Colorgeo

Classroom of Money and Wisdom for Earth Science

আবেগ কি আমাদেরকে ব্যক্তিত্ব নির্দেশ করে

Spread the love

আবেগ কি আমাদেরকে ব্যক্তিত্ব নির্দেশ করে

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই লক্ষ্য করি যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব । সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এই বিষয়ে অনেক খবর প্রকাশিত হয়। দ্বন্দ্ব কখন এমন পর্যায়ে পৌছায় যে হত্যা করে এঁকে অপরকে।

কেন এমন হয় নিশ্চয়ই আপনাদের কখন ভেবেছেন। কারণ যখন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হয় তখন তাদের মেজাজ অনেক সময় ই ঠিক থাকে না। তবে কিছুক্ষণ পর বা কিছু দিন পর ঠিক হয়ে যায় । হয়ত কারো একটু বেশি সময় লাগে কারো একটু কম সময় লাগে। ঠিক ই স্বামী স্ত্রী আবার তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।

 

এক্ষেত্রে আমাদের মনের অবস্থা হয়ত দুজনের একই রকম থাকে কিন্তু আচরণ গত পার্থক্য থাকে।

বিদেশের স্কুলে বাচ্চাদের ব্যক্তিত্ব বোঝার জন্য একটি টেস্ট রয়েছে কিন্তু তাদের সেই টেস্ট কি প্রকৃত তথ্য দেয় ? কারণ কিছু ছাত্র ছাত্রী তাদের জীবনের হতাশার মধ্যে দিয়ে সময় অতিবাহিত করতে পারে। পরবর্তীতে সেই হতাশা সে কাটিয়ে উঠতে পারবে। তাই গৃহীত ব্যক্তিত্ব নির্ণয় সঠিক হয় না।

 

জে.ডেভিসন দেখিয়েছেন যে আবেগ আমাদের জীবনে আমাদের আচরণ এবং ব্যক্তিত্বে বিরাট প্রভাব ফেলে। যদি আমারা মাপ কাঠিতে মাপতে যাই তবে এটাকে ছয় ভাগে ভাগ করতে পারি। যার প্রতিটাই আমাদের ব্যক্তিত্ব নির্দেশ করবে।

 

চলুন এখন জেনে নেয়া যাক আসলে সেগুলো কি কি । আমারা কিভাবে আমাদের আচরণ ও ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন করতে পারি।

১। সহনশীলতাঃ

সহনশীলতা নির্দেশ করে আমরা কত সহজে কোন একটি অপ্রত্যাশিত দ্বন্ধ থেকে আবার সু সম্পর্কে ফিরে আসতে পারি । সাধারণত স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে এটা বেশি মানাসই।

২। দৃষ্টিভঙ্গিঃ

এটা নির্দেশ করে আমি আপনি কোন একটি ঘটনা বা আমাদের জীবনের প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোকে ইতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গিতে দেখি না নেতি বাচক দৃষ্টিতে দেখি।

এখন প্রশ্ন হতে পারে ইতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গি কাকে বলে বা আর নেতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গি কাকে বলে। একটি উদাহরণ দিলে বোঝা যাবে।

 

ধরুন আপনাকে কেউ বলল তিন ধরনের মানুষের সাথে মিশতে নেই ধনী, জ্ঞানী এবং রূপবান। আমি যদি এটা কে স্বীকার করি তবে আমি নেতিবাচক দৃষ্টিতে রয়েছি।

আর যদি আমি ভাবি যে ধনী, জ্ঞানী ও রূপবান দের সাথে মিশলে আমার ধনবান হবার উপায় বের হতে পারে, জ্ঞানী হবার সুযোগ সৃষ্টি হবে, আর রূপের কলা ও রূপ লাবণ্য ধরে রাখার কৌশল জানতে পারবো তবে তা হবে ইতি বাচক।

