বিয়ে
ফাতেমা মোস্তারিন
——————-
বয়স কেবল তখন ১১ কি ১২
বিয়ের জন্য সবাই পাগল।
স্কুলে গেছি, ফিরে দেখি ঘটক
আমার জন্য বিয়ে সমন্ধ এনেছে।
বললাম,
না, বাল্যবিবাহ করব না আমি।
এভাবেই ১৮ হওয়া পর্যন্ত অনেক লড়াই,
অবশেষে আমি ১৮।
জানেন?
যখন ১১ কি ১২ ছিলাম
তখন দোকানি, কেউ পুলিশ
কেউ বা তখন ৩০ এর পাত্র ছিল।
যখন ১৮ পার হলাম
তখন মুক্ত চেতনায় বড় হলাম।
বিয়ে নয় এখন সেই মানুষগুলোকে নিয়ে থাকি
যারা আমায় জন্ম দিয়েছে।
এভাবেই লোকের মুখ বন্ধ করলাম
কিন্তু, আজ যখন মনে হলো
বাধা পড়ার দিন বুঝি এলো
তখন নাকি আর বর নাই।
মেয়ে মোটা, কালো, চাকরি নাই
এম.এ পাস।
ছেলে তো ম্যট্রিক পাস
এই ছেলে হবে?
এখন বিয়ের জন্য চাকরি, টাকা এসব লাগে
এম.এ পাসের জন্য এম.এ পাস নাই আর।
অথচ, তথাকথিত এম.এ পাসেরা
বাল্যবিবাহ করছে অবাধে।
দেশ থেকে বাল্যবিবাহ দূর করতে চান?
আর যারা বাল্যবিবাহকে না বলে সামনে এগুলো
তাদের জন্য কি রইল?
ম্যাট্রিক পাস?
বাল্যবিবাহ করলাম না
বাবা-মার পাশে দাঁড়ালাম
নারী শিক্ষার হার বাড়ালাম
এম.এ. পাস করলাম।
পেলাম টা কি?
১১/১২ তে গঞ্জনা।
এম.এ পাস, অসুন্দর, চাকরি নাই
তাই এখন পাই যাতনা।
এভাবেই হাজারো নারী
দিনে রাতে পায় কষ্ট, যাতনা।
দেখার মতো নেই কেউ
নাই কারে মাথা ব্যথা।
আমি তো নিজের বাল্যবিবাহ রোধ করলাম
এই কি তাহলে তার প্রতিদান?
মা, বাবা, সমাজ সবার কাছে
নেই আমার আর মূল্য।
তাই না?
আজ আমি এম.এ পাস
কিন্তুু সৌন্দর্য, টাকা, চাকরি না থাকাই
আমি অবহেলিত।
বিয়ে
ফাতেমা মোস্তারিন
২য় বর্ষ, সংস্কৃত বিভাগ,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রকাশিত: ‘বর্ণালী’ মাসিক ম্যাগাজিন, অক্টোবর সংখ্যা, ২০২০
More Stories
Motivation Speech:জীবন সাজানোর ১টিই উপায়
70+ অনুপ্রেরণামূলক উক্তি
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-2023 PDF