সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগাবেন কীভাবে?
আমরা এখন আর এরিস্টটল প্লেটো লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির মতো একসাথে দার্শনিক বিজ্ঞানী হতে পারব না। এখন যুগ পাল্টে গেছে। এখন যুগ এসেছে মাইক্রো লেভেলে ফোকাস করার। বিজ্ঞানী হলেও ফোকাস করতে হবে মাইক্রো লেভেল বা আরো সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ে। ঠিক তেমনি সময়কে আমরা বছর মাস দিন হিসাবে না ভেবে ভাবতে হবে ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড হিসাবে। প্রতি মুহূর্তের মূল্য আছে। একটি মিনিট সময় অতিবাহিত হওয়া মানে জীবন থেকে চিরদিনের জন্য একটি মিনিট হারালাম।
আমাদের প্রতিদিনে রয়েছে ১৪৪০ মিনিট। পৃথিবীর সব মানুষের জন্যই এই একই সময় । কে কিভাবে এই সময়কে কাজে লাগবে তার উপর ব্যাক্তির উন্নতি অবনতি নির্ভর করছে। আমাদের আজকের কর্ম আগামী দিনের রুটি রুজির বন্দোবস্ত করবে।
আগামী কয়েক মাস আমার কেমন সময় কাটবে তা নির্ভর করছে বর্তমানে আমি কিভাবে সময় কে ব্যবহার করছি।
তবে কেউ গুণে গুণে সময়ের খেয়াল রাখতে পারে না। বিখ্যাত ব্যক্তিরা কাজের গুনগত মানের উপর খেয়াল করেন সময়কে তারা সময়ের হাতে ছেড়ে দেন।
এখন ফেসবুকে অথবা অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়ায় আমাদের সময় অতিবাহিত হ্য় বেশি। সহজেই আমাদের মনোসংযোগ নষ্ট হ্য়। আমাদের মনকে কোনো কাজে ফোকাস করারজন্য ডিস্ট্রাকশন করার অনেক পথ খোলা যা আমাদের কোনো একটা কাজে ফোকাস করতে দেয় না।
অফিসে অনেকেই আপনার কাজে মনোসংযোগ বিক্ষিপ্ত করতে পারে। আমি একটা বিষয় উপলদ্ধি করেছি কাজে ১০০ ভাগ মনযোগ দিয়ে কাজ করলে কাজের ফলাফল নির্ভুল হ্য়।
কিন্তু একসাথে দুইটা কাজ করতে পারে কয়জন? আমি তো পারি না । অনেকেই দেখি গান শুনে আর বই পড়ে। এটা আমার দ্বারা অসম্ভব।
বেশিরভাগ কাজ আমরা হয়তো ৮০ শতাংশ সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে করি বাকিটা এখনো বাকি।
সময়কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে মনোযোগের প্রয়োজন।
আমরা প্রতিদিন বহুবিধ কাজ করে থাকি। বহুবিধ কাজের মধ্যে মোস্ট ইমপোর্টেন টাস্ক বা সবথেকে গুরুত্ব পূর্ণ কাজটি আমাদের করা দরকার।
সময়ের সঠিক ব্যবস্থা পনা একজন মানুষকে অন্যদের থেকে এগিয়ে নিবে। সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা মূলত নির্ভর করছে ব্যাক্তির সবথেকে গুরুত্ব পূর্ণ কাজ নির্ধারণ করা ও তার প্রতি ফোকাস করা। বহুবিধ কাজ করলে হবে না । প্রতিদিনের জন্য একটি MIT বা Most Important Task নির্ধারণ করে কাজ করে যেতে হবে। সব কাজ সমান গুরুত্বপূর্ণ নয়। সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নির্ধারণে একটি নির্দিষ্ট কাজ রয়েছে সেটাকে ফোকাস করতে হবে। প্রতিদিনে আপনার MIT সম্পাদনে আপনার মূল লক্ষ্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাবে এতে আপনি আরো উৎসাহ পাবেন।
এখন প্রশ্ন হলো কখন আমি আমার কাজ করবো? বেস্ট সেলার বইয়ের লেখক, সফল ফ্রিল্যান্সার ও এন্টারপ্রিনোর কেভিন ক্রুস বলেন ঘুম থেকে উঠে সকালের দুই ঘণ্টার মধ্যে আপনের MIT সম্পন্ন করবেন। কেনো? কারণ পর্যাপ্ত ঘুমের পরে আমাদের ব্রেন সব থেকে বেশি সক্রিয় থাকে। যাকে বলে হাই প্রোডাকটিভ। তখন আপনি হবেন অপ্রতিরোধ্য অর্থাৎ আনস্টোবেবল। যত কঠিন কিছু থাক না কেনো সহজেই মোকাবেলা করতে পারবেন।
ধরুন আপনি সঠিক পরিকল্পনা নিতে পারছেন না আপনার নতুন ব্যবসার জন্য। ছাত্র ছাত্রীরা পাঠ্য বই পড়তে ভীতি অথবা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সকালের ওই সময়টা আপনার উত্তম সময়। আপনি যখনই ঘুম থেকে উঠেন না কেনো প্রথম দুই ঘন্টা আপনার সেরা সময়।
আপনি যদি সকালে ব্যস্ত থাকেন তবে আপনার সেরা সময়টি নির্ধারণ করুন। আপনার হাতে একটি ডায়রি রাখুন যখনই অপনার কোনো নতুন আইডিয়া মাথায় আসবে লিখে রাখুন। যথা সময়ে বিস্তারিত ভাবুন।
রুটিন করে কাজ করলেই কাজে দীর্ঘসূত্রিতা কমানো যায় কি?
সময়ের সঠিক ব্যবহার হলো কাজে দীর্ঘসূত্রিতা কমানো। আমরা অনেকেই কাজের ডেডলাইন মিস করার প্রবণতা আছে। আমি নিজেও যেমন একেবারে তড়িঘড়ি করে কোনো কাজ শেষ করি। এতে যেমন কাজের আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না তেমনি সময়ের অপচয় হয়। এর থেকে বের হবেন কিভাবে?
প্রথমেই আপনাকে যেকাজ টা করতে হবে টা হলো কাজে উৎসাহ আনা। মনে রাখবেন আমাদের কাজে দীর্ঘসূত্রিতা করি শুধু মাত্র অনুপ্রেরণার অভাবে। একবার ডেডলাইন নির্ধারিত হবার পর আমার উদাসীন হয়ে পড়ি। তাই কাজটি যথা সময়ে সম্পন্ন করতে পারি না।
দ্বিতীয় হলো: আলাদা একটা কঠোর ডেডলাইন সেট করুন।
কাজে দীর্ঘসূত্রিতা কমানোর জন্য কয়েকটি পরামর্শ হলো
নিজের প্রতি ধিক্কার দিন
নিজেকে সমালোচনা করুন
নিজেকে শাস্তি দিন
More Stories
আমেরিকার ৭৭% মানুষ নাকি টাকার সমস্যা আছে
বন্ধু যখন বই ও কম্পিউটার
হোলি উৎসব কি রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা?