Colorgeo.com

Disaster and Earth Science

মহামারী সংকলন-১ চীনের প্রাগৈতিহাসিক মহামারী

Spread the love

মহামারী সংকলন-১ চীনের প্রাগৈতিহাসিক মহামারী

উত্তর-পূর্ব চীনের স্বায়ত্তশাসিত দীর্ঘ অঞ্চল অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া। অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ার প্রাচীনতম ৫০০০ বছরের পুরনো ছোট গ্রাম হামিন মানহা, যা এখন সহস্রাব্দের জন্য মৃত। অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সময়কার একটি অঞ্চলের মহামারী কথন এটি। ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে এই অদ্ভুত নিউলিথিক সাইটটি আবিষ্কার হয়েছিল।

মাত্র ২৯ টি বাড়ির একটি ছোট প্রাগৈতিহাসিক গ্রাম । যেখানে ২০০ বর্গফুট কুড়ে ঘরের মধ্যে ১০০ টি কঙ্কাল পাওয়া যায়।কতজনই বা থাকতে পারে ২৯ টি বাড়ি বিশিষ্ট একটি গ্রামে! আর যদি ১০০ বাসিন্দা মারা যায় তবে কতজন বাকি ছিল? “ কঙ্কালগুলো দেখে মনে হচ্ছিলো খুব তাড়াহুড়ো করে একটির উপর একটি লাশ স্তূপ করা হয়েছিল।”

২০১৮ সালের উক্ত সাইটের প্রত্নতাত্ত্বিক কাগজে প্রকাশ করা হয়।তবে কিভাবে মারা গেল সেখানকার জনপদ? নৃতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তারা মারাত্মক সংক্রমনে মারা গিয়েছিল , মহামারী এতটাই বাজে ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে ভয়ে তারা মৃতদেহের সৎকারের ব্যবস্থাও করেনি কবর দেওয়ার আগে।তারা তাড়াতাড়ি লাশগুলোকে জ্বালিয়ে দিয়ে চলে যায় এবং কখনো আর এইস্থানে ফিরে আসেনি। আর গ্রামটি সময়ের সাথে সাথে হয়ে যায় – পরিত্যক্ত, বিচ্ছিন্ন এবং অনন্তকালের জন্য জনশূন্য।

মহামারী সংকলন
মহামারী সংকলন-1

চীনের জিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক যারা হামিন মনহা নিয়ে গবেষনা করছিলেন তারা আরও বলেন, মহামারীটি নিয়ে গ্রামবাসী এতটাই ভয়ে ছিলেন যে তারা মৃতদেহগুলিসহ কুড়ে ঘরটিতে আগুন দিয়ে দেন এবং এতে কুটিরের কুচকানো ছাদ ভেঙ্গে গিয়েছিল।গবেষকরা জানেন না যে রোগটি কি হতে পারে – তবে বেশিরভাগেরই ধারণা এটি এমন একটি সংক্রামক যেটা কিনা অতি দ্রুত একটা জনপদের গণ শ্মশানে পরিণত করেছিল। এমনটা কেবল ভাইরাসজনিত সংক্রামকের দ্বারাই সম্ভব।

ওই অঞ্চলের আরও কিছু নিউলিথিক সাইট থেকে একই সময়কালের মধ্যেই কিছু গণসমাধি , পরিত্যক্ত সাইট ও মহামারীর চিহ্ন পাওয়া যায়। হামিন মানহার উক্ত মহামারীটি পৃথিবীর তখনকার উষ্ণজলবায়ুর সময় সংগঠিত হয়েছিল এবং চার সহস্রাধিককাল ধরে স্থায়ী ছিল। এখনও পর্যন্ত জানা সবচেয়ে পুরাতন মহামারীর ঘটনা এটি।আমাদের বর্তমান পৃথিবীর জলবায়ু এখন আগের চেয়েও উষ্ণতম পর্যায়ে আছে। আর চলছে মহামারী কোভিড-১৯ এর আক্রমণ । যার সূচনাও হয়েছে চীনেই।