মধ্য প্রাচ্য সহ বিশ্বের ধনী রাষ্ট্র গুলো একটা কারণে বাংলাদেশের নাম জানে তা হলো বিশ্বের সবথেকে সুগন্ধি বা আতর এর প্রধান রপ্তানি কারক হিসাবে। বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর গাছ থেকে পৃথিবী বিখ্যাত সুগন্ধি তৈরি করা। এই আতর সৌদি আরব সহ মধ্য প্রাচ্যে অতি উচ্চ মূল্যে বিক্রি করা হয়। এর মূল্য প্রতি লিটার ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলা বড়লেখা উপজেলা ১০ একর জায়গা জুড়ে এক বিশাল কারখানা রয়েছে যেখানে সারা বছর আগর গাছ থেকে সুগন্ধি আতর তৈরি করা হয় এবং বিশ্বে রপ্তানি করা হয়। কারখানার আসে পাশে প্রতিটি বাড়ী তে আগর গাছ ব্যাবসার সাথ জড়িত।। সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শন করলে দেখা যায় প্রতিটি বাড়িতে আগর গাছ ছোট ছোট করে টুকরা করতে ব্যস্ত। কারখানার মালিক দের সনে কথা বলে জানা যায় এই আগর গাছ খুবই মূল্যবান । এই গাছের প্রতিটি অংশ দামী। যারা কারখানা দিতে পারে না তারা সরাসরি গাছ টুকরো টুকরো করে কেজি দরে লাখ টাকা বিক্রিকরে। বাংলদেশে এর বিক্রি হয় তবে বিদেশে এই টুকরো ঘ কাঠ বেশি দামে বিক্রি করা হয়।
কিভাবে গাছ লাগাতে হয়?
আগর গাছের চারা রোপণ করার জন্য একটু উচু জমি যেখানে জলাবদ্ধতা থাকে না। এমন সমতল জমিতে সাধারণত চার- ৫ ফুট অন্তর অন্তর চারা রোপণ করা যায়। যদি কোনো পরিতাক্ত সমতল জমি না থাকে তবে বাড়ির আঙিনায় অন্য কোনো গাছ যেমন কলা গাছ এর বাগান এ সব জমিতে আগর গাছ রোপণ করা যায়।
কিভাবে আগর গাছ থেকে সুগন্ধি পারফিউম তৈরি করা হয়?
আগর গাছ লাগানোর পর যখন ৩ থেকে ৪ বছরে একটু বড় হয়ে যায় তখন সমস্ত গাছ জুড়ে ৩-৪ ইঞ্চি পর পর লোহার পেরেক মারা হয়। এভাবে ৫ বছর রাখা হয়। আগর গাছের প্রতিটি পেরেকের গোড়ায় ছত্রাক জনিত কারনে কালো হোয়ে যায়। আগর গাছের এই কালো অংশই সবথেকে মূল্যবান । এই কালো অংশ থেকে যে সুগন্ধি নির্যাস বের হয় তা উৎকৃষ্টমানের। আর সাদা অংশ থেকে অপেক্ষাকৃত কম গ্রেডের সুগন্ধি তৈরি হয়।
এর পর গাছ থেকে টুকরো টুকরো করে পেরেক খোলা হয় এবং কালো কাঠ ও সাদা কাঠ আলাদা করা হয়। এর পর কারখানাতে একটা বড়ো ড্রামে করে পচানো হয়। এর পর তা বের করে অন্য একটা বিশেষ চুল্লিতে করে ৭-১০ দিন ধরে অনবরত ১০০⁰ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জাল দেয়া হয়। এতে করে ওই ফার্মেন্তেড পচন কৃত টুকরো থেকে সুগন্ধি আতর বা পারফিউম বের হয়। এবং পানির উপরে ভেসে থাকা অবস্থায় অল্প অল্প করে হাত দিয়ে কোনো ছোট বাটিতে তোলা হয়। সমস্ত প্রক্রিয়া একটু সময় সাপেক্ষ। তবে যে সুগন্ধি নির্যাস বের হয় তা উচ্চ মূল্য দিয়ে বিদেশিরা কিনে নিয়ে যায়।
আগর গাছ থেকে উৎপাদিত নির্যাস পরবর্তী ধাপে আরো পরিশোধিত করে বিভিন্ন আতর কোনো ধরনের সুগন্ধি তৈরি করা হয়। এই আগর গাছের নির্যাস এ কোনো ধরনের অ্যালকোহল থাকে না যার কারণে আগর থেকে উৎপাদিত সুগন্ধি সৌদি আরব সহ মধ্য প্রাচ্যে খুবই প্রশিদ্ধ। যে কোনো পার্টি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তারা এটা ব্যাবহার করে। আগর গাছের কালো কাঠ সরাসরি পড়ালে সুগন্ধি ধোয়া উৎপন্ন হয় যা কোনো পার্টি বা ধর্মীয় অনুষ্ঠাাদি তে ব্যাবহার হয়।
বাংলাদেশের বর্তমান মৌলভীবাজার জেলায় এর ব্যাপক চাষ হয় তবে দেশের সবগুলো জেলাতে এর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। যে কোনো মাটিতে একটু শুকনো জায়গা এই গাছ রোপণ করা যায়। কোনো রকম বাড়তি যত্ন নেয়ার দরকার হয়না। এই গাছ রোপণ করে যে কেউ লাখ টাকা আয় করতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট দের মতামত।
More Stories
Research Fund Deadline 30 June 2022 Ministry of Science and Technology of Bangladesh Govt.
Drawing of Padma Bridge and Celebration of Opening Ceremony 25 June 2022 II Riyana
Rare Photo of Padma Bridge