এখন প্রশ্ন হল কেউ যে কোন বিষয় কে ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেকোনো দৃষ্টিতেই ভাবতে পারে। এই

ভাবনা নির্ভর করছে ব্যক্তির মানসিক অবস্থার উপর।

 

৩। সামাজিক অন্তর্দৃষ্টিঃ

আমারা আমাদের চারিধারের মানুষের ব্যবহার গুলোকে কোন দৃষ্টিতে এবং কিভাবে গ্রহণ করব এটা এই শ্রেণীতে পড়ে।

৪। আত্ম সচেতনতাঃ

আপনি আপনার নিজের শরীর সম্পর্কে কতটুকু সচেতন।

৫। বিষয় সংবেদনশীলতাঃ

কোন একটি বিষয়কে আপনি কিভাবে দেখেন এবং সেই প্রেক্ষিতে কেমন আচরণ করবেন।

৬। মনোযোগঃ

এটা একটি সক্ষমতা যে আপনি কত ক্ষণ কোন একটি বিষয়ে মনযোগী থাকবেন।

 

প্রকৃত পক্ষে আবেগের বিভিন্ন মাত্রাই আমাদের ব্যক্তিত্ব , ভাব, ও আমাদের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।

আবেগ কি আমাদেরকে ব্যক্তিত্ব নির্দেশ করে

আমাদের আবেগের মাত্রাই আমদের বৈশিষ্ট্য এটাই আমাদের ব্যক্তিত্ব।

যেমন আপনি যদি অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হন তবে আপনি কম মনযোগী হবেন এবং আত্ম সচেতনতার ঘাটটি থাকতে পারে।

এই আবেগ গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আপনি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং সুখী স্বাচ্ছন্দ্যের দাম্পত্য জীবনে এগিয়ে যেতে পারেন।

কথায় বলে আবেগ দিয়ে জীবন চলে না কথাটা একেবারে বাস্তব প্রকৃতপক্ষে জীবনকে উপভোগ করতে হলে আবেগের সঠিক সমন্বয় দরকার।  ইংরেজিতে একটি কথা রয়েছে emotional intelligence অর্থাৎ আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা।

আবেগ

আপনি আপনার অফিসে যদি কোন একটি অনিয়ম অথবা আপনার পছন্দ নয় এমন কিছু করতে দেখেন কোন অফিসারকে তখন আপনি যদি আপনার মেজাজ হারিয়ে ফেলেন । তবে সেই পরিবেশে যত প্রতিকূল পরিস্থিতি আসুক না কেন নিয়ন্ত্রণ করে মেজাজ হারালে আপনার ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব পড়বে এটা সর্বদা মাথায় রাখতে হবে। হয়তো আপনি ভাবছেন যে আমি সঠিক পথে রয়েছি প্রতিবাদ করেছি কিন্তু প্রতিবাদ এবং অন্যায়ের মধ্যে সামান্যতম পার্থক্য রয়েছে। আপনি যখনই বেশি পরিমাণে কঠোর আচরণ করবেন অনেক সময়ই তা অন্যায়ের পর্যায়ে চলে যায় আর এটা একমাত্র মেজাজ হারানোর জন্যই দায়ী হতে পারে।

একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়।  হয়তো কেউ আপনাকে আপনার নামে কোন বিষয়ে মিথ্যা দোষারোপ করেছে । আপনি প্রতিরোধ করতে গিয়ে তার সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন এবং একটি পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে তার গায়ে আঘাত করলেন তখন হয়তো আপনি বলবেন যে সে কেন আমার সম্বন্ধে আজেবাজে কথা বলল কিন্তু আপনার মেজাজ হারানোর কারণে আপনি তাকে যে আঘাত করেছেন শারীরিক আঘাত।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলেছে যে অন্যায় এবং প্রতিশোধের মধ্যে সামান্যতম পার্থক্য রয়েছে সেটা উপলব্ধি করাই হলো আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ।