Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

বিবর্তন কাকে বলে? কেন বানর মানুষ হচ্ছে না?

Spread the love

বিবর্তন কাকে বলে? কেন বানর মানুষ হচ্ছে না?

বিবর্তন বলতে বোঝায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন। এই পরিবর্তন জিনগত পরিবর্তনের ফলে ঘটে এবং জীবকে তাদের পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হতে সাহায্য করে। কোন একটা জীব যখন কোন প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তখন তার পরিবেশ অনুসারে শারীরিক পরিবর্তন সাধিত হয় । এটাকে বলে বিবর্তন। যেমন তুষার অঞ্চলের ভালুকের গায়ে শরীরের ত্বকের নিচে চর্বি থাকে যাতে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পায়। আবার অন্য শ্রেণীর ভালুকের এই চর্বি নাই যারা ট্রপিকাল অঞ্চলে থাকে। বিবর্তন কাকে বলে এটা এখন আর জটিল কোন প্রশ্ন নয়। বিজ্ঞানের কল্যাণে আমার এখন এর বাস্তবতা দেখি ।

বিবর্তনের প্রধান ধারণাগুলি হল:

  • জিনগত বৈচিত্র্য: প্রতিটি জীবের জিনের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন থাকে। এই পরিবর্তনগুলি পরিবেশের সাথে অভিযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় বৈচিত্র্য সরবরাহ করে।
  • উত্তরাধিকার: জীবের জিনগুলি তাদের সন্তানদের মধ্যে প্রেরিত হয় । জিন গুলো জীবের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
  • প্রাকৃতিক নির্বাচন: যে জীবগুলির পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হওয়ার জন্য উপকারী জিনগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে তারা বেঁচে থাকার এবং বংশবৃদ্ধি করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রাকৃতিক প্রতিকুল পরিবেশে টিকে না থাকতে পারলে বিলুপ্ত হয়ে যায়। অন্যথায় বিবর্তন হয়ে মানিয়ে নেয় পরিবেশের সাথে।
  • সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন: প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের বৈশিষ্ট্যগুলিকে পরিবর্তন করে। এটা একটা দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়া । আমারা যেমন আমাদের নখ বড় হওয়া দেখতে পাই না । বিবর্তন কি হচ্ছে এটাও বোঝা যায় না।

বিবর্তনের প্রমাণ:

  • জীবাশ্ম রেকর্ড: জীবাশ্মগুলি দেখায় যে সময়ের সাথে সাথে জীবের বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তিত হয়েছে। যেমন মানুষের মস্তিষ্কের আকার দেখে বোঝা যায়। ছোট থেকে বড় হয়েছে আমাদের মস্তিষ্ক।
  • তুলনামূলক জীববিজ্ঞান: বিভিন্ন জীবের শারীরিক, জৈবরাসায়নিক এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলির তুলনা তাদের বিবর্তনীয় সম্পর্ক সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।
  • ভ্রূণবিদ্যা: ভ্রূণের বিকাশ বিভিন্ন জীবের মধ্যে বিবর্তনীয় সম্পর্কের প্রমাণ প্রদান করে।
  • আণবিক জীববিজ্ঞান: জিনের কাঠামো এবং ক্রম বিভিন্ন জীবের মধ্যে বিবর্তনীয় সম্পর্ক সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।

বিবর্তন কাকে বলে

বিবর্তন কাকে বলে ও বিবর্তনের গুরুত্ব:

  • বিবর্তন আমাদেরকে জীবের বৈচিত্র্য এবং তাদের পরিবেশের সাথে তাদের অভিযোজন বুঝতে সাহায্য করে।
  • বিবর্তন আমাদেরকে জীবের উৎপত্তি এবং ইতিহাস বুঝতে সাহায্য করে।
  • বিবর্তন আমাদেরকে নতুন প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা পদ্ধতি বিকাশ করতে সাহায্য করে।

বিবর্তন সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা:

  • বিবর্তন একটি রৈখিক প্রক্রিয়া নয়। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন উপায়ে ঘটতে পারে। সরাসরি বানর থেকে মানুষ এসেছে এটা বলা যায় দুরূহ।
  • বিবর্তন একটি “অধিকতর ভাল হওয়ার ” প্রক্রিয়া নয়। এটি কেবল পরিবর্তন।
  • বিবর্তন শুধু “মানুষের উৎপত্তি” ব্যাখ্যা করে না। এটি সমস্ত জীবের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করে।

বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় বানর থেকে কি মানুষ এসেছে?

বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় বানর থেকে সরাসরি মানুষের উদ্ভব হয়নি, বরং দীর্ঘ সময় ধরে ধাপে ধাপে জৈবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক মানুষের বিবর্তন ঘটেছে।

প্রমাণ:

  • জীবাশ্ম: জীবাশ্ম রেকর্ড প্রমাণ করে যে, আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষ ‘হোমিনিড’ নামক একটি প্রাইমেট গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিল।
  • ডিএনএ: ডিএনএ বিশ্লেষণ দেখায় যে, মানুষ এবং বানরের জিনগত গঠন অনেকটা মিল।
  • শারীরিক বৈশিষ্ট্য: মানুষ এবং বানরের শারীরিক গঠন, বিশেষ করে হাড়ের গঠন, অনেকটা সমান।

বিবর্তনের ধারা:

  • প্রায় ৭ মিলিয়ন বছর আগে, ‘সাইমিয়ান’ নামক প্রাইমেট গোষ্ঠী থেকে ‘হোমিনিড’ গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে।
  • প্রায় ৪ মিলিয়ন বছর আগে, ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ নামক ‘হোমিনিড’ প্রজাতির উদ্ভব ঘটে।
  • প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে, ‘হোমো’ প্রজাতির উদ্ভব ঘটে।
  • প্রায় 200,000 বছর আগে, ‘হোমো সেপিয়েন্স’ নামক আধুনিক মানুষের উদ্ভব ঘটে।

বিবর্তন নিয়ে যত বিতর্ক:

বিবর্তন তত্ত্ব যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, তবুও ‘বানর থেকে মানুষ’ ধারণাটি কিছু মানুষের কাছে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক।

বর্তমান বানর গুলো বিবর্তন হয়ে কেন মানুষে পরিণত হচ্ছে না?

বর্তমানের বানরগুলি মানুষে বিবর্তিত হচ্ছে না কারণ বিবর্তন একটি ধীর এবং ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া। বানর এবং মানুষের শেষ সাধারণ পূর্বপুরুষ প্রায় ৭ মিলিয়ন বছর আগে বাস করত। তারপর থেকে, দুটি প্রজাতি আলাদাভাবে বিবর্তিত হয়েছে।

আমাদের সমাজে বিবর্তন কাকে বলে এমন প্রশ্ন করলেই তারা ধর্মীয় দৃষ্টি কোন থেকে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে। বিবর্তনের সংজ্ঞা বিজ্ঞান ভিত্তিতে করা উচিত। অনুসন্ধুসু মন নিয়ে। তর্কের খাতিরে তর্ক করলে কোনদিন সত্য উদ্ঘাটিত হয় না।


বর্তমান বানর গুলো বিবর্তন হয়ে কেন মানুষে পরিণত হচ্ছে না? এর উত্তর জানতে ইংরেজিতে এই আর্টিকেল টা পড়ুন।

Monkey to Human Evolution 4 Facts


বিবর্তনের হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলি:

  • জৈবিক বৈচিত্র্য: বিবর্তনের জন্য, জনগোষ্ঠীতে জৈবিক বৈচিত্র্য থাকা প্রয়োজন। যেমনঃ জিরাফের ঘাড়ের দৈর্ঘ্যে বৈচিত্র্য দেখা যায়। কিছু মানুষের চোখের রঙ নীল, আবার কিছু মানুষের চোখের রঙ বাদামী।
  • উত্তরাধিকার: জৈবিক বৈচিত্র্য পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রেরণ করা প্রয়োজন।
  • প্রাকৃতিক নির্বাচন: পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হওয়ার জন্য উপকারী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবগুলি বেঁচে থাকার এবং বংশবৃদ্ধি করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বানর এবং মানুষের বিবর্তনের পার্থক্য:

  • পরিবেশগত পার্থক্য: বানর এবং মানুষ আলাদা পরিবেশে বাস করে। মানুষ দ্বিপদ (দুই পায়ে হাঁটা) এবং বেশিরভাগ বানর চতুষ্পদ (চার পায়ে হাঁটা)।
  • আচরণগত পার্থক্য: মানুষের জটিল ভাষা, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তি রয়েছে। বানরের এই জিনিসগুলি নেই।
  • প্রাকৃতিক নির্বাচনের চাপ: মানুষ এবং বানরের উপর প্রাকৃতিক নির্বাচনের চাপ আলাদা।

বিবর্তনের জনক কে?

