Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

সুখী হওয়ার গোপন রহস্য (The secrets of happiness)

Spread the love

সুখী হওয়ার গোপন রহস্য

সুখ। সুখ। সুখ।  এই পৃথিবীতে কে না সুখী হতে চায় ! বর্তমান পৃথিবীতে  এই সুখ যেন মানুষের একমাত্র কাম্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ।  উইকিপিডিয়াতে সুখের সংজ্ঞা এভাবে দেয়া হয়েছে যে, ‘ সুখ একটি মানবিক অনুভূতি।সুখ মনের একটি অবস্থা  বা অনুভূতি বা ভালোবাসা , তৃপ্তি, আনন্দ উল্লাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। জৈবিক ,মানসিক ,মনস্তাত্ত্বিক দর্শনভিত্তিক এবং ধর্মীয় দিক থেকে সুখের সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং এর উৎস নির্ণয়ের প্রচেষ্টা সাধিত হয়েছে ।’
সুখের প্রকৃত সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব নয়। সুখের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম হয়ে থাকে ।সুখের নির্দিষ্ট কোন পরিমাণ ও নেই । তাইতো বিশ্বখ্যাত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছেন – “ মানুষ যতটা সুখী হতে চায়, সে ততটাই হতে পারে । সুখের কোন সীমা নেই । ইচ্ছে করলেই সুখকে আমরা আকাশ অভিসারী করে তুলতে পারি “ । আজ আমরা সুখী হওয়ার কিছু গোপন রহস্য সম্পর্কে জানব।

সুখী হওয়ার গোপন রহস্য

সুখী হওয়ার গোপন রহস্য 8 Ways;

সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে :  বাংলা ভাষায় একটি কথা আছে – “ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল “ । সুখের সাথে স্বাস্থ্য এবং শারীরিক সুস্থতার এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে । এক গবেষণা বলতেছে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী লোকেরা সব সময় সুখী হয়ে থাকে। তাইতো ইসলামী মনীষী হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা বলেছেন – “ সুস্বাস্থ্যের চেয়ে বড় সম্পদ আর পৃথিবীতে কিছুই নয় । সুস্বাস্থ্যের অধিকারী লোকেরা  সবসময় প্রফুল্ল থাকে । এতে তারা কাজ করার নতুন স্পৃহা পায় এবং নিজেকে সুখী মনে করে। তাই আপনি যদি সুখি হতে চান সর্বপ্রথম আপনাকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।

নিজেকে নিয়ে সুখী হোন : জীবনে আপনি যা যা পেয়েছেন বা  অর্জন করেছেন তাই নিয়ে নিজেকে সুখী থাকার চেষ্টা করুন । অহেতুক  চাহিদা থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। চাই!চাই!আরো চাই, এই ধরনের স্বভাব থাকলে তা  পরিহার করুন। কেননা এই চাই চাই স্বভাবে আপনাকে ডিপ্রেশনে ভোগাবে এবং আপনাকে  অসুখী  করার কারণ হয়ে দাঁড়াবে । তাই সব সময় চেষ্টা করুন নিজের যা আছে তাই নিয়ে নিজেকে সুখী মনে করা ।অতএব সুখী হওয়ার দ্বিতীয় গোপন রহস্য হচ্ছে নিজেই নিজেকে নিয়ে সুখী অনুভব করা । নিজেই নিজের সাথে সুখী হোন ।   Be happy with  yourself.

প্রত্যাশা কম করুন কাজ বেশি করুন : আপনি জীবনে যত কম প্রত্যাশা করবে আপনি যত বেশি সুখী হবে। তাই আপনি যদি সুখি হতে চান, আপনার অবশ্যই প্রত্যাশা কম করে বেশি করে কাজ করতে হবে । ইতিহাসখ্যাত ড্রামাটিস্ট উইলিয়াম-শেক্সপিয়ার বলেছেন-”  আমি নিজেকে সব সময় সুখী ভাবি, কারণ আমি ,কারো কাছে কোন কিছু প্রত্যাশা করি না। কারো কাছে কোন কিছু প্রত্যাশা করাটা সবসময়ই দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়” ।  তাই যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন, অন্যের কাছ থেকে কোন কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা পরিহার করতে।  তবেই আপনি নিজেকে সুখী অনুভব করতে পারবেন। 

