Colorgeo.com

Disaster and Earth Science

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য কি?

Spread the love

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য কি আছে?

যে কোনো পদার্থ তৈরি হয় প্রোটন ও নিউট্রন এর সমন্বয়ে। যখন কোনো পদার্থের কেন্দ্রে বিদ্যমান প্রোটন সংখ্যা তার বাহিরের ঘুর্ণয়মান ইলেকট্রনের সংখ্যার সমান হয় তাকে মৌল বলে। যেমন গোল্ড Au, লোহা Fe ইত্যাদি। মৌল গুলো ইলেকট্রন এর প্রতি আসক্তি থাকে না যদি না তাপ চাপ প্রয়োগ করে বাধ্য করা হয়। তেমনি পরমাণু হলো সমান সংখক ইলেকট্রন ও প্রোটন বিশিষ্ট পদার্থ তবে তাদের অধিক ইলেকট্রন আসক্তি রয়েছে।

একটি মৌল বা Element একা একা নিষ্ক্রিয় ভাবে থাকতে পারে কারণ তাদের ইলেকট্রনের শক্তি স্তর যথেষ্ট সংখক ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ তার মানে তারা সন্তুষ্ট। কিন্তু পরমাণুতে ইলেকট্রন শক্তি স্তরে যথেষ্ট সংখক ইলেকট্রন থাকে না যাতে তারা সন্তুষ্ট হয়ে নিষ্ক্রিয় হতে পারে। যেমন অক্সিজেন [O] কে দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাক।

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য

অক্সিজেন [O] এর ইলেকট্রন শক্তি স্তরে ২>৬ মোট ৮ টি ইলেকট্রন রয়েছে এবং কেন্দ্রে ৮টি প্রোটন রয়েছে। কিন্তু অক্সিজেনের সন্তুষ্ট হয়ে নিষ্ক্রিয় থাকার জন্য তার ইলেকট্রন বিন্যাস ২>৮ হলে উত্তম হতো। তাই তার আরো ২ টি ইলেকট্রন থাকার ইচ্ছা পোষন করে তাই অন্য আরও একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে মিলে ২ টি ইলেকট্রন তারা ভাগাভাগি করে যথেষ্ট সন্তুষ্ট থাকে তাই অক্সিজেন অনু সন্তুষ্ট কিন্তু  অক্সিজেন [O] পরমাণু অসন্তুষ্ট।

 পরমাণুগুলোর ইলেকট্রন আসক্তি রয়েছে কিন্তু মৌলর ক্ষেত্রে এমনটা নাই কারণ মৌল গুলো সাধারণত ধাতু হয়ে থাকে এবং এদের পারমাণবিক সংখ্যাও অনেক বেশি তাই ইলেকট্রন গুলো কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে তাই ইলেকট্রন আসক্তি কম।

আরও পড়ুনঃ

H2O তে H +ও OH-আয়ন থাকে এখানে OH-আয়ন কোথা থেকে আসে?

 

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য


এক কাপ চা তৈরি করতে আপনি চা পাতা, দুধ, চিনি ইত্যাদি ব্যবহার করেন। এই চা পাতা, দুধ, চিনি এগুলো হল বিভিন্ন ধরনের পদার্থ। এই পদার্থগুলোকেই আমরা মৌল বলি।

মৌল কী?

একটি মৌল হল এমন একটি পদার্থ যা এক ধরনের পরমাণু দিয়ে গঠিত। অর্থাৎ, একটি মৌলের সকল পরমাণু একই ধরনের হবে। যেমন, সোনা একটি মৌল। সোনার সকল পরমাণু একই ধরনের।

পরমাণু কী?

