Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাঁচটি ঝড় Storm

Spread the love

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাঁচটি ঝড় Storm

ঝড়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ Storm. ঝড় একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ । আমরা জানি যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত । প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত কোন প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়নি  । প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমূহের মধ্যে অন্যতম ভয়ঙ্কর একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নাম ঝড়।  এটি পরিবেশের উপর ভয়ঙ্কর বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি করে। যেমনঃ বিদ্যুতচমক, তুষারপা্‌ শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদিজ।ঝড় সাধারণত বায়ুচাপ জনিত কারণে হয়ে থাকে। এটি আবহাওয়ার উপর কঠোর প্রভাব ফেলে ।

ঝড়ের নির্দিষ্ট কোন প্রকারভেদ নেই, অনেক প্রকার হয়ে থাকে।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঝড় হলো:

১।  বরফ ঝড়

২।প্রবল তুষার ঝড়

৩।তুষার ঝড়

৪।সামুদ্রিক ঝড়

৫।অগ্নি ঝড়

৬।বায়ু ঝড

৭।বজ্রঝড়

.৮।গ্রীষ্মপ্রধান ঘুর্ণিঝড় 

৯।ঘূর্ণিঝড়

 আজ আমরা পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং বিধ্বংসী ঝড় (storm) সম্পর্কে জানব। 

Storm নার্গিস মিয়ানমার ( ২০০৮)

লুঙ্গি,ফুঙ্গী আর প্যাগোডা এই তিন নিয়ে মিয়ানমার ।বৌদ্ধ অধ্যুষিত দেশ মিয়ানমার ।মিয়ানমারের পাহাড়-পর্বত এবং  এর  অপরূপ প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সকলকে বিমোহিত করে রাখে ।প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক মিয়ানমার ভ্রমণ করেন । আমরা জানি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ঘূর্ণিঝড় নার্গিস একটি অভিশাপের নাম । এই অভিশপ্ত নার্গিস ২০০৮ সালের মে মাসে মিয়ানমারে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় । নার্গিসের প্রভাব এতটাই বেশি ছিলো যে,ঝড় পরবর্তী বেশ কিছুদিন মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল । যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল। এতে প্রাণ হারান প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ ।এবং সরকারি হিসাব মতে , ৪ লাখ বা ৫ লাখ ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় ।যা মিয়ানমারের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়  হিসেবে বিবেচিত করা হয় । 

Storm in বাংলাদেশ (১৯৯১) 

পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যে  ভরপুর বাংলাদেশ । প্রাকৃতিক রুপ-বৈচিত্র সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ও  বৈচিত্রতা  এখানের লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোর মধ্যে ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় অন্যতম । এই ঝড়ের গতিবেগ এতটা ভয়ঙ্কর ছিল যে প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে উপকূলে আঘাত হেনেছিল এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ৬০ মিটার উঁচুতে ।এতে প্রাণ হারান বাংলাদেশের উপকূল উপকূলীয় অঞ্চলের অন্তত ১লাখ ৪০ হাজারেরও  বেশি মানুষ ।স্বাধীনতা পরবর্তী এই ঝড়কে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঝড় হিসেবে মনে করা হয় ।ঝড়ে  নিখোঁজদের মধ্যে অনেকেই তাদের পরিবারে ফিরে পায়নি।দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পরবর্তীতে তাদের কোনো সন্ধান ও পাওয়া যায়নি। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য তৎকালীন সরকার বিডিআরের(বর্তমান সেনাবাহিনী) সহায়তা নিয়েছিলেন ।

দ্য গ্রেট বাকেরগঞ্জStorm ,সাইক্লোন  বাংলাদেশ ১৮৭৬)

বাংলা তখন ব্রিটিশ শাসন। ব্রিটিশদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বাঙালিরা যখন স্বাধীনতার জন্য মুখিয়ে ছিল ,সে সময় তৎকালীন বাকেরগঞ্জ( বর্তমান বরিশাল)আঘাত হানে বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাইক্লোন ।যা ইতিহাসে দ্য গ্রেট বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন নামে পরিচিত।এই ঝড় এতটাই ভয়াবহ হয়েছিল যে এতে মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান ও  জানা যায়নি । তবে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকদের মতে, এতে প্রায় প্রাণ হারিয়েছিল  প্রায় 2 লাখ মানুষ।

নিনা টাইফুন চীন Storm (১৯৭৫)

প্রযুক্তিগত উন্নতিতে চীন এখন পুরো পৃথিবীকে শাসন করতেছে।  তাদের সমকক্ষ এখনো পর্যন্ত সৃষ্টি হয়নি ।চাইনিজদের কাছে ঘূর্ণিঝড় একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা । চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড়টি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ৩১ শে জুলাই । অন্যান্য ঝড়ের চেয়ে এই ঝড়ে বাতাসের বেগ সবচেয়ে বেশি ছিল।এতে প্রাণ হারান প্রায় ২  লাখ ৩১ হাজার চীনা নাগরিক । এই ঝড়ে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চীনের অর্থনীতিতে  ও বিরূপ প্রভাবের কারণ ছিল এই নিনা টাইফুন । চীনের পরবর্তী এক বছরের অর্থনৈতিক সূচক দেখলে যায় যা  স্পষ্টভাবে বোঝা যায় । 

১৮৮১ সাল হাইফোং  ভিয়েতনাম 

ভিয়েতনামকে বলা হয় লাজুক মানুষের দেশ। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদনকারী দেশ ভিয়েতনামে ১৮৮১ সালে আঘাত হানে, ভিয়েতনামের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর  ঝড়।  এই ঘূর্ণিঝড়কে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় । হতাহত  ও ক্ষয়-ক্ষতির দিক দিয়েও এটিই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড়। এতে প্রাণ হারান প্রায় তিন লাখ মানুষ। এটিই এখন পর্যন্ত কোন ঝড়ে  মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড winter storm warning ।