“বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাইনা আর” কবি জীবনানন্দ দাশ যথার্থই বলেছেন- বাংলাদেশের মত এত সুন্দর দেশ পৃথিবীতে আর নেই। এদেশের রুপবৈচিত্র মুগ্ধ করেছে কবি সাহিত্যিক এবং বিভিন্ন পরিব্রাজকদের।বাংলাদেশের সাধারণত ছয়টি ঋতু লক্ষ করা যায়। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও পরিবর্তন ঘটে ।যেমনঃ গ্রীষ্মকালে খরা এবং কালবৈশাখী, ঝড় বর্ষাকালে অতি বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যা ,শীতকালে প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ উল্লেখযোগ্য । এক কথায় বলতে গেলে ,ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও পরিবর্তন হয়। আজ আমরা বাংলাদেশের পাঁচটি লঘু ঘূর্ণিঝড় Cyclone সম্পর্কে জানব।
ঘূর্ণিঝড় Cyclone কোমেন
(২০১৫ সাল ৩০ জুলাই )
তালিকার প্রথমেই আছে, ২০১৫ সালের ৩০ শে জুলাই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় কোমেন । বাংলাদেশের ইতিহাসে আঘাত হানা ছোট ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় কোমেন অন্যতম। এই ঝড়ে বাতাসের বেগ ঘন্টায় ৬৫ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বাংলাদেশ ,ভারত ও মিয়ানমারের প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং সাময়িক সময়ের জন্য বাংলাদেশে বন্যার দেখা দেয,। এই দুর্যোগে কোন প্রাণহানীর মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেনি তবে মৎস্যচাষীদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল এবং ফসলের জমি প্লাবিত হয়েছিল।
ঘূর্ণিঝড় Cyclone রোয়ানু
(২১ শে মে ২০১৬)
এটি একটি ছোট ধরণের ঘূর্ণিঝড় ছিল ।যা ২১ শে মে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে আঘাত হেনেছিল । ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সাময়িক সময়ের জন্য বন্যা দেখা দিয়েছিল । এই ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু ভারতের আংশিক অঞ্চলে আঘাত হেনেছিল ।এর আকৃতি দুইটি বাংলাদেশের সমান হলেও বেশি ক্ষয়ক্ষতি এবং তাণ্ডব চালাতে পারেনি।সরকারি হিসাব মতে ,রোয়ানুর আঘাতে চট্টগ্রামে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর দাবি এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোরা
( ২০১৭ সাল ৩০ মে )
বাংলাদেশে সম্প্রতিক কালে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম মোরা। ঘূর্ণিঝড় মোরার উৎপত্তিস্থল ছিল, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকা। এটি বাংলাদেশে আঘাত হানে ২০১৭ সালের ৩০ মে । অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মোরার বাতাসের বেগ বেশি ছিল। এটি সর্বোচ্চ গতি১৪৬ কিলোমিটার গতিতে কক্সবাজার উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে এবং মোরার তাণ্ডবে হাজার হাজার কাঁচা ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। পুরো কক্সবাজারে বেশ কিছুদিন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এতে লবণ চাষিরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি হিসাবে পাওয়া যা, এই ঘূর্ণিঝড়ের মোট তিনজন মারা যায় । তার মধ্যে দুইজন নারী এবং একজন পুরুষ ছিল ।
ঘূর্ণিঝড় ফণী
( ২০১৯ সাল ৩ মে )
নয় জনের প্রাণ কেড়ে নেয়া ঘূর্ণিঝড় ফণী ২০১৯ সালের ৩রা মে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে তাণ্ডব চালায় ।এই তান্ডব এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, ঘরবাড়ি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।রাস্তা-ঘাট, সড়ক এবং কৃষি খাতের মোট ৫৩৬ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি করে । তবে ঘূর্ণিঝড় ফণীতে কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি ।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল
( ৯ নভেম্বর ২০১৯ )
সর্বশেষ বাংলাদেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়টির নাম বুলবুল । এটি বাংলাদেশে আঘাত হানে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর ।এই ঘূর্ণিঝড়ের একটি বিশেষ দিক ছিল সেটি হলো, বারবার দিক পরিবর্তন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় আঘাত হানার পর দিক পরিবর্তন করে স্থলভাগ দিয়ে বাংলাদেশ আঘাত হানে। সরকারি পরিসংখ্যান বলতেছে, এই ঝড়ে মারা যান ২৪ জন এবং ৭২ হাজার ২১২ টন ফসলের ক্ষতি হয়। যার আর্থিক মূল্য ২৬৩কোটি ৫ লাখ টাকা । বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সুন্দরবনের বেশী ক্ষতি করে ।
More Stories
স্মার্টফোন ও কম্পিউটার আসক্তি আপনার ক্ষতি করছে না তো?
How to convert mg/l to meq/l simply
My Own Life Story: The Real Kindness of Japanese People