বিবর্তনের জনক হিসেবে চার্লস ডারউইন কে বিবেচনা করা হয়। তিনি ঊনিশ শতকের একজন ইংরেজ জীববিজ্ঞানী ছিলেন।

১৮৫৯ সালে তিনি “অন দ্য অরিজিন অফ স্পিসিস” বইটি প্রকাশ করেন। এই বইতে তিনি প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনের ধারণা প্রদান করেন।

ডারউইনের ধারণা অনুসারে, প্রতিটি প্রজাতির মধ্যে জৈবিক বৈচিত্র্য থাকে। এই বৈচিত্র্যের কিছু অংশ জিনগতভাবে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রেরণ করা হয়। পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হওয়ার জন্য উপকারী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবগুলি বেঁচে থাকার এবং বংশবৃদ্ধি করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এই প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে প্রজাতির পরিবর্তন ঘটায় এবং নতুন প্রজাতির উদ্ভব ঘটায়।

ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব জীববিজ্ঞানের একটি মৌলিক ধারণা। এটি জীবের উৎপত্তি, বৈচিত্র্য এবং অভিযোজন ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে।


জৈব বিবর্তন কাকে বলে?

জৈব বিবর্তন বলতে বোঝায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গঠন, বৈশিষ্ট্য এবং আচরণে পরিবর্তন। এই পরিবর্তনগুলি দীর্ঘ সময় ধরে জীবের জিনগত পরিবর্তনের ফলে ঘটে এবং পরিবেশের সাথে তাদের অভিযোজিত হতে সাহায্য করে।

রাসায়নিক বিবর্তন কাকে বলে

রাসায়নিক বিবর্তন বলতে বোঝায় পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশে জৈব যৌগের উৎপত্তি এবং জটিল জৈব অণুর বিকাশের প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে শুরু হয়েছিল এবং জীবনের উত্থানের পূর্বশর্ত তৈরি করেছিল।

রাসায়নিক বিবর্তনের ধাপগুলি:

১) অজৈব অণুর উৎপত্তি:

  • পৃথিবীর প্রাথমিক বায়ুমণ্ডল ছিল অ্যামোনিয়া, মিথেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্পের মিশ্রণ।
  • বিদ্যুৎ, বিকিরণ এবং উল্কাপাতের প্রভাবে এই অণুগুলি জটিল অজৈব অণুতে রূপান্তরিত হয়েছিল।

২) জৈব অণুর উৎপত্তি:

  • অজৈব অণুগুলি থেকে ক্রমবর্ধমান জটিলতার জৈব অণু তৈরি হয়েছিল।
  • এই প্রক্রিয়াটি অ্যামিনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইড এবং চিনি সহ ছোট জৈব অণুর গঠনের সাথে শুরু হয়েছিল।
  • এই ছোট অণুগুলি পরে পলিমার তৈরি করতে একত্রিত হয়েছিল, যেমন প্রোটিন এবং নিউক্লিক অ্যাসিড।

৩) কোষের উৎপত্তি:

  • জৈব অণুগুলি কোষের মতো কাঠামো তৈরি করতে শুরু করেছিল।
  • এই কাঠামোগুলি প্রাথমিক কোষ ছিল, যার নিজস্ব প্রজনন এবং বিবর্তনের ক্ষমতা ছিল।

৪) প্রাথমিক জীবনের উত্থান:

  • প্রাথমিক কোষগুলি জটিলতায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল এবং বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজিত হয়েছিল।
  • এই প্রক্রিয়াটি প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে চালিত হয়েছিল, এবং অবশেষে জীবনের বিভিন্ন রূপের উত্থানের দিকে পরিচালিত করেছিল।

Monkey to Human Evolution

এটি পৃথিবীর সব স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্যই একটি নতুন প্রশ্ন নয়। এই প্রশ্নের এখনও সমাধান হয়নি কিন্তু বিজ্ঞানীরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছে। শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, অন্যান্য মানুষ্যরাও এই উত্তর জানতে চায়। প্রশ্নটি হল ” সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কেন চিম্পাঞ্জিরা রূপান্তরিত হচ্ছে না?

মানুষের বিবর্তন কি চিম্পাঞ্জী বা বানর থেকে ঘটেছে? অথবা বানর থেকে মানুষের বিবর্তনের সত্যিকারের ঘটনাগুলি কি কি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে কারণ এই উত্তরটি পৃথিবীর কিছু জনগোষ্ঠীর জন্য সংবেদনশীল, বিশেষ করে যারা ডারউইন প্রস্তাবিত বিবর্তনের তত্ত্বে বিশ্বাস করতে চান না।

আমরা সবাই চারপাশে চিম্পাঞ্জি দেখতে পাই কিন্তু আমরা তাদের আর মানুষ হতে দেখি না। যদি চিম্পাঞ্জি বা বানর মানুষের পূর্বপুরুষ হয়, তাহলে তারা এখনও কেন চিম্পাঞ্জি বা বানর? কেন বানর থেকে মানুষের বিবর্তন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ঘটেনি?

কেন তারা আবার মানুষ হবে না?

