যে কারণে করোনা ভাইরাস নির্মূল করা কঠিন হবে বাংলাদেশের
বাঙ্গালি বীরের জাতি। নিজের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য। এখন আর একটা সময় এসেছে যুদ্ধ করার। তবে কোন মানুষের সাথে নয়, সামান্য ভাইরাসের সাথে। এটা একটা কঠিন যুদ্ধ। মানুষ-শত্রুকে চোখে দেখা যায় কিন্তু ভাইরাস কে খালি চোখে দেখা যায় না। কখন যে কাকে আক্রমণ করে বসে কেউ জানে না। তাই আমরা ভাইরাসের ভয়ে মুখে মাস্ক নিয়ে, ভাই বন্ধুদের থেকে দুরে দুরে থাকছি। এই যুদ্ধে জয়ের আশায়।
সমস্ত পৃথিবী আজ যুদ্ধ করছে এই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ। করোনা ভাইরাস কখন কার মাধ্যমে আক্রমণ করবে কেউ জানে না। এই রোগের কোন ওষুধ নাই। তাই সবাইকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে যে সামাজিক দুরত্ব বজায়ে রাখতে।
করমর্দন না করতে, কোলা কুলি না করতে, বিয়ে পার্টী, মসজিদ, মন্দির এ জমায়েত না হতে, বাজারে না যেতে, পার্কে বা সমুদ্র তীরে না যেতে। হাঁচি, কাশি আছে এমন বাক্তির থেকে অন্তত ১ মিটার দুরে থাকতে। বাসার বাইরে থেকে এসে হাত মুখ ভাল করে সাবান পানি দিয়ে ধুতে। বাসার বাইরে থাকা অবস্থায় খালি হাতে নাক মুখ না স্পর্শ করতে। মাস্ক পরে চলাফেরা করতে। তবেই কিছুটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
করোনা ভাইরাস নির্মূল এ বাঙ্গালি জাতি কি এটা করতে পারবে?
⇒ হোম কুয়ারেন্টাইনে থাকা করোনার ভাইরাস বহনে ঝুঁকি আছে এমন মানুষ কে আমরা উৎসুক জনতার ভিড় ঠেলে দেখতে যাই। নিজে আক্রান্ত হওয়ার কোণ ভয় নাই। বা ভাইরাস কি জিনিস নতুন কিছু এসেছে পৃথিবীতে ভাবটা এমন!
⇒ হাসপাতালে নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকার নির্দেশ পাওয়া রোগী হাসপাতাল থেকে পলায়ন করে। সে নিজে তো ঝুঁকিতে থাকবেই আর আসে পাশের মা বাবা ভাই বোন বন্ধু দের করোনার ঝুঁকিতে রেখেছে এমন জাতি নিয়ে কি হবে পৃথিবীর?
৩। চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। ঠিক তেমনি, ধর্ম না শোনে বিজ্ঞানের কাহিনী। ধর্ম যার ভিত্তি ভাইরাস তার কিত্তি কর্ম করবে এটাই স্বাভাবিক। ওষুধ আবিষ্কার হয়নি শুনে দেশের সবাই ডাক্তার বনে গেছেন। কেউ কেউ গোমূত্র, স্বপ্নে পাওয়া, নিসিন্দা পাতার রস, আরও কত কি যে ইতিমধ্যেই বাজারে এসেছে বলা মুস্কিল। এসব বিশ্বাস করে সঠিক পরিচর্যা থেকে অজ্ঞ রয়েছে সমাজের একতা বিরাট জন গোষ্ঠী।
⇒ সমস্ত দেশ আজ জরুরি অবস্থায় আছে, সংকট কাল অতিক্রান্ত। সেই সময়ে কিছু মানুষ তাদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অধিক মুনাফা অর্জনে ব্যস্ত।
⇒ বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষই অনুধাবন করতে পারছে না যে কতো বড় মহা মারি আসতে যাচ্ছে দেশে। মানুষ খুব বেশি অসচেতন, আজ ইতালির কথাই ধরা যাক, এত উন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও তারা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থামাতে পারছে না। সেখানে বাংলাদেশ পৃথিবীর একটা জন বহুল দেশ। চারিদিকে মানুষ আর মানুষ। সবাইকে করোনা ভাইরাসের ভয়াবাহতা বুঝতে হবে। তা না হলে মহা বিপদ আসবে।
⇒ বাংলাদেশের মানুষের একটা সুযোগ এসেছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার ও শেখার । যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলার । বেশির ভাগ মানুষ ই নোংরা। কি পুরুষ কি নারী। পান, বিড়ি, গুল, তামাক, সহ নেশা গ্রস্ত মানুষ প্রচুর। প্রতিটা মানুষ যেন এক একটা ভাইরাসের আস্তানা।
⇒ সরকারকে যথা সময়ে সাহায্য করে না দেশের জনগন। যে কোন নির্দেশনা পালন করা উচিত। প্রয়োজনে কার্ফু জারী করা উচিত করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত নির্দেশ সঠিক ভাবে পালনের জন্য।
⇒ কিছু কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাকি বলেছে, আমার স্কুল আমি খুলে রাখব না বন্ধ রাখব সেটা আমার ব্যাপার। সরকারের নির্দেশনার সাথে দ্বিমতকারী ব্যক্তি নিঃসন্দেহে।
⇒ বাংলাদেশের সরকারি/বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার নার্সদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য ব্যবস্থা কতটুকুই আছে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায়?