বিজ্ঞানীদের ধারনা এক উল্কা পাতের কারণে ডাইনোসরগুলো মারা গিয়েছিল। তবে জাপানের তহকু বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর কুনিও কাইহ গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, ৬.৬ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে পতিত উল্কা যদি বর্তমান মেক্সিকোর চিকশুলুব খাদ (Chicxulub crater) নামক জায়গাই না পড়ে অন্যও কোথাও পড়ত তবে ডাইনোসর বিলুপ্ত নাও হতে পারত।
তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে ডাইনোসর_বিলুপ্ত হওয়ার পর পৃথিবীর যে আবহাওয়া গত পরিবর্তন হয় তার জন্য নতুন নতুন প্রাণীর আবির্ভাব হয়। তার মধ্য মানুষ ও ছিল। তাই ডাইনসর_বিলুপ্ত না হলে হয়ত মানুষ এই পৃথিবীতে আসতে পারত না।
ডাইনোসরগুলো আর মানুষ কি একত্রে বসবাস করতে পারত?
না
কারণ বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে যে যদি ডাইনোসর_বিলুপ্তি না হত তবে নতুন করে জীব বৈচিত্র্য সৃষ্টি হত না আর তাই শিম্পাঞ্জি ও ওই ধরনের প্রজাতির সৃষ্টি হত না। আর মানুষ ও সৃষ্টি সম্বব হতো না। প্রকৃতির নিয়মে কোন একটি বাস্তুসংস্থান পরিপূর্ণ ধ্বংস হবার পরে সেখানে পূর্বের একই কোন প্রাণী বা গাছাপালা জন্মাতে পারে না। কিছু কিছু নতুন প্রজাতি ও জন্ম নেয়। যেমন কোন একটি বনাঞ্চল যদি পরিপূর্ণ ভাবে ধ্বংস হয়ে যায় তবে ঐ খানে নতুন কোন গাছের জন্ম হতে পারে পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাই একই রকমের গাছ পালা যেমন আশা করা যায় না তেমন নতুন কোন প্রজাতি ও আশা করা যায়। ঠিক তেমনি ঘটনা ঘটেছিল পৃথিবীতে ৬৬ মিলিওন বছর আগে। ডাইনোসরগুলো মারা যাবা র পর ঐ নতুন বাস্তুসংস্থান থেকে নতুন প্রাণীর ও উদ্ভব হয়েছিল। তবে কিছু ডাইনোসরপ্রজাতি তো অবশ্যই ছিল । তার থেকেই বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় শিম্পাঞ্জি ও অন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর উদ্ভব হয়। যেমন নেকড়ে জাতীয় প্রাণী থেকে একদা বৃহৎ তিমি মাছে বিবর্তন হয়েছিল বলে বিজ্ঞানীদের ধারনা।
ছোটদের ডাইনোসর হ্যান্ড বুক ছবি সহ ড রমন কুমার বিশ্বাস বিস্তারিত
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের নাম কী?
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের নাম হলো দা সাউদর্ন । অস্ট্রেলিয়ায় এই ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া যায়।
ডাইনোসরগুলো কত বছর আগে মারা গিয়েছে
বিজ্ঞানীদের ধারনা ১২০ মিলিয়ন বছর আগে থেকেই ডাইনোসর গুলোর বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় তবে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে ডাইনোসরগুলোর সর্বশেষ বিলুপ্তি হয়। বর মেক্সিকোর সিকশো লাভ নামক জায়গায় ভূপৃষ্ঠের গভীরে একটি বৃহৎ কয়লার খনি মজুদ থাকার কারণে ওই নির্দিষ্ট জায়গায় উল্কাপাত হওয়ার কারণে কয়লা সমৃদ্ধ উপাদান বাতাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন কালো মেঘের সৃষ্টি করে যা দুই থেকে তিন বছর যাবত সূর্যের কিরণ পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারেনি। তাছাড়া অধিক ঠাণ্ডা পরিবেশ সৃষ্টি হওয়াতে জীববৈচিত্রের ক্ষতি হয় এবং বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সহ বিভিন্ন গ্রীন হাউস গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় এবং ডাইনোসরের বসবাসের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
কিভাবে ডাইনোসরগুলো মারা যায়?
খাদ্য এবং বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কারণে ডায়নোসরগুলো মারা যায়। তবে ক্ষুদ্র প্রজাতির ডাইনোসর গুলো সাধারণত ভূগর্ভস্থ গর্ত করে বসবাস করত অথবা পাখি জাতীয় ডাইনোসরগুলো যারা উড়তে পারতো তারা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পেরেছিল। বর্তমান কালে আমরা যে পাখি দেখতে পাই এই পাখিগুলো হল ডাইনোসরদের পরবর্তী প্রজন্ম।
ঠিক যেভাবে শিম্পাঞ্জি জাতীয় প্রাণী থেকে মানুষের বিবর্তন হয়েছে বলে ধারণা করা হয় ঠিক তেমনি ডাইনোসরদের পরবর্তী প্রজন্ম হলো বর্তমান কালের পাখি।
একটা প্রশ্ন হতে, পারেডাইনোসরগুলো কি এখনো পৃথিবীতে আছে?
এর উত্তর হল না।
তবে ডাইনোসরদের পরবর্তী প্রজন্ম এখনো পৃথিবীতে রয়েছে যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল পাখি।
পাখিরাই হলো ডাইনোসরদের পরবর্তী প্রজন্ম। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে জীবন্ত ডাইনোসরগুলো বিলুপ্ত হলেও তাদের পরবর্তী প্রজন্ম রয়েছে । তবে ডাইনোসরের আরও অনেক প্রজাতি থাকতে পারে যে গুলো এখনো আবিষ্কৃত হয় নি। ফসিল রেকর্ড থেকে জানা যায় যে ডাইনোসরগুলো বৃহৎ আকারের হবার কারণে প্রতিকূল পরিবেশের তারা মানিয়ে নিতে পারে নি। তবে যে ডাইনোসরগুলো তুলনা মূলক ছোট ও ভু গর্ভে বসবাস করতো অথবা উড়ে বেড়াত তারা অভিযোজন ক্ষমতায় নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছিল।