মানুষ বা হিউম্যান বা হোমো স্যাপিয়েন্স (মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম) প্রকৃতপক্ষে হোমো গণের অন্তর্ভুক্ত প্রাণীদের কে বুঝায়।
এক কথায় মানব বিবর্তন হচ্ছে,বিবর্তনের মাধ্যমে অন্যান্য হোমিনিড প্রজাতি থেকে একটি আলাদা প্রজাতি-হোমো স্যাপিয়েন্স এর উদ্ভব কে বোঝায়। বিবর্তন বা অভিব্যক্তি হলো এমন একটি জীব বৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রবহমান জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্টের ক্রমপরিবর্তন কে বুঝায়।কোনো জীবের বংশধরদের মাঝে যে জিনরাশি ছড়িয়ে পড়ে সেগুলোই বংশপরম্পরায় ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। জিনের পরিব্যক্তির মাধ্যমে জীবের নির্দিষ্ট কোনো বংশধরে নতুন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব হতে পারে আবার পুরোনো বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ও হতে পারে।যদিও একটি প্রজন্মে জীবের বৈশিষ্ট্যের যে পরিবর্তন সাধিত হয় তা খবুই সামান্য।কিন্তু কালক্রমে সেই পরিবর্তন জীবগোষ্ঠীতে উল্লেখযোগ্য হয়ে ধরা দেয় এমনকি এক সময় তা নতুন প্রজাতির উদ্ভব এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানব বিবর্তন হলো এমনই একটি প্রক্রিয়া যা জন্মগতভাবে আধুনিক মানুষের জীবপ্রক্রিয়াকে উত্থান এর দিকে পরিচালিত করে।প্রাইমেটস এমনি একটি বিশেষ জেনোস হোমো যার বিবর্তনের ইতিহাস এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় হোমো স্যাপিয়েন্স এর হোমোনিড পরিবারের একটি বিশেষ প্রজাতি হোমিনিন।
মানব বিবর্তন এর ইতিহাস এর জন্য কয়েকটা বৈজ্ঞানিক শাখা জড়িত যেমনঃ শারীরিক নৃবিজ্ঞান,প্রাইমেটোলজি,প্রত্নতত্ত্ব বিদ্যা,জীবাশ্মবিজ্ঞান,স্নায়ুবিজ্ঞান,বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান,ভ্রুণবিদ্যা,ভাষাতত্ত্ব বিজ্ঞান,জেনেটিক্স ইত্যাদি। যদিও মানব বিবর্তন গবেষণা করতে গিয়ে অস্ট্রালোপিথেকাস গণের অনেক প্রজাতি নিয়ে অধ্যয়ন করতে হয়। আনুমানিক ২৩-২৪ লক্ষ বছর পূর্বে আফ্রিকাতে হোমো গণটি অস্ট্রালোপিথেকাস গণ হতে পৃথক হয়েছিল,আর এই হোমো গণে অনেক প্রজাতির উদ্ভব ঘটেছিল কিন্তু মানুষ ছাড়া সবই বিলুপ্ত হয়েছিল।এসব বিলুপ্ত প্রজাতিদের আবার বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে নাম দেয়া হয়েছে,যেমনঃ হোমো ইরেক্টাস যারা এশিয়ায় বাস করত,আবার হোমো নিয়ানডার্টালেন্সিস যারা ইউরোপ ও মধ্য প্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। আর্কায়িক হোমো স্যাপিয়েন্স এর উদ্ভব হয়েছিল প্রায় ৪-২৫ লক্ষ বছর পূর্বে আফ্রিকাতেই, আধুনিক মানুষ থেকে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে পৃথক ছিল এরা দেহের অভ্যন্তরীণ গঠন ও বুদ্ধিমত্তায়।আফ্রিকাতে উদ্ভূত হয়ে ৫০ হাজার-১লক্ষ বছর পূর্বে ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন মহাদেশে,আমাদের এই মানুষ জাতিই।ধারণা করা হয় আনুমানিক ২৫ লক্ষ বছর পূর্বে ইরেক্টাস বা এরগ্যাস্টরা আফ্রিকাতে ছড়িয়ে পড়েছিল তাদেরই উত্তরসূরি হিসেবে পৃথকভাবে উৎপত্তি হয়েছে আমাদের এই মানুষ জাতি। তবে ভৌগলিকতার কারণে সেসব হোমো দের ভেতরেও অন্তঃপ্রজনন সম্ভব ছিল।
২০১৯ সালের অক্টোবর এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে আধুনিক মানুষ প্রায় ২ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা হতে যাত্রা শুরু করেছিল এবং এর উৎপত্তি স্থল ছিল বৎসোয়ানা।
More Stories
Bangladesh Genocide became the most heinous crime by Pakistani Army in 1971 documented by World Record
সুন্দরবন কেন এতো উপকারী
ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয়