প্রকৃতির উপর আধিপত্য নয় মানুষ গড়ে তুলতে চাইছে প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ প্রকৃতি ও প্রাণী জগতের মধ্যে রয়েছে অজস্র সম্পর্কের বন্ধন তাই মানুষ প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না আদিম যুগে মানুষ অরণ্যে বসবাস করত এবং অরণ্যকে অবলম্বন করে জীবিকা নির্বাহ করত অরণ্য থেকে প্রাপ্ত ফলমূল ও অরণ্যে লালিত পশু শিকার করে সেই পশুর মাংস খেয়ে তারা বেঁচে থাকত অরণ্যের শুকনো গাছের ডালে ডালে ঘর্ষণ লেগে যখন আগুন জ্বলে উঠত তখন মানুষ প্রথম আগুন জ্বালানোর কৌশল শিখল এবং মাংস কাঁচানা খেয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে খাওয়া শিখল ক্রমান্বয়ে মানুষ সভ্য হলো সমাজ করল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো ঘরবাড়ি তৈরি করতে শিখল সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে বাস করার ফলে রামনগর তৈরি হলো এল নাগরিক সভ্যতা প্রকৃতির সাথে মানুষের শুরু হলো বিচ্ছেদ ইট কাঠ কংক্রিট এর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা নাগরিক সভ্যতা প্রকৃতির কোন উপাদান আর রইল না জ্ঞান বিজ্ঞানের কল্যাণে সময়ের বিবর্তনে মানুষ পৃথিবী ছাড়িয়া আজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে মহাশূন্যে প্রকৃতিকে করেছে পদানত। পৃথিবী কে এনেছে হাতের মুঠোয় কিন্তু অতীতের শান্ত অরণ্য পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে মানুষ সুখের জন্য যে নগর সভ্যতা গড়েছিল তাতে আজ আর সুখ নেই নানা সংকটে মানুষ আজ দিশেহারা মানুষ এখন বুঝতে পারছে প্রকৃতির উপর আধিপত্য বিস্তার করলে প্রকৃতি আমাদের উপর চরম প্রতিশোধ নেবে। মনুষ্য সৃষ্ট বিভিন্ন কারণে যে কোন সময় প্রকৃতিতে ঘটে যেতে পারে চরম বিপর্যয়। আর তাতে বিরাট ক্ষতি হবে মানুষের। তাই প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র প্রকৃতির পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে উঠেছে। যেমন পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বনায়ন ইত্যাদি কার্যক্রম শুরু করে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ বা সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে আমাদের মঙ্গলার্থে প্রকৃতি বরাবরই অনাবিল আনন্দ নিয়ে আমাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকে এখন অপেক্ষা শুধু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়া আর তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হবে তত দ্রুতই আমরা প্রকৃতির রুদ্ররোষ থেকে বাঁচতে পারবো