এ বিষয়ে স্থানীয় প্রতিনিধির কাছে যবাবদিহি চাওয়ার দায়িত্ব আমাদের।মনে রাখতে হবে দূর্যোগে আমার আশেপাশের মানুষ দূর্ভগ পোহালে আমি নিজেও ছাড় যাবো না।
“গাছ লাগাই পরিবেশ বাঁচাই।”
“পানির অপর নাম জীবন।”
উক্তিগুলো বইয়ের পাতায় আর ভারী থেকে মাঝারি যানবাহনের পেছনেই শোভা পায়।যে মাটিতে কৃষক ফসল ফলায় সে মাটিই আমাদের প্রকৃতির অংশ। নিজেকে খেয়ে বাঁচতে হলে প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে।তবেই প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব হবে।
More Stories
Causes of Permian Mass extinction
Japan Scholarship Brochure and the total Guide
How Lost and found center police found the lost -phone