পরমাণু হল কোনো মৌলের ক্ষুদ্রতম কণা যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ, একটি মৌলকে ভাঙলে আমরা সবচেয়ে ছোট একক হিসেবে যে কণা পাব তাই পরমাণু।

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য

বৈশিষ্ট্য মৌল পরমাণু


সংজ্ঞা এক ধরনের পরমাণু দিয়ে গঠিত পদার্থ কোনো মৌলের ক্ষুদ্রতম কণা
উদাহরণ সোনা, রৌপ্য, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন সোনার পরমাণু, রৌপ্যের পরমাণু
গঠন এক ধরনের পরমাণুর সমষ্টি প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রন দিয়ে গঠিত
বৈশিষ্ট্য প্রতিটি মৌলের নিজস্ব ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকে একই মৌলের সকল পরমাণুর একই ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকেসহজ কথায়:

মৌল: মৌল হল একটি বস্তু, যেমন সোনা বা হাইড্রোজেন।
পরমাণু: পরমাণু হল মৌলের একটা অতি ক্ষুদ্র কণা, যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না।
উদাহরণ:

একটি সোনার গয়না হল সোনা মৌলের একটি বস্তু।
সোনার গয়নাকে যদি খুব ছোট ছোট টুকরো করে ভাঙতে থাকি, একসময় আমরা সোনার এমন একটি কণা পাব যাকে আর ভাঙা যাবে না। এই কণাটিকেই সোনার পরমাণু বলে।

অনু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য

আমরা মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য জেনেছি এখন আমরা জানব অণু অ পরমাণুর মধ্যে কি কি পার্থক্য রয়েছে।

পরমাণু
পরমাণু হল কোনো মৌলের সবচেয়ে ছোট কণা। অর্থাৎ, একটি মৌলকে যতই ছোট করে ভাগ করতে থাকো না কেন, এক পর্যায়ে তুমি একটা পরমাণু পাবেন।
পরমাণু আরো ছোট কণা দিয়ে গঠিত: প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রন।
পরমাণু নিজে থেকে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
অনু
অনু হল দুই বা ততোধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত একটি কণা।
অনু কোনো পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা পদার্থের সব ধর্ম বহন করে।
অনুতে বিভিন্ন ধরনের পরমাণু থাকতে পারে। যেমন, জলের অনুতে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু এবং একটি অক্সিজেন পরমাণু থাকে।

পরমাণু হল একটা ইট, যা দিয়ে অনেক কিছু তৈরি করা যায়।
অনু হল ইট দিয়ে তৈরি একটি ঘর।
উদাহরণ:

লোহা একটি মৌল। লোহার সবচেয়ে ছোট কণা হল লোহার পরমাণু।
জল একটি পদার্থ। জলের সবচেয়ে ছোট কণা হল জলের অনু। জলের একটি অনুতে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু এবং একটি অক্সিজেন পরমাণু থাকে।

ইলেকট্রন ও প্রোটন এর মধ্যে পার্থক্য

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য যেমন তুলনা মূলক বৃহৎ স্কেলে ভাবা হয় কিন্তু ইলেকট্রন অ প্রোটন এর মধ্যে পার্থক্য হল আণুবীক্ষণিক । আমরা মৌলকে দেখতে পাই পরমাণুকে দেখতে পাই না। তেমনি পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন ও প্রোটন থাকে । এই সেকশনে আমারা ইলেকট্রন ও প্রোটন এর মধ্যে পার্থক্য জানব।

ইলেকট্রন ও প্রোটন: দুটি ভিন্ন কণা
পরমাণুকে গঠন করে অনেকগুলো ক্ষুদ্র কণা। এর মধ্যে দুটি মূল কণা হল ইলেকট্রন এবং প্রোটন। যদিও উভয়েই পরমাণুর অংশ, তবে এদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।

ইলেকট্রন
আধান: ঋণাত্মক (-)
অবস্থান: নিউক্লিয়াসের চারপাশে কক্ষপথে ঘোরে।
ভর: খুবই কম, প্রোটনের ভরের প্রায় ১/১৮৩৬ অংশ।
চলাচল: নিউক্লিয়াসের চারপাশে খুব দ্রুত গতিতে ঘোরে।
অংশগ্রহণ: রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং বিদ্যুৎ পরিবহনে অংশগ্রহণ করে।
প্রোটন
আধান: ধনাত্মক (+)
অবস্থান: নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থিত।
ভর: ইলেকট্রনের তুলনায় অনেক বেশি ভারী।
চলাচল: নিউক্লিয়াসের মধ্যে স্থির থাকে।
অংশগ্রহণ: পরমাণুর মোট ভর নির্ধারণ করে এবং নিউক্লিয়াসের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

আশা করি মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য কি তা পরিষ্কার হয়েছে। আরও বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন।

ইমেইলঃ ranangobiswas@gmail.com

মৌল ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য