কর্মচঞ্চল হোন : জীবনে সুখী হতে হলে কর্মচঞ্চল হওয়ার বিকল্প কিছু নেই। আপনি ব্যক্তি জীবনে যত বেশি কর্মচঞ্চল হবেন ততই আপনি সুখী হবেন। কেননা একমাত্র আপনি কাজের মাধ্যমেই আপনাকে ব্যস্ত রাখতে পারবেন এবং দুশ্চিন্তা, হতাশা সহ সবধরনের গ্লানি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন। তাছাড়া আপনি কর্মচঞ্চল হওয়ার কারণে সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের  (ঋগ্বেদঃ ১০.২২.৮ ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- “ অলস মস্তিষ্ক কু-চিন্তার সহজ শিকার” তাই সুখী হতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে।

নিজেকে সময় দিন : মার্কিন গবেষকদের মতে আপনি যদি সুখি হতে চান আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন নিজের সাথে অন্তত দশ মিনিট সময় কাটাতে হবে।যেনো আপনি নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারেন এবং নিজেকে সময় দিতে পারেন। এই দশ মিনিটের মধ্যে আপনি আপনার সারাদিনের কর্মসূচিও ঠিক করতে পারে।যা আপনার জীবনকে সহজ করে  তুলবে। সাধারণত দেখা যায়, যাদের জীবনটা গোছালো তারাই অধিকাংশ সময়ে সুখী হয়ে থাকে। সুখী হতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিজেকে সময় দিতে হবে এবং নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে । 

ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়া :  সফলতা ও ব্যর্থতা পাশাপাশি অবস্থান করে । আপনি জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে বা প্রতিটি কাজে সফল হবেন এর কোন মানে নেই। আপনি জীবনে কিছু কাজে সফল হবেন আবার  কিছু কাজে ব্যর্থ হবেন । তাই আপনাকে ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে । ব্যর্থতাকে পুঁজি করে আপনার পরবর্তী কাজ আরো ভালোভাবে সম্পাদন করতে হবে। এতে আপনি একদিকে যেমন একজন সফল মানুষ হবে, অপরদিকে আপনি সুখীও হবে।  তাই সুখী হতে হলে আপনাকে ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়া অভ্যাস করতে হবে ।

ইতিবাচক সঙ্গ যাচাই-বাছাই : বাংলা একটি কথায় আছে – সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে নরকবাস। আপনি যদি জীবনে সুখী হতে চান আপনাকে অবশ্যই সঙ্গ যাচাই-বাছাইয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনোবিজ্ঞান বলতেছে ,আপনি যার সাথে সর্বাধিক সময় অতিবাহিত করেন, তার কিছুটা প্রভাব আপনার মধ্যেও প্রভাবিত হয়। আপনি যদি ব্যক্তি জীবনে সুখী মানুষের সঙ্গ বেছে নেন, তাহলে তাদের প্রভাবে আপনারও সুখী হবার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে । সুখী হতে হলে আপনাকে অবশ্যই সুখী

মানুষের সঙ্গ নিতে হবে। 

পাপ কাজ পরিহার করুন :ইংরেজিতে একটি কথা আছে, – Religious are happy. তাই আপনি যদি সুখি হতে চান আপনাকে অবশ্যই পাপ পরিহার করতে হবে । পাপ করার কারণে আপনার মনে সর্বদা এক ধরনের অশান্তি বিরাজ করবে ।  আপনি কোন কাজেই শান্তি অনুভব করতে পারবেন না। সুখী হতে হলে আপনাকে পাপ পরিহার করতে হবে । আপনি আপনার ধর্মীয় গ্রন্থগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে পাপ থেকে দূরে থাকতে পারেন ।  সর্বোপরি উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যক্তি জীবনে সুখী হতে পারেন ।