সন্তানের প্রতি পিতা মাতা কেমন ব্যবহার করবে?
সকালে ঘুম থেকে উঠলেই ভালবেসে চুমু দিন।
স্কুল থেকে ফিরলে তাকে চুমু দিন।
রাতে শোবার সময় তাকে চুমু দিন।
এখন প্রশ্ন হলো এতে কি লাভ হবে?
যারা বুদ্ধিমান তারা হয়তো ইতিমধ্যেই বুঝে গিয়েছেন। প্রতিদিন সন্তানকে ওই তিন সময়ে আদর করলে সন্তান আপনার কথা অনুসরণ করবে। আপনকে ভালবাসবে। আপনার মনের মত করে ওরা স্বাধীন ভাবে বড় হবে। মা বাবার ভালোবাসা সন্তানের জন্য এক বিরাট শক্তি। আপনার একটা কথায় ও সমস্ত কঠিন কাজ সমাধা করে দিতে পারবে, যদি আপনার প্রতি তার বিশ্বাস ভালোবাসা আরো গভীর হ্য়।
তাই এই তিনটি কাজ করুন। আপনার সন্তান হবে আপনার শক্তি। আপনার অহংকার। বিশ্বাস করুন সে হবে দিকবিজয়ী।
ইতিহাসে এমন বহু প্রমাণ রয়েছে মায়ের প্রতি ভালোবাসা যে কত শক্তি শালী সেটা বোঝা যায়। রাজা চন্দ্র গুপ্ত তার মায়ের ভালবাসায় বিশ্বের রাজা হতে পেরেছিল। ঋষি চাণক্য তাকে ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন এবং মায়ের প্রতি ভালবাসা ও কর্তব্য দেখিয়ে চন্দ্রগুপ্তকে সামান্য ক্রীতদাস থেকে রাজের রাজা বানিয়েছিল। তাই আমিও আপনার সন্তানকে ভালবাসুন । আপনাকে বিশ্বাস করাতে শেখান। দেখবেন আপনার একটি কথায় আপনার সন্তান কিভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে।
সন্তানের প্রতি পিতা মাতা কিসে উৎসাহ দিবে বা সন্তানকে কোন কাজে উৎসাহ দিবেন?
অবশ্যই এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। মনে রাখবেন প্রতিটি মানুষ আলাদা আলাদা ভাবে আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। তাই আপনার সন্তান ও আপনার থেকে আলাদা । যদিও এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। তবে একেবারে আলাদা নয়। কিন্তু আলাদা। তাই আপনার মনের অতৃপ্ত বাসনা আপনার সন্তানের উপর চাপিয়ে দিবেন না। ওর নিজের ভালোলাগার কাজ খুঁজে বের করুন এবং তাতে আরও উৎসাহ দিন। দেখবেন আপনার প্রত্যাশার থেকেও ও বেশি দ্রুত উন্নতি করছে।
হতে পারে আনার সন্তান ছবি আঁকতে পছন্দ করে তবে আপনার সন্তানকে ছবি আঁকতে সহায়তা করুন। হয়ত আপনার সুপ্ত ইচ্ছা ছিল আপনি যে আপনি ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন কিন্তু কোন কারণে হতে পারেননি তাই আপনি চান যে আপনার সন্তান ডাক্তার হয়ে আপনার মনো বাসনা পূরণ করুক। না এটা ভুল ধারনা। এতে কোনটাই হবে না। না হবে আপনার সন্তান ডাক্তার, না হবে ওর নিজের পছন্দ বিষয়ে যোগ্য। এতে আপনার সন্তানের ভবিষ্যতে কেরিয়ার গড়াতে বাঁধা গ্রস্থ করবে । তাই ওকে ওর মত মত করে কাজ করতে দিন। সে সফল হবেই।
অনেক প্রমাণ রয়েছে মনের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে মধ্য বয়সে অনেক সন্তান তাদের কেরিয়ার পরিবর্তন করেছে। তাই এখন ই ভাবুন।
আপনার সন্তানকে ভাল বাসুন প্রতিদিন তিন বার সকাল দুপুর রাত। চুমু দিন । ভালবাসা দিন। স্কুল থেকে বাসায় ফিরলে জড়িয়ে ধরুন স্কুলের কি কি করলো সে সব শুনুন। দুজনে ভাল মন্দ শেয়ার করুন। দেখবেন আপনার জীবনে ও উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে ধরা দিবে।
ভারতের থ্রি ইডিয়ট মুভিতে আমার এই কথাটাই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলা যায় আমিই ঐ মুভি থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমার মেয়ে ছবি আঁকতে পছন্দ করে । আমি দেখেছি ওকে না বললেও ও ছবি আঁকে এবং ভাল করে আঁকা শিখেছে। এখন আমাদের কর্তব্য হল ওকে লালন পালন করা ওর পছন্দকে গুরুত্ব দেয়া এবং ছবি আঁকতে সমস্ত সুযোগ সুবিধা তৈরি করে দেয়া।
আপনি কি আপনার সন্তানকে স্কুল থেকে ফিরলে জড়িয়ে ধরেন? ভাল মন্দ কথা শেয়ার করেন? যদি করে থাকেন তবে আপনি যথার্থ কাজ করে চলেছেন। আপনার সন্তান যোগ্য হয়ে উঠবে। বর্তমানে অনেক মা বাবা তাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত কারণ তারা অল্প বয়সে মোবাইল ডিভাইস নিয়ে খেলা করে গেম দেখতে পছন্দ করে।
বর্তমান আধুনিক যুগে এটা বাঁধা দেয়ার সুযোগ নাই। তবে আপনারা আপনার সন্তান কি কি দেখে কোন বিষয়ে তার আগ্রহ মোবাইল ডিভাইসে কি কি ভিডিও দেখে তা মাঝে মাঝে পরখ করতে পারেন। যাতে ভুল বা অপ্রত্যাশিত কোন কিছু তে আসক্ত না হয়ে যায়। সেদিকে খেয়াল রাখতে পারেন। আমাদের বাংলাদেশে শিশুদের জন্য ইন্টারনেট এ ফিল্টারিং এর ব্যবস্থা নাই। এটা একটা প্রযুক্তির দুর্বলতা বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদের । উন্নত বিশ্বে যেমন জাপানে শিশুদের জন্য ইন্টারনেট এ ফিল্টারিং এর ব্যবস্থা রয়েছে তারা ইচ্ছা করলেও খারাপ কিছু দেখতে পারবে না ।
তাই বাংলাদেশের জন্য নিজেরদের কে সচেতন হতে হবে।
More Stories
Bangla Bani by Helal Hafez Illustration
অনুপ্রেরণামূলক উক্তি
সেরা উক্তি ক্যাপশন বাংলা 100+