সুরা ফাতিহা সকল রোগের শিফা
হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, সুরা ফাতিহা সকল রোগের শিফা। তবে মুফাস্সীরগণ এই আমলের ওয়াদা পূরণের জন্য দুইটি শর্ত আরোপ করছেনঃ
(১) যেই ব্যাক্তি এই সুরার দ্বারা আল্লাহ্ থেকে রোগমুক্তি নিবেন তার এই সুরার ওপর দৃঢ় বিশ্বাস থাকতে হবে।
(২) যিনি ফুঁক দিবেন ঐ মুখটি আল্লাহর নিকট প্রিয় হতে হবে।
এই দুইটি শর্ত যদি পূর্ণ হয় তবে সুরা ফাতিহার দ্বারা ইনশাআল্লাহ রোগমুক্তি হবে
উদাহরণস্বরুপ একটি হাদীস, যেখানে সাহাবা আজমাঈন (রাঃ) আমল রয়েছেঃ-
আবূ নু’মান (রহঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন। তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাদের মেহমান হতে চাইলেন। কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।
সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার (আরোগ্যর) জন্য সব ধরনের চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাদের কেউ বলল, এ কাফেলা যারা এখানে অবতরন করেছে তাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত। সম্ভবত, তাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে।
ওরা তাদের নিকট গেল এবং বলল, হে যাত্রীদল। আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না। তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি?
তাদের (সাহাবীদের) একজন বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করতে পারি। আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি। কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করবো না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল।
তারপর তিনি গিয়ে আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে (এমন ভাবে নিরাময় হল) যেন বন্ধন থেকে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না। (বর্ণনাকারী বলেন)তারপর তারা তাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল।
সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়- ফুঁক করেছিলেন, তিনি বললেন এটা করবো না, যে পর্যন্ত না আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কি হুকুম দেন।
তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দূয়া? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এবং শো’বা (রহঃ) বলেন, আমার নিকট আবূ বিশর (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আমি মুতাওয়াক্কিল (রহঃ) থেকে এ হাদীস শুনেছি।- (বুখারীঃ ২১৩২)