করোনা ভাইরাস

করোনা ভাইরাসের বিস্তার ইতিহাস কি বলে?

Spread the love

করোনা ভাইরাসের বিস্তার মানব জাতির ধ্বংসের আলামত নয় তো? ইতিহাস কি বলে

এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের যে ভয়াবহতা তা দেখে মনে হয় এটা কে নির্মূল করতে পৃথিবীকে অনেক মূল্য দিতে হবে। আর তা হবে মানুষের তাজা প্রাণ। ওয়াশিংটন ভিত্তিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে শুধু ভারতেই ৩০ কোটি মানুষ মারা যেতে পারে। ইতিমধ্যের সমস্থ পৃথিবীর ১৬৯ টি দেশে এ মরণ ভাইরাস বিস্তার লাভ করেছে। মানুষ আজ অসহায়।

বর্তমান পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা ও টেকনোলজির উন্নতি যে মানব জাতির জন্য বিপদ ডেকে আনবে না এর কোন নিশ্চয়তা নাই। কারণ বিখ্যাত নেচার সাইন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখান হয়েছে যে, ৬ষ্ঠ গন বিলুপ্তি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং অতি উচ্চ হারে প্রাণীর বিপর্যয় হচ্ছে।

আর বর্তমান করোনা ভাইরাসের যে মৃত্যু হার তাতে ৬ষ্ঠ গন বিলুপ্তির প্রাণীর বিপর্যয় হওয়ার হার আরও বৃদ্ধি পাবে।

 

প্রাগৈতিহাসিক ঘটনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়। ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিশাল আকৃতির ডাইনোসর গুলো পৃথিবীতে ১৬ কোটি বছর রাজত্ব করেছিল।

আর এই দীর্ঘ সময় রাজত্বের পর মহা শুনন থেকে এক বিশাল উল্কা পিণ্ড বর্তমান মেক্সিকোর চিকচুলাভ নামক এক জায়গায় আছড়ে পড়ে আর এর প্রভাবে তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতি সহ দীর্ঘ সময় ধরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যায় যাকে বলে বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ধীরে ধীরে ডাইনোসরদের বিলুপ্তি ঘটে। 

অনেকে ধারনা করনে যে, ডাইনোসরদের বিলুপ্তি সহ ওই সময়ে গন বিলুপ্তির ঘটনায় ৭০% প্রাণীর ধ্বংস হয়। এই সময়ের গন বিলুপ্তিকে বলে ট্রিয়াসসিক-জুরাসিক (KT Mass Extinction) গন বিলুপ্তি।

ট্রিয়াসসিক-জুরাসিক (KT Mass Extinction) সময়ে ডাইনোসর বিলুপ্তির আরও আগে ৪ বার মহা বিপর্যয় ঘটেছে যেখানে পারমিয়ান- ট্রিয়াসসিক (Permian-Triassic Mass Extinction, 252.0 Ma) সময়ে ৯০% পর্যন্ত প্রাণী মারা গিয়েছিল।

করোনা ভাইরাস

পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এই মহা বিপর্যয় ঘটেছে বলে অনেক ভূতাত্ত্বিক গবেষক প্রমাণ দেখিয়েছেন। সুতরাং অতীতের যত মহা দুর্যোগ তার বেশির ভাগ ই বৈশ্বিক উষ্ণাতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

আধুনিক যুগেও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, টেকনোলজির উন্নতি, ৬ষ্ঠ গন বিলুপ্তির (6th Mass Extinction) জন্য অন্যতম প্রভাবক। আর এই প্রক্রিয়া এখন চলমান। এর অনেক প্রমাণ বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, আমরা আমাদের চারিপাশে তাকালেও আমরা তার প্রমাণ পাই।

যেমন কিছু প্রজাতির পাখি আমরা আর এখন দেখি না আমাদের চারিপাশে এমনি অনেক নাম না জানা প্রাণী ইতিমধ্যেই বিলুপ্তু ঘটেছে। টেকনোলজির উন্নতির সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে আর এর ফলে করোনা ভাইরাস সমস্ত পৃথিবীতে মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়েছে।

কিন্তু এই করোনা ভাইরাস গত শতাব্দীতে এতোটা ভয়াবহ ভাবে দ্রুত ছড়ায়নি।

বিশ্বায়ন নিঃসন্দেহে মানুষের জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছে। পৃথিবী এখন সবার হাতের মুঠোয় তবে এটা ঠিক যে এই বিশ্বায়নের জন্যই প্রাণী কুলের বিপর্যয় ও সহজতর হতে পারে।

আধুনিক অস্ত্র যেমন পারমানবিক অস্ত্র মুহূর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে। পারমানবিক অস্ত্রের আঘাত চোখে দৃশ্যমান হলে ও পরিবেশ ও জল বায়ু সম্পর্কিত দুর্যোগ দৃশ্যমান নয়, দীর্ঘ মেয়াদে বোঝা যায়।

৬ষ্ঠ গন বিলুপ্তির চলমান প্রক্রিয়ার যোগ হতে পারে আর একটি প্রজাতি আর সেটা হল মানব জাতি। এজন্য এই মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ থেকে মানুষ কেই সচেতন হতে হবে।

Author: Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *