বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয় গুরু উত্তর সাধক মাত্র
শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারেনা। শিক্ষকের নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে ছাত্রকে তা অর্জন করতে হয়। সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত। আজকের বাজারে দাতার অভাব নেই। এমনকি এক্ষেত্রে দাতাকর্ণের অভাব নেই। আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের তাদের দ্বারস্থ করেই নিশ্চিন্তে থাকি। এই বিশ্বাসে যে সেখান থেকে তারা এতটা বিদ্যার ধনলাভ করে ফিরে আসবে যার ফলে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারবে। শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করা ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করা।
শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে পারেন তার কৌতুহল উদ্যোগ করতে পারেন তার বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করতে পারেন। কিন্তু চেষ্টা করে যেতে হবে শিক্ষার্থীকে সেই জ্ঞান অর্জন করতে পারা। শিক্ষক মন রাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারেন তার জ্ঞানপিপাসাকে আরও জ্বলন্ত করতে পারেন এর বেশি আর কিছুই হতে পারে না। যিনি যথার্থ গুরু তিনি আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তোলেন।
সেই শক্তির বলে নিজে মন ও চেষ্টা দিয়ে নিজেকে গড়ে তোলেন। নিজের অভিমত নিজে অর্জন করে বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়। গুরু পথপ্রদর্শক মাত্র। প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের জন্য একজন শিক্ষকই যথার্থ নয়। শিক্ষার্থীকে নিজ চেষ্টা দ্বারা সে সাধনা অর্জন করতে হয়।
বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করে নিতে হয়
বিদ্যার সাধনা: শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তর সাধক মাত্র বিশদ ব্যাখ্যা
এই প্রবাদটি বিদ্যার্জনের প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে। এর অর্থ হল, বিদ্যার্জন একটি ব্যক্তিগত যাত্রা, যেখানে গুরু শুধুমাত্র একজন পথপ্রদর্শক বা নির্দেশকের ভূমিকা পালন করেন। শেষ পর্যন্ত জ্ঞান অর্জনের দায়িত্ব শিষ্যের নিজের উপরই থাকে।
উদাহরণ:
একজন শিক্ষার্থী এবং একজন শিক্ষক: একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বিষয় শেখান, বই পড়ার জন্য বলেন, এবং প্রশ্নের উত্তর দেন। কিন্তু পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য শিক্ষার্থীকে নিজেকে পড়াশোনা করতে হয়, বইয়ের মধ্যে গভীরে ঢুকে যেতে হয় এবং নিজের মতো করে বিষয়গুলোকে বুঝতে হয়। শিক্ষক শুধুমাত্র একজন সহায়ক।
একজন সঙ্গীত শিক্ষক এবং একজন সঙ্গীত শিক্ষার্থী: একজন সঙ্গীত শিক্ষক তার শিক্ষার্থীকে সুর, তাল, এবং বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখাতে পারেন। কিন্তু একজন ভালো সঙ্গীতজ্ঞ হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে নিজেকে অনুশীলন করতে হয়, নতুন গান শিখতে হয় এবং নিজের স্বতন্ত্র শৈলী তৈরি করতে হয়।
একজন কারিগর এবং একজন শিষ্য: একজন কারিগর তার শিষ্যকে একটি কাজ করার পদ্ধতি শেখাতে পারেন। কিন্তু শিষ্যকে নিজেকে সেই কাজটি বারবার করে অনুশীলন করতে হয়, ভুল থেকে শিখতে হয় এবং নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হয়।
অর্থাৎ, গুরু শুধুমাত্র একটি দীপশিখা, যা শিষ্যকে তার নিজের পথ আলোকিত করার জন্য সাহায্য করে। শিষ্যকে সেই দীপশিখার আলোতে নিজেকে আলোকিত করতে হয়।
প্রবাদের গুরুত্ব:
স্বশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা: এই প্রবাদটি শিক্ষার্থীদের নিজেদের উপর নির্ভর করার এবং স্বশিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করে।
গুরুর ভূমিকা: গুরুর ভূমিকা শুধুমাত্র একজন নির্দেশকের। শেষ পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন শিষ্যের নিজের উপর নির্ভর করে।
জ্ঞানের অবিরাম প্রক্রিয়া: জ্ঞান অর্জন একটি অবিরাম প্রক্রিয়া। গুরু শুধুমাত্র শুরুতে সাহায্য করে, পরে শিষ্যকে নিজেকেই এগিয়ে যেতে হয়।
সারসংক্ষেপ:
বিদ্যার্জন একটি ব্যক্তিগত যাত্রা, যেখানে গুরু শুধুমাত্র একজন পথপ্রদর্শক। শেষ পর্যন্ত জ্ঞান অর্জনের দায়িত্ব শিষ্যের নিজের উপরই থাকে। এই প্রবাদটি শিক্ষার্থীদের স্বশিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করে এবং গুরুর ভূমিকাকে স্পষ্ট করে।
আরও ভাবসম্প্রসারন
জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে সে জাতির নাম মানবজাতি এক পৃথিবীর স্তনে লালিত একই রবি শশী মোদের সাথী
সুসময়ে অনেকেই বন্ধু হয় বটে অসময়ে হায় কেউ কারো নয়
মিত্রতা রক্ষা করাই কঠিন
পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় পথের দুধারে আছে মোর দেবালয়
প্রকৃতির উপর আধিপত্য নয় মানুষ গড়ে তুলতে চাইছে প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ
গতিই জীবন স্থিতিতে মরণ
সবুরে মেওয়া ফলে
অনেক কিছু ভাবার চেয়ে অল্প কিছু করাই শ্রেয়
যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাঁধিবে যে নীচে পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে
প্রীতি হীন হৃদয় আর প্রত্যয়হীন কর্ম সমার্থক
কর্তব্যের কাছে ভাই বন্ধু কেহই নাইরাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটে আসে
কাক ও কোকিল একই বর্ণ কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন
স্বার্থপরতা মানব জীবনের উন্নতির পথে অন্যতম প্রতিবন্ধক
উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে তিনিই মধ্যম যিনি চলেন তফাতে
মুকুট পরা শক্ত কিন্তু মুকুট পরিত্যাগ করা আরো কঠিন
ফুলের বাগান সবার মনেই আছে ফুল ফোটাতে সবাই নাহি পারে
পরের অনিষ্ট চিন্তা করে যেই জন নিজের অনিষ্ট বীজ করে সে বপন
বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয় গুরু উত্তর সাধক মাত্র
যত বড় হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা আমি ভালোবাসি মোর ধরনীর প্রজাপতির পাখা
রাতে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা সূর্য নাহি ফিরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
কত বড় আমি কহে নকল হীরাটি তাই তো সন্দেহ করি নও ঠিক খাঁটিশিক্ষাই জাতির উন্নতির পূর্বশর্ত
আলো বলে অন্ধকার তুই বড় কালো অন্ধকার বলে ভাই তাই তুমি আলো
যে জন দিবসে মনের হরষে জালায় মোমের বাতি আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি
যে সহে সে রহে
লোভে পাপ পাপে মৃত্যু
ইচ্ছা থাকিলে উপায় হয়
ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে