Colorgeo.com

Disaster and Earth Science

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন

 যে কোন জাতির জন্য স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনা অতি কষ্টকর এবং আরও কষ্ট তা রক্ষা  করা। কোন মানুষই পরাধিনভাবে বেঁচে থাকতে চায় না।

তাই মানুষ তার জন্য আন্দোলন করে, যুদ্ধ করে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট ত্যাগ স্বীকার করতে হয় এবং অমূল্য জীবন বিসর্জন এর মাধ্যমে স্বাধীনতা আসতে পারে কারণ স্বার্থমগ্ন শক্তিশালী শাসকেরা সহজে কোন জাতিকে স্বাধীনতা দান করে না। বহুকষ্টে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমেই ছিনিয়ে আনতে হয়। স্বাধীনতা অর্জিত হলে সংগ্রাম শেষ হয়ে যায় না।

তখন বিজয়ী জাতির সামনে আসে স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম সংগ্রাম আরো বেশি ত্যাগ তিতিক্ষা ও শক্তি-সামর্থের প্রয়োজন হয়। কারণ স্বাধীন দেশের ভেতরে ও বাইরে শত্রুর অভাব নেই এরা সুযোগ এর সন্ধানে সর্বক্ষণ তৎপর থাকে। যেকোনো সময় সুযোগ পেলে হিংসাত্মক কার্যকলাপের মাধ্যমে স্বাধীনতা কে ধ্বংস করে দিতে পারে।

সুতরাং সমস্ত প্রতিক্রিয়াশীল মীরজাফর চরিত্রের হিংসাত্মক দৃষ্টি থেকে দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব সচেতন নিবেদিতপ্রাণ ও দেশ প্রেমিক না হলে স্বাধীনতাকে রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্বাধীনতা রক্ষা করা স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়েও কঠিন ও দুরূহ কাজ। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাইকে প্রানপন চেষ্টা করা উচিত।

 

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন: একটি বিশ্লেষণ


এই প্রবাদটি আমাদের ইতিহাস ও বর্তমান সমাজের এক গভীর সত্যকে উন্মোচন করে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে ধরনের ত্যাগ, সংগ্রাম এবং একাগ্রতা প্রয়োজন হয়, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে, একবার স্বাধীনতা অর্জিত হয়ে গেলে, তা বজায় রাখার জন্য আরও বেশি সচেতনতা, একতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রয়োজন হয়।

কেন স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন?

চ্যালেঞ্জের ধরন: স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় চ্যালেঞ্জগুলো সাধারণত স্পষ্ট এবং একক লক্ষ্যমুখী হয়। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের পর চ্যালেঞ্জগুলো বিভিন্ন রূপ ধারণ করে, যেমন:
অভ্যন্তরীণ বিভক্তি
অর্থনৈতিক চাপ
বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ
সামাজিক অসাম্য


সচেতনতার অভাব: অনেকেই স্বাধীনতাকে স্বাভাবিক বলে মনে করে এবং তার মূল্য ভুলে যায়।
সক্রিয় অংশগ্রহণের অভাব: স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ের তীব্রতা অনেক সময় স্বাধীনতা অর্জনের পর হারিয়ে যায়।
নতুন চ্যালেঞ্জের উদ্ভব: সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ উদ্ভব হয়, যা স্বাধীনতার জন্য নতুন করে লড়াই করার প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে।


স্বাধীনতা রক্ষার জন্য কী করণীয়?

সচেতনতা বৃদ্ধি: স্বাধীনতার মূল্য এবং তা হারানোর পরিণতি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
শিক্ষা: ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের গল্প শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা।
সক্রিয় অংশগ্রহণ: রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ, সামাজিক কাজে যোগদান এবং নিজের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করা।
একতা: বিভিন্ন মতামত ও দলকে একত্রিত করে স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য কাজ করা।
সতর্কতা: সম্ভাব্য হুমকির প্রতি সচেতন থাকা এবং সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা।


উপসংহার

স্বাধীনতা একটি অর্জন নয়, বরং একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি রক্ষা করার জন্য সকলের সচেতনতা, একতা এবং অবিচল প্রচেষ্টার প্রয়োজন। স্বাধীনতা হারিয়ে গেলে তা ফিরে পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই, স্বাধীনতাকে আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গণ্য করে তা রক্ষার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

 

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন: একটি বাস্তব উদাহরণ


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ:

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এক অনন্য উদাহরণ যেখানে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জনগণকে তাদের প্রাণ দিতে হয়েছিল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছিল। এই যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং অসংখ্য মানুষ নির্যাতিত হয়েছিল।

স্বাধীনতার পরের চ্যালেঞ্জ:

অর্থনৈতিক সংকট: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
রাজনৈতিক অস্থিরতা: স্বাধীনতার পর বারবার রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল।
বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ: বিভিন্ন বহিঃশক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল।
সামাজিক সমস্যা: দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অশিক্ষা এবং সামাজিক বৈষম্যের মতো সমস্যাগুলি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
স্বাধীনতা রক্ষার জন্য কী করা হয়েছিল:

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ: স্বাধীনতার চেতনাকে জনগণের মধ্যে প্রচার করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল।
জাতীয় সংহতি গড়ে তোলা: সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে একত্রিত করে জাতীয় সংহতি গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন: দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা: একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল।

বাংলাদেশের উদাহরণ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, স্বাধীনতা অর্জন করা একটি বড় অর্জন হলেও তা রক্ষা করা আরও বড় চ্যালেঞ্জ। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য জনগণের সচেতনতা, একতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

অনেক গুলো ভাবসম্প্রসারণ