Colorgeo

Classroom for Geology and Disaster

ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয় 4টি কাজ

Spread the love

ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয়

ভূমিকম্প হচ্ছে ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চার ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটে ভূপৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয় এইরূপ ক্ষনস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প (Earthquake) বলে ।

আজকের প্রবন্ধটিতে আমরা ভূমিকম্প প্রতিরোধের কিছু করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব । ভূমিকম্প সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সভ্যতার এবং বিজ্ঞানের চরম উন্নতি হওয়া সত্বেও ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পাওয়ার মতো এমন কোন প্রযুক্তি বা যন্ত্র এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। তাই একমাত্র ভূমিকম্প প্রতিরোধের করনীয় সমূহ আমাদের এই ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।চলুন তাহলে ভূমিকম্প
প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয় ১। জনসচেতনা বৃদ্ধি ঃ

যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার পূর্বশর্ত হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি। জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের তুলনায় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে জনসচেতনতাবোধ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।ভূমিকম্প কি ? ভূমিকম্প কেন হয় ?ভূমিকম্পের প্রভাব কি ?ভূমিকম্প প্রতিরোধের করনীয় কি কি ?পরিকল্পিত নিয়মে বসতবাড়ি নির্মাণ না করলে ভূমিকম্পে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে ?ভূমিকম্প চলাকালীন অবস্থায় করণীয় কি কি? ভূমিকম্পের আগে ও পরে করনীয় কি কি? ভূমিকম্পের সময় কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে? এসব বিষয়ে জনসচেতনতা প্রয়োজন ।

ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয় ২। ভূমিকম্পের পূর্বপ্রস্তুতি সমূহ হচ্ছেঃ

ক.বিদ্যুৎ এবং গ্যাস লাইন ব্যবহার শেষে বন্ধ রাখার অভ্যাস করা ।

খ.ঘরের উপরের অংশসমূহে ভারি আসবাবপত্র বা জিনিসপত্র না রাখা। পরিবারের প্রত্যেকের জন্য একটি করে হেলমেট রাখা । যাতে ভূমিকম্প চলাকালীন নিজেকে আত্মরক্ষা করা যেতে পারে ।

গ.সরকারি বিধি নিষেধ অনুযায়ী পরিকল্পিত নিয়মে বসতবাড়ি নির্মাণ এবং বিল্ডিং কোড মেনে চলা। মাটির স্তরের উপর ভিত্তি করে বসতবাড়ির ভিত দেওয়া । তাছাড়া গ্যাস এবং বিদ্যুতের লাইন নিরাপদ স্থানে স্থাপন করতে হবে। গর্ত ও নরম মাটিতে ভবন নির্মাণ না করা।

ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয় ৩।ভূমিকম্প চলাকালীন করণীয় সমূহ ঃ

ক.ভূমিকম্প চলাকালীন সর্বপ্রথম কাজ হলো নিজেকে শান্ত রাখা ।

খ. বহুতল ভবনের নিচে থাকলে সেখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব স্থান ত্যাগ করা । তাছাড়া ভারি টেবিল বা খাটের নিচে আশ্রয় নেয়া যেতে পারে । বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে ,কাচের জিনিস থেকে দূরে থাকতে হবে এবং লিফট ব্যবহার করা যাবে না ।

গ. উঁচু বিল্ডিংয়ের জানালা বা ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার মতো ভুল করা যাবেনা । তাছাড়া ভূমিধসের সম্ভাবনা আছে এমন এলাকা থেকে দূরে থাকতে হবে। নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে।

ঘ. সর্বোপরি ভূমিকম্পের সময় সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং গ্যাস সংযোগ ও বিচ্ছিন্ন করতে হবে ।

ভূমিকম্প প্রতিরোধে করণীয় ৪। ভূমিকম্প পরবর্তী করণীয় সমূহ ঃ

ক. ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে তাড়াহুড়া করে বের না হয়ে সাবধানে বের হতে হবে ।

খ.সরকারি রেডিও এবং টেলিভিশনে ভূমিকম্পের পরবর্তী খবর এবং নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

গ. ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারকাজে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের সহায়তা করা।

ঘ.সর্বশেষ নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

বর্তমান শতাব্দীতে ভূমিকম্প একটি আতংকের নাম। সকলের উচিত ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং ভূমিকম্প সম্পর্কে সকলের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা ।

 


ট্রিয়াঙ্গাল অফ লাইফ Triangle of life কাকে বলে ভূমিকম্পের সময় কি এটা মেনে চলা উচিত?


কি কি কারণে ভূমিকম্প সংগঠিত হয়


Earthquake Proof Bed ভূমিকম্প নিরোধক বিছানা