কিছু লোক বিশ্বাস করে যে মানুষ চিম্পাঞ্জি বা বানর থেকে বিবর্তিত হয়নি। এই প্রশ্নের উত্তর পেতে তাদের অনেক প্রশ্ন আছে!

সাম্প্রতিককালে, বাংলাদেশে, এই বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল এবং একদল মানুষের মধ্যে বিতর্ক বাড়ছে।

এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে, আমাদের দুটি শব্দ জানতে হবে, অ্যানাজেনেসিস (Anagenesis) এবং ক্লেডোজেনেসিস (Cladogenesis)।

প্রশ্ন হল; মানুষ কি একটি প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে সরাসরি রেখায় বিবর্তিত হয়েছে? উত্তর হল না।

অ্যানাজেনেসিস (Anagenesis)

মানুষ বিবর্তনের একটি সরল রেখার চেয়ে ভিন্ন পথে বিবর্তিত হয়েছে। এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে বিবর্তনের এই সরল রেখাকে অ্যানাজেনেসিস বলা হয়।

ক্লেডোজেনেসিস কী?

ক্লেডোজেনেসিস হল এমন এক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বিবর্তনের ফলে অতীতে একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে দুই বা ততোধিক পৃথক বংশধারা (প্রজাতির ধরণ) সৃষ্টি হয়। এটি জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি বা জীবজগতে নতুন নতুন প্রজাতির সৃষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। মূলত, ক্লেডোজেনেসিসের ফলে দুটি নতুন “সিস্টার প্রজাতি” (closely related species) সৃষ্টি হয়।

চিম্পাঞ্জি এবং মানুষের ক্ষেত্রে, জীবাশ্ম এবং জিনগত প্রমাণগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, এই দুই প্রজাতি প্রায় ৬ মিলিয়ন বছর আগে একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে পৃথক হয়ে গেছে। তবে, এই সাধারণ পূর্বপুরুষ কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রজাতি ছিল না, বরং এটি ছিল পূর্বপুরুষদের একটি জনগোষ্ঠী। এই জনগোষ্ঠী দুটি পৃথক জনগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যায়, যারা পরবর্তীতে আজকের আধুনিক মানুষ এবং চিম্পাঞ্জি হিসেবে বিবর্তিত হয়।

বহু প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, মানুষের বংশধারায় মানুষ ও চিম্পাঞ্জির বংশধারা পৃথক হয়ে যাওয়ার পরেও এনাজেনেসিস (Anagenesis) এবং ক্লেডোজেনেসিস (Cladogenesis) ঘটেছে।

মানুষ ক্লেডোজেনেসিস পদ্ধতিতে বিবর্তিত হয়েছে, যার অর্থ একটি প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে বিবর্তনের ধারাবাহিক রেখা নয়, বরং এটি একটি শাখাযুক্ত বিবর্তন ছিল।

প্রশ্ন: মানুষ কি চিম্পাঞ্জি থেকে বিবর্তিত হয়েছে?

উত্তর: না। ঠিক যেমন আপনি এবং আপনার চাচাতো ভাই-বোনেরা কয়েক শত বছর আগে মারা যাওয়া একজন সাধারণ পূর্বপুরুষকে নিজের গোষ্ঠী দাবি করতে পারে , ঠিক তেমনি সব জীবিত মানুষেরাও লাখো লাখ বছর আগে বসবাসকারী সব জীবিত চিম্পাঞ্জির সাথে একজন সাধারণ পূর্বপুরুষকে নিজের গোষ্ঠী দাবি করতে পারে।  কিন্তু, সেই সাধারণ পূর্বপুরুষ আর বর্তমান নেই।

এটি আরও ভালোভাবে বুঝতে, একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। আপনি এবং আপনার চাচাতো ভাই/বোন যদি আপনাদের দাদার-দাদার-দাদার একজন সাধারণ পূর্বপুরুষকে গোষ্ঠী দাবি করেন, এর অর্থ এই নয় যে, আপনি আপনার পরবর্তী প্রজন্মের চাচাত  ভাই/বোন থেকে বিবর্তিত হয়েছেন। বরং, আপনি এবং আপনার চাচাতো ভাই/বোন উভয়েই আপনাদের সেই দাদার-দাদার-দাদার সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে  নিজস্ব পথে বিবর্তিত হয়েছেন। ঠিক একইভাবে, মানুষ এবং চিম্পাঞ্জিদের ও  একজন সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল,  যে পূর্ব পুরুষ কিনা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ, মানুষ এবং চিম্পাঞ্জি একে অপরের চাচাতো ভাই/বোন হিসাবে ধরে নিতে পারেন!


ডাইনোসর সম্বন্ধে জানতে পড়ুন

ডাইনোসর