ভূমিকম্প কাকে বলে? ভূমিকম্পের কারণ গুলো কি কি
ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে ভূমিকম্পের কারণ গুলো এক আজগবি ব্যাখ্যা দেয়া আছে। যা বর্তমান যুগে একেবারেই অবাস্তব ও আজগবি। তাই প্রথমেই এই সব ব্যাখ্যা গুলোকে পরিহার করতে হবে। বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে বর্তমানে অনেক বস্তুনিস্থভাবে ভূমিকম্প কাকে বলে বা ভূমিকম্পের কারণ গুলো কি কি তা ব্যাখ্যা করা যায়।
এখন আমরা জেনে নেই ভূমিকম্প বলতে কি বোঝায়?
ভূমিকম্প কাকে বলে?
ভূমিকম্প হল ভূমি বা পৃথিবীর উপরিতল এর কম্পন । অর্থাৎ কোন কারণে যদি ভূপৃষ্ঠের উপরিতল কম্পিত হয় এবং এর উপরিভাগের ভূমির সরণ হয় তাকে ভূমিকম্প বলে। ভু পৃষ্ঠের সরণ দুই ভাবে হতে পারে
১। উলম্ব বরাবর
২। আনুভূমিক বরাবর
ভূমিকম্পের ফলে উলম্ব বরাবর সরণ হলে সাধারণত মাটি ডেবে যায়। একে বলে ভূমি ডিস্প্লেস্মেন্ট হওয়া। ভূমিকম্পের ফলে সাধারণত ১ মিটার পর্যন্ত ও ভুমির ডিস্প্লেস্মেন্ট হতে পারে। এক্ষেত্রে ভূমির উপরে বিদ্যমান বাড়িঘর দালানকোঠা সব ক্ষতি গ্রস্থ হতে পারে। মানুষ হতাহত হতে পারে।
ভূমিকম্পের ফলে ভূমির আনুভূমিকভাবে ও সরণ হতে পারে যাকে বলে হরাইজন্টাল ডিস্প্লেস্মেন্ট। যদিও এটা খুব বিরল ।
ভূমিকম্পের কারণ গুলো অনেক হতে পারে তবে প্রধানত কারণ হল প্লেট টেক্তনিকের নড়াচড়া।
ভূমিকম্পের কারণ গুলো নিম্নে দেয়া হল;
১। প্লেট টেক্টনিকের নড়াচড়া
তোমাদের নিশ্চয়ই প্লেট টেক্টনিক সম্বন্ধে ধারনা আছে? না থাকলে সংক্ষেপে বলা দরকার এখানে। প্লেট টেক্টনিক সম্বন্ধে জানার আগে পৃথিবীর উপরিভাগ প্লেট নামে ৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার পুরুত্বের মাটি ও পাথরের স্তরে জিগ-শ পাজলের মত বিন্যস্ত। এই প্লেট গুলো কোথাও ৫ কিমি পুরুত্বের আবার কোথাও ২০ কিমি পুরুত্বের এবং গভীরে ১০০ পর্যন্ত বিস্তৃত।
যেখানে পাহাড় পর্বত সেখানে এই প্লেট গুলোর পুরুত্ব ও বেশি। আর সমুদ্রের তলদেশে এই প্লেট গুলোর পুরুত্ত্ব কম সাধারণত ৫- ১০ কিমি। স্থলভাগের প্লেট গুলোকে বলে মহাদেশীয় প্লেট বা কন্টিনেটাল প্লেট আবার সামুদ্রিক প্লেট গুলোকে বলে অশিয়ানিক প্লেট । এই প্লেট গুলো আবার ভু অভ্যন্তরে বিদ্যমান ম্যাগমা এর উপর ভাসমান।
এই ম্যাগমা হল অত্যন্ত উত্তপ্ত গলিত পাথর। আর অত্যধিক তাপ ও চাপের কারণে এই ম্যাগমা গলিত অবস্থায় থাকে এবং এর উপরে বিদ্যমান প্লেট গুলো চলমান । চলমান এই প্লেট কেই বলে প্লেট টেক্টনিক। এই প্লেট গুলো এঁকে অপরের সাথে ঘর্ষণ হয় আর তখন ই ভূমিকম্প সংগঠিত হয়। এই প্লেট গুলোর সংযোগ স্থলে ই মূলত ভূমিকম্প সংগঠিত হয়। এই সংযোগ স্থল কে প্লেট বাউন্ডারি বলে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে প্লেট বাউন্ডারি কত প্রকার?
প্লেট বাউন্ডারি সাধারণ ৩ প্রকার আর নড়াচড়ার দিক এর উপর ভিত্তি করেঃ
কন্টিনেটাল- কন্টিনেটাল প্লেট বাউন্ডারিঃ
কন্টিনেটাল- অশিয়ানিক প্লেট বাউন্ডারি
অশিয়ানিক- অশিয়ানিক প্লেট বাউন্ডারি
এই প্লেট বাউন্ডারি গুলোতে সাধারণত ভূমিকম্প হয়ে থাকে। পৃথিবীতে যত ভূমিকম্প হয় তাঁর ৯৮ শতাংশের ই কারণ এই প্লেট টেক্তনিক।
২। ফল্ট বা চ্যুতিঃ
যখন প্লেট টেক্তনিক বা অন্য কোন কারণে যদি ভুপৃষ্ঠের কোন অংশ একে অপরের উপরে উঠে যায় বা ডিস্প্লেস্মেন্ট হয় তবে তাকে ফল্ট বলে। ফল্টের কারণে ভূমিকম্প হতে পারে।
More Stories
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয়
ঝুঁকি কি কত প্রকার হ্রাস ও ব্যাবস্থপনা
What is an Aquifer?