Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ কেন হয়?

Spread the love

১০ বছর হতে না হতেই কেন স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ হবার সম্ভবনা দেখা দেয়?

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় কেন? মানুষ সর্বদা নতুন কিছু নিয়ে উৎসাহ বোধ করে । কোন একটা বিষয়ে সম্বন্ধে জানা হয়ে গেলে মানুষ সেই বিষয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। এর কারণ জানতে হলে একটি জরিপের দিকে দৃষ্টি ফেরানো যাক। এটা আমার বানানো জরিপ। বিষয় টাকে মুখরোচক করার জন্য জরিপ এর অবতারণা করা হয়েছে। 

একদিন একজন দক্ষ রান্না বিশারদ সেফ, তার রেস্টুরেন্টে আগত নিয়মিত ক্রেতাদের মধ্য থেকে একটি পরীক্ষা করার জন্য খাবারে একটা পরিবর্তন আনলেন। তার খাবারগুলোতে তিন ঘন্টার একটি চলমান পরীক্ষা করা হবে। একই ধরনের আপেল পরপর তিন জনকে দেয়া হলো। দেখা গেল সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে আপেল গুলো খাচ্ছে। এক ঘণ্টা পর আবার একই আপেল সাথে অন্য একটি রঙিন করে সাজানো দেখতে সুস্বাদু কিন্তু ভিতরে সেই আগের আপেলের স্বাদসহ প্রথমে প্রদান করা আপেলটি দেয়া হলো।

খেয়াল করেছি যে, একই জিনিস বারবার কেউ পেতে চায় না । ব্যক্তি জীবনেও তাই। একই শার্ট, একই প্যান্ট, দীর্ঘমেয়াদে আমরা ব্যবহার করতে চাই না। একই জায়গা ঘুরতে যেতে চাই না বার বার। প্রতিদিন একই মানুষের মুখোমুখি বুঝতে চাই না বার বার । ঠিক একই ভাবে একই মানুষের সাথে ১০ টি বছর অতিবাহিত করার পর মনে হয় একটু দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে । নিজেদের মধ্যে এ কারণেই হয়তো স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসার মৃত্যু দেখা দেয়। তাই দীর্ঘ ১০ বছর পরে স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন আর অটুট থাকেনা। একটু দুর্বল হয়ে যায় বৈকি ।

১০ বছর হতে না হতেই স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ হবার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে।

স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ হবার কিছু সাধারণ কারণ:

  • অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন: বিবাহের পর উভয় পক্ষের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। কর্মজীবন, আর্থিক পরিস্থিতি, পরিবার, সন্তান – এসব বিষয়ে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব তৈরি করতে পারে।
  • যোগাযোগের অভাব: নিয়মিত ও স্পষ্ট যোগাযোগের অভাব দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। অমীমাংসিত সমস্যা, লুকিয়ে রাখা অনুভূতি, ভুল ব্যাখ্যা – এসব কারণে বিচ্ছেদের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অসঙ্গতি: মূল্যবোধ, জীবনধারা, লক্ষ্য – এসব বিষয়ে দম্পতির মধ্যে অসঙ্গতি দীর্ঘমেয়াদী সুখী সম্পর্কের জন্য বাধা সৃষ্টি করে।
  • অর্থনৈতিক সমস্যা: আর্থিক অনিশ্চয়তা, ঋণ, আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মতবিরোধ – এসব বিষয় পারিবারিক অশান্তির কারণ হতে পারে।
  • বিশ্বাসঘাতকতা: প্রতারণা, মিথ্যা বলা, গোপনীয়তা লঙ্ঘন – এসব বিষয় বিশ্বাস ভেঙে ফেলে এবং সম্পর্কের ভিত্তি দুর্বল করে।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা: বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, ব্যক্তিত্বের ব্যাধি – এসব সমস্যা দম্পতির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব তৈরি করতে পারে।
  • পরিবার ও বন্ধুদের হস্তক্ষেপ: অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ, সমালোচনা, বা মতামত দম্পতির মধ্যে অশান্তি ও বিরোধের কারণ হতে পারে।
  • বাইরের আকর্ষণ: নতুন সম্পর্কের প্রতি আকর্ষণ, বিবাহবহির্গত সম্পর্ক – এসব বিষয় বিবাহের ভিত্তি দুর্বল করে।
  • শারীরিক নির্যাতন: শারীরিক নির্যাতন, হুমকি, অপমান – এসব বিষয় বিবাহের জন্য অসহনীয় পরিবেশ তৈরি করে।

মনে রাখবেন:

  • প্রতিটি বিবাহ অনন্য এবং বিচ্ছেদের কারণও পরিবর্তিত হতে পারে।
  • বিচ্ছেদ সব সময় সমাধান নয়। দম্পতিদের উচিত তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করা এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া।
  • সুখী ও স্থায়ী বিবাহ গড়ে তোলার জন্য উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতি, ধৈর্য, বোঝাপড়া এবং যোগাযোগের প্রয়োজন।

স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ এড়ানোর জন্য কিছু টিপস:

  • নিয়মিত ও স্পষ্ট যোগাযোগ বজায় রাখুন।
  • আপনার অনুভূতি ও চাহিদা সম্পর্কে খোলাখুলিভাবে কথা বলুন।

আমার ব্যক্তিগত মতামতঃ

একটি পরিবারে এক জনকে মাতব্বরি দিতে হবে । যদি স্ত্রী সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিতে চায় তবে তাকেই দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বামীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। কোন রকম হস্তক্ষেপ করা যাবে না। তাতেই সংসারের দাম্পত্য কলহ বেড়ে যাবে। আর যদি স্ত্রী সংসারের দায়িত্ব নিতে না পারে  অথবা না চায় তবে স্বামীকে দায়িত্ব নিতে হবে।

মনে রাখতে হবে একটা প্রবাদ বাক্য আছেঃ “এক বনে দুইটা বাঘ থাকতে পারে না” এর অর্থ হল, একটা সংসারের সবাই মাতব্বর হলে কোন উন্নতি হবে না । একে অপরের  সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে হবে। তবেই দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়া যাবে ।

বিচ্ছেদ

অনেক সময়  বর্তমান যুগের গতিশীলতার কাছে হার মেনে স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ হতে দেখি। তবে নিজেদের কে সর্বদা আপডেট রাখতে হবে যাতে একে অপরের প্রতি নতুন রূপে দেখা যায়। যেমন আপেল প্রতি দিন খেতে ভাল লাগবে না কিন্তু আপেল এর তৈরি আপেল পাই কিন্তু আবার সুস্বাদু।

চেষ্টা করুন।