ম্যাগমা ও লাভা কাকে বলে?
ভূগর্ভস্থ গলিত পাথর কে ম্যাগমা বলা হয় আর গলিত লাভা যখন ভু পৃষ্ঠে চলে আসে তাখন তাকে লাভা বলে।
ম্যাগমা একটি শব্দ যা ভূগর্ভের নিচে অবস্থিত এটি পৃথিবীর ম্যান্টেল একটি গরম, প্রবাহমান পদার্থ। ম্যাগমার অনেক ধরণের ধাতু, গ্যাস এবং পদার্থ থেকে গঠিত হতে পারে। ম্যাগমা সাধারণত সিলিকা দ্বারা প্রধানত সমৃদ্ধ, তবে এটি আরও অন্যান্য উপাদান যেমন আলুমিনিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম সহ অন্যান্য উপাদানগুলি ধারণ করতে পারে।
ম্যাগমা যখন পৃথিবীর পৃষ্ঠে উঠে আসে, তখন তা লাভা নামে পরিচিত হয়। লাভা হল ম্যাগমা যা পৃথিবীর পৃষ্ঠে বা সমুদ্রতলে উঠে এসেছে। লাভা যখন শীতল হয়ে যায় ভূপৃষ্ঠে এটি পাথরে পরিণত হয় এবং ম্যাগমা হিসেবে পুনরায় ভূপৃষ্ঠ থেকে প্লেট তেক্তনিকের সরণের সাহায্যে ভূগর্ভে গিয়ে জমা হতে পারে।
ম্যাগমা ও লাভা সম্পর্কিত গবেষণা সমৃদ্ধ জ্ঞান লাভ করলে আমরা ভুগর্ভস্থ জ্বালানির প্রক্রিয়াগুলি, কিভাবে এটা ভু পৃষ্ঠে প্রকটমান কিংবা পাথরের গঠন, এবং পৃথিবীর অন্তর্গত প্রক্রিয়ার বিষয়ে জ্ঞান প্রাপ্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভূস্থলের চেয়ে ভু গর্ভের ম্যাগমার রাসায়নিক সংক্রমণ, তাপমাত্রা এবং ঘনত্ব নির্ধারণ করা হয়।
ম্যাগমা ও লাভা মধ্যে প্রধান পার্থক্যটি তাদের অবস্থান এবং অবস্থা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে।
ম্যাগমা:
ম্যাগমা হল তাপযুক্ত তরল পাথর পদার্থ যা পৃথিবীর নিচে পাওয়া হয়, সাধারণত পৃথিবীর ম্যানটেল বা মধ্য খণ্ডে। ম্যাগমা একটি গরম, ও তরল অবস্থায় থাকে এবং সিলিকেট খনিজ, গ্যাস এবং দ্রব্যাদি রাসায়নিক উপাদান থেকে গঠিত।
ম্যাগমা হল ঠাণ্ডা পাথর যা চাপের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়। সমুদ্রের অবস্থান এবং উচ্চ তাপমাত্রা এবং চাপের কারণে তৈরি হয়। এটি আদিকালের পাথর এবং চাপের পরিমাণ উপর নির্ভর করে একটি বিশাল খণ্ডে ধরে রাখে। ম্যাগমা সাধারণত সিলিকায় সমৃদ্ধ, তবে এলুমিনিয়াম, লোহা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম এমন অন্যান্য উপাদান ধারণ করতে পারে। ম্যাগমা ভূমির নিচে থাকে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠে প্রকাশ্য হয় না।
লাভা:
লাভা হল ম্যাগমা যা আগ্নেয়গিরি ক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছায়। এটি আগ্নেয়গিরি প্রস্তাবনা সময় পৃষ্ঠে বা সমুদ্রে পৌঁছানো হয় তাপযুক্ত পাথর পদার্থ। লাভা পাহাড়ের পাশে প্রবাহিত হতে পারে অথবা জ্বলানি আকাশে প্রস্ফুটিত হতে পারে।
লাভা পৃষ্ঠে পৌঁছালে ঠাণ্ডা হয় এবং পদার্থ ঠাণ্ডা হয়ে স্থির হয়। শীতল হওয়ার পথটি বিভিন্ন প্রকারের আগ্নিগল্প যেমন ব্যাসাল্ট, অ্যান্ডেসাইট বা রাইওলাইটের মতো প্রকাশ্য। লাভা বাস্তবে পরিবেশ ও পরিবেশের সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।
একটি টেবিল যা ম্যাগমা ও লাভা এর মধ্যে পার্থক্যগুলি উল্লেখ করছে:
ম্যাগমা | লাভা | |
---|---|---|
অবস্থান | পৃথিবীর নিচে পাওয়া যায় | পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছে যায় |
অবস্থা | পিঘলিত (Viscous), প্রবাহমান | পিঘলিত, প্রবাহমান |
সংঘটন | উচ্চ তাপমাত্রা এবং চাপের কারণে ঠাণ্ডা পাথরের পিঘলানোর মাধ্যমে উৎপন্ন হয় | ম্যাগমা পৃষ্ঠে উঠে আসতে গেলে প্রস্তুত হয় লাভা |
অবয়ব | সিলিকেট খনিজ, গ্যাস, দ্রব্য রাসায়নিক সংকল্প | সিলিকেট খনিজ, গ্যাস, দ্রব্য রাসায়নিক সংকল্প |
সমৃদ্ধতা | প্রকৃত পাথর এবং পিঘলানোর মাত্রা উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সংকল্প সম্ভব | পিঘলানোর মাধ্যমে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন প্রকারের আগ্নিগল্প যেমন ব্যাসাল্ট, অ্যান্ডেসাইট, বা রাইওলাইট |
সিলিকা পরিমাণ | সাধারণত সিলিকায় সমৃদ্ধ | সাধারণত সিলিকায় সমৃদ্ধ |
প্রদর্শনী | পৃথিবীর অভ্যন্তরে থাকে | পৃথিবীর পৃষ্ঠে প্রকাশ্য |
শীতল হওয়া | শীতল হয়ে ঠাঁইয়ে যায় পাথরের অভ্যন্তরে | শীতল হয়ে ঠাঁইয়ে যায় পৃথিবীর পৃষ্ঠে |
ফলাফল | বিভিন্ন ধরণের এগ্নেয় শিলা তৈরি হয়। | শীতল হওয়ার পথে বিভিন্ন ধরণের এগ্নেয় শিলা তৈরি হতে পারে |
ম্যাগমা ও লাভা কয় প্রকার ও কী কী?
ম্যাগমা কয় প্রকার ও কী কী?
ম্যাগমা পাথর পদার্থের বিভিন্ন প্রকার থাকতে পারে এবং এগুলি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়। ম্যাগমার প্রকার গুলো নিম্নলিখিত হতে পারে:
-
ব্যাসাল্টিক ম্যাগমা: এটি সাধারণত প্রাথমিক সমৃদ্ধ সিলিকা ধাতুয় ব্যাসে পরিচিত। এই প্রকারের ম্যাগমা সাধারণত প্রকাশ হয় বিভিন্ন মাধ্যমে, যেমন মারমার বা উঠানো আগ্নেয়গিরি। ব্যাসাল্টিক ম্যাগমা থেকে ব্যাসাল্টিক পাথর উত্পন্ন হয়।
-
এনডেসাইটিক ম্যাগমা: এটি সিলিকার পরিমাণে ব্যাসাল্টিক ম্যাগমার চেয়ে বেশি সিলিকা ধাতুয় ব্যবহার করে। এনডেসাইটিক ম্যাগমা থেকে এনডেসাইটিক পাথর গঠন হয়।
-
রাইওলাইটিক ম্যাগমা: এটি সর্বাধিক সিলিকা ধাতু ব্যবহার করে এবং সম্পূর্ণ মডিফাইড সিলিকার পরিমাণ থাকে। রাইওলাইটিক ম্যাগমা থেকে রাইওলাইটিক পাথর উত্পন্ন হয়, যা সম্পূর্ণ পিঘলে বিচ্ছিন্ন ও অনুবর্তিত হয়।
-
দায়রিটিক ম্যাগমা: এটি অতিরিক্ত আইরন এবং ম্যাগনেসিয়াম ধাতু ধারণ করে এবং সিলিকারের পরিমাণ কম থাকে। দায়রিটিক ম্যাগমা থেকে দায়রিটিক পাথর উত্পন্ন হয়।
-
গ্রানাইটিক ম্যাগমা: এটি বেশিরভাগ সিলিকার ধাতু ধারণ করে এবং আইরন ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ কম। গ্রানাইটিক ম্যাগমা থেকে গ্রানাইটিক পাথর গঠন হয়।
লাভা কয় প্রকার ও কী কী?
লাভা প্রকারের বিষয়ে সাধারণত তিনটি বিভিন্ন ধাতুতে তৈরি হতে পারে এবং তাদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকে। নিম্নলিখিত হল লাভার প্রধান প্রকার:
-
ব্যাসাল্টিক লাভা: এটি সাধারণত ব্যাসাল্টিক ম্যাগমার উঠানো আগ্নেয়গিরি দ্বারা প্রকাশিত হয়। ব্যাসাল্টিক লাভা ঠাণ্ডা হয়ে ঠাণ্ডা পাথরে পরিণত হয় এবং ধীরে ধীরে প্রস্তুত হয়। এটি অধিকাংশই প্রবাহী হয় এবং ভূমির উপর চলে যায়।
-
পিআইকি লাভা: পিআইকি লাভা সাধারণত এনডেসাইটিক ম্যাগমার দ্বারা উত্পন্ন হয়। এটি ব্যাসাল্টিক লাভার থেকে বেশি ভালভাবে স্থির হয় এবং পাথর গঠনে অনুপস্থিত গ্র্যান্যুল ধাতুগুলির উপস্থিতি থাকে।
-
এক্সপ্লোসিভ লাভা: এই প্রকারের লাভা সাধারণত রাইওলাইটিক ম্যাগমার দ্বারা প্রকাশিত হয়। এটি প্রস্ফুটিত হয় এবং বিভিন্ন অক্সিজেন বুমি ও বিষফোটনের সহিত আকাশে উড়ে যায়। এই প্রকারের লাভার মধ্যে বিভিন্ন অণুবীক্ষণ ও গ্র্যান্যুল ধাতুগুলির উপস্থিতি থাকে।
ম্যাগমা ও লাভা দুটি পদার্থ পৃথিবীর ভিতর থেকে বের হওয়া ও প্রকাশিত হওয়া সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন। ম্যাগমা হল পৃথিবীর আবশ্যক গভীরতায় থাকা গরম ও তরল পদার্থ। যখন এটি পৃথিবীর উপর প্রকাশিত হয় এবং তাপমাত্রা কমে যায়, তখন এটি লাভা হয়ে গেছে।
লাভা বলতে আগ্নেয়গিরি দ্বারা প্রকাশিত পাথর বোঝানো হয়। ম্যাগমা এবং লাভা একে অপরের থেকে আদিকাল এবং প্রাথমিক পাথরের অবশিষ্টগুলোর পরিণতি এবং গঠনের সাথে সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন।